Thursday, September 20, 2012

পাখির গ্রাম

পাখির গ্রাম

 

ছোট শেখহাটি এখন পাখির গ্রাম

- মনিরুল ইসলাম, যশোর | তারিখ: ২০-০৯-২০১২


‘সব পাখি ঘরে ফিরে’—পাখিরও ঘর আছে। সন্ধ্যার গোধূলিলগ্নে কিচিরমিচির ধ্বনি তুলে পাখির দল নিজের ঘরে ফিরতে থাকে। ছোট শেখহাটি গ্রামের মানুষ পরম যত্নে পাখির সুরক্ষা নিশ্চিত করেছে। যশোর শহর থেকে মাইল তিনেক উত্তর-পূর্বে গাছগাছালির ছায়াঘেরা গ্রাম ছোট শেখহাটি। গ্রামের উঁচু গাছের মগডালের ফাঁকে ফাঁকে পাখির ঘর। কাঠ-খড়ের উপকরণে তৈরি এ রকম হাজার খানেক ঘরে কয়েক হাজার পাখি বসতি গেড়েছে। এ কারণে গ্রামটি এখন ‘পাখির গ্রাম’ নামে পরিচিতি পেতে শুরু করেছে। 
পরিবেশ অধিদপ্তর যশোর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পানকৌড়ি, নিশি বক আর সাদা বক মিলে তিন ধরনের হাজার পাঁচেক পাখি রয়েছে শেখহাটি গ্রামে। এর মধ্যে পানকৌড়ির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। নিশি বকের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তারা দিনে বাসায় থাকে আর রাতে বিচরণ করে। এ জন্য সারাক্ষণই পাখির কলকাকলিতে মুখর থাকে গ্রামটি।’ গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম আসাদ, আবদুল ওয়াদুদ, আবদুর রশিদ ও আবু বকর সিদ্দিকের বাড়ির সবচেয়ে উঁচু গাছে পাখির আস্তানা। সম্প্রতি এক বিকেলে ওই গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, লাল সূর্য পশ্চিমের আকাশে ডুবে যাচ্ছে। সন্ধ্যা নামতে আর বেশি দেরি নেই। কিচিরমিচির ধ্বনি তুলে দল বেঁধে পাখি ঘরে ফিরছে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে কলকাকলি তীব্র হতে থাকল। উঁচু গাছের মগডালের ফাঁক দিয়ে গলা বাড়িয়ে দিয়েছে লম্বা ঠোঁটের অসংখ্য পানকৌড়ি। পাখির নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন এই গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম আসাদসহ কয়েক ব্যক্তি। 
আসাদ এই প্রতিবেদককে বলেন, বছর পাঁচেক আগে এক জ্যৈষ্ঠ মাসে দুটি পানকৌড়ি সকালবেলায় এসে বসেছিল গাছের ডালে। পরদিন আরও কয়েকটি পাখি এল। এরপর কয়েক শ এসে গাছের ডালে বাসা বাঁধতে শুরু করে। শুরু হলো পাখির প্রজনন। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ থেকে ভাদ্র-আশ্বিন মাস হচ্ছে পাখি প্রজননের সময়। মা পাখি সারা দিন বাসায় থাকে। আর পুরুষ পাখি খাদ্য অন্বেষণে দূরদূরান্তে চলে যায়। গাছতলায় নোনা পানির বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এ থেকে ধারণা করা যায়, পাখিগুলো বহু দূরদূরান্তে চলে যায় খাবারের খোঁজে।
আসাদ বলেন, ‘পরম যত্নে আমরা পাখি আগলে রেখেছি। আমরা মনে করি, বাড়িতে পাখির আগমন আমাদের জন্য একটি সৌভাগ্যের বিষয়। পাখি সব জায়গা থাকে না। ওরা যেখানে নিরাপদ মনে করে, সেখানেই অবস্থান নেয়। যার জন্য এর পেছনে সৃষ্টিকর্তার ইশারা রয়েছে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’ গ্রামের আরেক পাখিপ্রেমী আবদুল ওয়াদুদ বলেন, ‘এ বছর কিছু দুষ্ট লোক আমাদের অগোচরে এলাকার কিশোরদের টাকার লোভ দেখিয়ে তাদের গাছে তুলে দিয়ে কিছু পাখি শিকার করে নিয়েছে। এ কারণে পাখি এখন অনেকটা আতঙ্কগ্রস্ত। গাছতলায় মানুষ দেখলেই পাখি উড়ে যাচ্ছে। ভয়ে অনেক পাখি অন্য এলাকায় চলেও গেছে। পাখির বাসাগুলো উঁচু গাছে হওয়ায় শিকারিরা গাছ বেয়ে মগডালে উঠতে পারে না। পাশের সুপারিগাছ বেয়ে শিশু-কিশোরদের তুলে দেয়। বিষয়টি বুঝতে পেরে পাখির বাসাসংলগ্ন সব সুপারিগাছ কেটে ফেলা হয়েছে। তা ছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজন ঘুরে যাওয়ার পর পাখি শিকারিরা একটু নিবৃত হয়েছে। এখন আর শিকারিদের তেমন দেখা যায় না।’ পরিবেশ অধিদপ্তর যশোর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলাম বলেন, পাখি শিকার দণ্ডনীয় অপরাধ। ‘পাখি ধরা নিষিদ্ধ’ লেখা চারটি সাইনবোর্ড ওই এলাকায় লাগানো হবে। এরপর কেউ পাখি ধরলে জেল-জরিমানার ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া লোকজনকে সচেতন করার জন্য স্থানীয় মসজিদের ইমামদের মাধ্যমে প্রচার চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে তিনি যানান।

 

Source: http://www.prothom-alo.com

 

অতিথি পাখির গ্রাম 

 

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ভাল্লুকগাছি চকপাড়া গ্রামটি এখন অতিথি পাখির গ্রাম হিসেবে মানুষের কাছে পরিচিতি পেয়েছে। ওই গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক আব্দুল হামিদের আমবাগানে বাসা করেছে হাজার হাজার অতিথি পাখি। অতিথি পাখিরা গ্রামটিকে নিজের করে বাসায় দিয়েছে ডিম। ডিম ফুটে বের হয়েছে ছোট ছোট বাচ্চা। গ্রামবাসী পাখি প্রেমে দেখাচ্ছেন উজ্জল দৃষ্টান্ত।

অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক আব্দুল হামিদ তার সাড়ে তিন বিঘা জমির আম বাগান থেকে মৌসুমে দেড় লাখ টাকার আম বিক্রি করতেন। কিন্তু দুই বছর থেকে তিনি এক টাকার আমও বিক্রি করতে পারেননি। কারণ তার বাগানে বসত গেড়েছে হাজার হাজার অতিথি পাখি। পাখিরা বাগানে বাসা করে দিয়েছে ডিম। ফুটেছে ছোট ছোট বাচ্চা। পাখিদের শত অত্যাচার সহ্য করেও তিনি অবিচল রয়েছেন তাদের নিরাপত্তা প্রদানে।

শিক্ষক আব্দুল হামিদের পাখি প্রেমে আকৃষ্ট হয়ে এখন পুরো গ্রাম একাট্টা হয়েছে পাখি রক্ষায়। পাখিরাও আপন বাড়ি ভেবে সেখানে করেছে বাসা। দিয়েছে ডিম। ডিম থেকে প্রতিদিনই ফুটছে বাচ্চা। পাখির কলতানে এখন মুখর পুঠিয়া উপজেলার ভাল্লুকগাছি চকপাড়া। শিকারিদের হাত থেকে গ্রামের নারী-পুরুষ সবাই মিলে রক্ষা করছেন পাখিগুলোকে।

প্রতিদিনই দুর-দুরান্ত থেকে মানুষ আসছেন পাখি দেখতে। এতে গ্রামের পরিচিতি যেমন বাড়ছে, তেমনি সুনামও ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। সৃষ্টি হয়েছে সুন্দর একটি পরিবেশ। সব ধরণের বিনোদন সুবিধা বঞ্চিত গ্রামবাসীর প্রধান বিনোদনে পরিণত হয়েছে এই অতিথি পাখি।

গ্রামবাসী এই অতিথি পাখিদের নাম জানেন না। তবে উপজেলা পশু সম্পদ অফিসের কর্মকর্তারা পরিদর্শন শেষে গ্রামবাসীকে জানিয়েছেন এগুলো সাইব্রেরিয়ান হাঁস।

আব্দুল হামিদ ক্ষতি শিকার করে নিজের বাগানে অতিথি পাখির আশ্রয় দিয়ে পাখি প্রেমের উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেও সরকারিভাবে কোন ক্ষতিপূরণ তার কপালে জুটেনি।

সরকারিভাবে তার বাগানকে পাখির অভয়াশ্রম ঘোষণা দিয়ে একটি সাইনবোর্ড ঝুলানো ছাড়া আর কোন পদক্ষেপই নেওয়া হয়নি। তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলছেন তাকে সরকারিভাকে কিছু সহায়তা প্রদানের চেষ্টা করা হচ্ছে।

শুধু আশ্বাস নয়, সরকারিভাবে কিছু আর্থিক সহায়তাই হতে পারে শিক্ষক আব্দুল হামিদ এবং এই পাখিগুলোর নিরাপদে বেঁচে থাকার অবলম্বন।  

Source: http://dhakareport24.com



পাখির গ্রাম ভাটিনাযতই ভেতরে ঢুকছি ততই পাখির কিচিরমিচির শব্দ চারপাশ থেকে আমাদের ঘিরে ধরছে। আমরা থমকে দাঁড়াই। বাঁশঝাড়ের ডালে ডালে শত শত পাখি। চড়ুই, শালিক, টিয়া, বক, মাছরাঙা, ঘুঘুসহ নানা রকমের পাখি। সবাই বুঝি আনন্দে চেঁচাচ্ছে

- সালেক খোকন বন্ধু শামীমের বাসায় বেড়াতে এসেছি দিনাজপুরে। বিখ্যাত কান্তজী মন্দির, রামসাগর আর নয়নাভিরাম শালবন দেখে ভালোই কাটছে দিনগুলো। কাটারীভোগ চালের ভাতের সঙ্গে রুস্তম হোটেলের গরু ভুনা, মুন্সির হোটেলের খাসি আর ভাবির হাতের টাঁকিভর্তার স্বাদ নিয়েছি বারকয়েক।
শহরের একটু বাইরে বটতলীতে মালেকের বিখ্যাত চায়ের দোকান। মালাই দিয়ে চা খেতে খেতে ভাটিনা গ্রামের কথা শুনি। সেখানে নাকি নানা জাতের অনেক পাখি। ভাটিনা না দেখে চলে যেতে মন চাইল না। তাই দুপুরের পর শামীমের মোটরসাইকেলে রওনা হই আমরা। শহর থেকে দূরত্ব প্রায় ৮ কিলোমিটার। চিরিরবন্দরের রাস্তা ধরে কিছুদূর গিয়ে একটি বেইলি ব্রিজ পেলাম। ব্রিজে উঠে শামীম জানাল এটি গর্ভেশ্বরী নদী। এখন শুকিয়ে গেলেও একসময় নাকি এর গর্ভ স্পর্শ করা অসম্ভব ছিল। ব্রিজ পেরিয়ে মাস্তান বাজার। দেশের সবচেয়ে বড় টমেটোর বাজার এটি। বাজারের বাঁ দিক দিয়ে ইট বিছানো পথ গেছে ভাটিনায়। দুপাশে লিচু আর আমের বাগান। ঝাঁকড়া চুলের লিচুগাছগুলো দেখতে বেশ। গর্ভেশ্বরী পারের শ্মশানে পেঁৗছাই। কালীপূজার মেলা বসেছে। ভেসে আসে, 'ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে, রইব না আর বেশি দিন তোদের মাঝারে'।
গানে ভেসে দুই রাস্তার মাথায় এসে দাঁড়াই। বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ধানক্ষেত। ভারী বাতাস সবুজ জমিনে ঢেউ তুলে ছুটে যাচ্ছে। এক বৃদ্ধ কৃষককে জিজ্ঞেস করে মেঠোপথ ধরে এগোতে গিয়ে দেখি সাইনবোর্ডে লেখা 'পাখি সংরক্ষিত এলাকা, পাখি মারা নিষেধ'। বুঝতে পারি এসে গেছি ভাটিনা। বড় একটি পুকুর পেরিয়ে এগিয়ে যাই। গ্রামের মধ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে অনেক বাঁশঝাড়। যতই ভেতরে ঢুকছি ততই পাখির কিচিরমিচির শব্দ চারপাশ থেকে আমাদের ঘিরে ধরছে। আমরা থমকে দাঁড়াই। বাঁশঝাড়ের ডালে ডালে শত শত পাখি। চড়ুই, শালিক, টিয়া, বক, মাছরাঙা, ঘুঘুসহ নানা রকমের পাখি। সবাই বুঝি আনন্দে চেঁচাচ্ছে। পাখিদের মহামিলন উৎসব যেন। আরেকটি বাঁশঝাড়ে সমবেত হয়েছে সহস্র পানকৌড়ি। একটি পানকৌড়িকে ছুটে পালাতে দেখে তাকিয়ে থাকি। দেখি একটি গোশালিক তাকে ঠোকর মারতে তাড়া করছে। পাখিদের আনন্দে আমরা আত্দহারা হয়ে যাই।
একটি আমবাগানে দেখলাম বাদামি রঙের বক আকৃতির অনেক পাখি। চোখ বুজে আয়েশ করে ঘুমাচ্ছে। স্থানীয় একজন জানাল, এরা রাতচরা। মুচকি হেসে ভাবি, হয়তো এ কারণেই দিনে ঘুমাচ্ছে। ভাটিনার শত শত একর জমিতে টমেটো আবাদ হয়। একটি টমেটো বাগানে গিয়ে দেখি পাখিদের বসার জন্য বাঁশের ছোট ছোট কঞ্চি গেড়ে দেওয়া হয়েছে। পোকার হাত থেকে রেহাই পেতে এ ব্যবস্থা। ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি এসে খেয়ে যাচ্ছে সব পোকা। এভাবে কীটনাশক থেকে পরিবেশ বাঁচে, বাঁচে খরচও।
পাখি ওড়াতে স্থানীয় যুবক আকরামুল বিশেষ কায়দায় শব্দ করতেই ঘটে অবাক করা ঘটনা। হাজার হাজার পাখি গাছ থেকে বেরিয়ে এসে আকাশের দিকে ছুটতে থাকে। অল্পক্ষণে আকাশ ছেয়ে যায় পাখিতে। ভাটিনার বাসিন্দারা এ রকম মন জুড়ানো দৃশ্য দেখে প্রতিদিন। শত শত পানকৌড়ি, সাদাবক, কুনিবক, গুটকল, রাতচরা, ঘুঘু, শালিক, টিয়া আর ময়নার অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে এ গ্রাম। এমনটি হয়েছে অনেক দিনের চেষ্টায়। কৃষক নূরু মিয়া জানালেন ১২ বছর আগের কথা। গোটা গ্রামেই ছিল পাখিদের আনাগোনা। ফাঁদ পেতে পাখি ধরা ছিল গ্রামবাসীর দৈনন্দিন ব্যাপার। বিত্তবানরা এয়ারগান চালাতেন দিনভর। দিনশেষে মোটরসাইকেলে মৃত পাখির ঝাঁক ঝুলিয়ে বাড়ি ফিরত শিকারিরা।
আলোর ভুবন সমিতি প্রথম উদ্যোগ নেয় পাখির অভয়ারণ্য তৈরির। তাদের পাশে এসে দাঁড়ায় স্থানীয় প্রভাবশালী হাশেম তালুকদার মেম্বার। পাখি মারার দীর্ঘদিনের অভ্যাস ছেড়ে নিজের এয়ারগানটি ছুড়ে ফেলে দেন। শপথ নেন পাখি না মারার। সেই শুরু। গোটা গ্রাম মেতে ওঠে পাখিপ্রেমে। পাখিদের সঙ্গে গ্রামবাসীর গড়ে উঠেছে আত্দার সম্পর্ক। ঝড়-বৃষ্টিতে ভাটিনাবাসী বেরিয়ে পড়ে কুলা হাতে। খুঁজে খুঁজে বের করে আহত পাখিগুলোকে। সাধ্যমতো চিকিৎসা দিয়ে বাসায় (বাঁশঝাড়ে) পেঁৗছে দিয়ে আসে।
সূর্য ডুবছে ভাটিনায়।
দূরে গিয়েছিল যারা তারা ফিরে আসছে। পুকুরে ঝাঁপিয়ে দিনশেষের ক্লান্তি দূর করছে কেউ কেউ। পাখিদের এসব দৃশ্য দেখলে কে আর ফিরতে চায়! আজও ভাটিনার কথা মনে হলে উদাস হয়ে যাই।
 Source: http://www.kalerkantho.com

পাখির গ্রাম বাঞ্ছারামপুরের দশানী

আদিত্যফয়সল .বাঞ্ছারামপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার পশ্চিমে দশানী গ্রামটি।আইয়ূবপুর ইউপির শেষপ্রান্ত দশানী গ্রামটির জনসংখ্যা নিত্যান্তই কম,মাত্র ৩হাজার প্রায়।মানুষ কম হলে কি হবে,গ্রামটির রয়েছে আলাদা স্বতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্য।প্রায় চারপাশ মেঘনা নদীর শাখা প্রশাখা গ্রামটিকে ঘীরে রাখা দশানী গ্রামের রয়েছে বিলুপ্ত প্রায় বহু সংখ্যক পাখির আনাগোনা।পাখিদের নিরাপদ আবাস ভূমি হিসেবে এটি পাখি প্রেমীদের মন কেড়েছে।কৃষিনিভর দশানী গ্রামের মানুষ হাজারো বৃক্ষরাজীতে পাখির বাসা ও পাখির কুঠরী যেন একে অন্যের সাথে দারুন বন্ধুত্ব।ফলে,গ্রামের শিশু থেকে বয়োবৃদ্ধ পাখিদের বিরক্ত বা শিকার করেন না।পাখি শিকারী ঢুকা এই গ্রামে একেবারেই বারণ।দোয়েল,কোয়েল,ময়না,শ্যামা,কয়েক প্রকারের বক,মাছরাঙ্গা,ডাউক,ছোট বড় ৫ প্রকারের চড়ুই,টিয়া,কাঠঠোকরী,কবুতর,ফিঙ্গে ইত্যাদিসহ প্রায় শতাধিক প্রজাতির আনুমানিক ৫ হাজার পাখিকে রক্ষার জন্য বষা মৌসুমে যথেষ্ঠ খাদ্য ও নিরাপত্তার বিষয়টি পদক্ষেপ নেয়ার জন্য দাবী জানিয়েছেন দশানীর গ্রামবাসী।সেটি আশপাশের এলাকা নরসিংদী,কুমিল্লার হোমনা,নবীনগর থেকে নিয়মিত পাখপাখালী দেখতে বিপুল সংখ্যক দশণাথী এলেও পাখিদের বিরক্ত করা থেকে বিরত থাকেন।শীতকাল এলেও তো কথাই নেই।এই গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা বিশিষ্ট সাংবাদিক মনিরুজ্জামান পামেন ও পৈত্রিক আবাসস্থল তফাজ্জ্বল হোসেনের ছেলে বিশিষ্ট ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটন একসময় এই পাখিদের পেছনে দৌড়ে দৌড়ে ছড়া লিখতে উৎসাহী হ’ন বলে জানা গেছে।কিচির মিচির চড়ুই ডাকে ঐ দূরের গাছটায়,দিদি যাবে স্কুলে ঠিক সাড়ে দশটায়-এর লেখক স্বনামধন্য ছড়াকার রিটন তার এক লেখনীতে উল্লেখ করেছেন,বাংলাদেশের সবস্থানে যদি এই দশানী গ্রামের মানুষের মতো পাখিপ্রেমী,নিজ স্বজনের মতো ভালোবাসতো,তা হলে দেশে পাখির আকাল পড়তো না।গ্রামের মানুষ বাঞ্ছারামপুরের এই পাখিদের নিয়ে গৌরববোধ করেন।তারা পরিচিতি হন,পাখির গ্রাম দশানী হিসেবে”।দেখা গেছে,গ্রামটিতে পাখি ও মানুষ সহবাসসহ এক অন্যের প্রতি মমত্ববোধ করেন।ফলে পাখিদের কষ্ট করে বাসাগুলো যেন কেউ ক্ষতি করতে না পারে,সে জন্য সজাগ দৃষ্টি রাখেন স্থানীয়রা।স্থানীয় কৃষাণী মধূবালা জানান,“আমগো ঘুম ভাঙ্গে পাখ-পাঁখালীদের গানের সুরে সুরে।আবার সন্ধ্যার বাত্তি জ্বালাই পাখিগো বাড়িতে আইয়্যা যহন কিচির মিচির কইরা যহন ডাহে„।৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধ তোরাব আলী মিয়া জানান,আমরা ছুডু বেলা থাইক্ক্যাই দেখতাছি বাশঝাড় ও গাছের মইধ্যে পাখির বহু বাসা।আমার বাবাজানেও আমারে কইতো পাখিগুলারে কোনসম কষকষ্ট দিস্ না।এইডা আমাগো উপর আল্লাহর নেয়ামত।সব জায়গায় পাখি বাসা বান্ধে না।পাশ্ববতী গ্রামের বাসিন্ধা বিশিষ্ট কলাম লেখক,জনপ্রতিনিধি মো.সিরাজুল ইসলাম এই প্রসঙ্গে জানান,“বত`মান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যা.তাজুল ইসলাম,তফাজ্ব্বল হোসেন [ছড়াকার লুৎফর রহমানের পিতা],বসুন্ধরার মালিক আহমেদ আকবর সোবহান শাহআলমের চাচা কৃষিতে জাতীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত স্বনামধন্য কৃষিবিদ ড.হালিমসহ আমরা অনেকে বাল্যকালে দলবেধে এই গ্রামে কেবল পাখিদের কিচির মিচির ও মনোমুগ্ধকর গান,নানা রঙ্গের পাখি নিয়ম করে আসতাম।মন্ত্রীমহোদয়,এখনো পাখির গ্রাম দশানীর খোজ খবর নিয়মিত রাখেন।তিনি গ্রামটি যেন পাখিবান্ধব ও পাখিদের জন্য নিরাপত্তাসহ সুরক্ষিত হয়ে উঠে তার জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা নেবেন বলে জেনেছি।“খোজ নিয়ে জানা গেছে,পাখিদের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে একমাত্র খাদ্য ও বাসা বাধার বৃক্ষরাজী কমে যাওয়ার কারনে।বিশেষ করে বরষা মৌসুমে খাদ্যের ঘাটতি থাকে।জানা গেছে গত বছর জনৈক ঠিকাদার তার পানিতে নষ্ট হয়ে যাওয়া গম ও চাল এই গ্রামের পাখিদের খাবার হিসেবে নিজ খরচে নিয়ে আসেন ও তা যথারীতি পাখিদের জন্য বিলিও করেন।গতকাল শুক্রবার যখন ফিরে আসি,পাখিরা গানের সুরে জনপ্রতিনিধি ও পাঠকদের উদ্ধেশে যেন বলতে চাইছে, “আমাদের রক্ষা করতে আর গাছ কেটো না,আমাদের বংশবৃদ্ধি করতে দাও।আমরা খাদ্যের নিরাপত্তাসহ বাসস্থান চাই”। 

Source: http://www.newsbrahmanbaria.com

 অতিথি পাখির গ্রাম কালুহাটিতে হাজার মানুষের ঢল




Friday, January 28, 2011

অতিথি পাখির কলকাকলীতে মুখরিত টাঙ্গুয়া হাওর


অতিথি পাখির কলকাকলীতে মুখরিত টাঙ্গুয়া হাওর

০০তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা

তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওর শতাধিক অতিথি পাখির কলকাকলীতে মুখরিত হয়ে উঠেছে। নেপাল, চীন, মঙ্গোলিয়া ও সুদূর সাইবেরিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় শতাধিক প্রজাতির পাখি হাজার হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এখন টাঙ্গুয়া হাওরে। এছাড়াও শনির হাওর, মাটিয়ান হাওর, কানামুইয়া, ফানা হাওর ওপলই বিলসহ ছোট-বড় বিলসমূহে লেনজা হাঁস, পিং হাঁস, বালি হাঁস, সরালী, কাইম, মদনা, গঙ্গা কবুতর, কালাকোড়া, পিয়ারি ছাড়াও নাম না জানা অনেক অতিথি পাখির বিচরণ লক্ষণীয়। কখনও জলকেলি, কখনও খুনসুটিতে কিংবা খাদ্যের সন্ধানে এক বিল থেকে অন্য বিলে, এক হাওর থেকে আরেক হাওরে গলা ছেড়ে সুর তোলে ঝাঁকে ঝাঁকে আকাশে উড়ছে এসব অতিথি পাখি। এদের দলবদ্ধ বিচরণ সহজেই মন কেড়ে নেয়। আকৃষ্ট করে তোলে ভ্রমণপিয়াসু মানুষের। শীতের সকালে সোনালী রোদে পাখিদের ডানা জাপটিয়ে আকাশে উড়া, আর তাদের কিচিরমিচির শব্দ তার সাথে এ দেশীয় প্রজাতির পাখি বক, পানকৌড়ি, মাছরাঙ্গা, গাংচিল পাখিদের সংমিশ্রণে যেন একাকার হয়ে গেছে টাঙ্গুয়া। এদিকে পাখির কোলাহলে হাওর পাড়ের গ্রামবাসীর ঘুম ভাঙ্গে। বোরো মৌসুমে কৃষকদের হাড়কাপা শীতের মাঝেও যেন পাখি ভোরের আলোয় আলোকিত করে তোলে। তাই হাওরের কৃষকরাও খাদ্যের যোগান দিতে চলে যান বীজ বপনে। হাওরে পাখি আর কৃষকের বীজবপন দুই মিলে এক অপরুপ দৃশ্য । শীত উপেক্ষা করে প্রতিদিন মানুষ পাখি দেখতে হাওরে ভীড় জমাচ্ছেন। জানা যায়, শৈত্যপ্রবাহ আর প্রচুর ঠান্ডার হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে এসব পাখি হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে দু'তিন মাসের জন্য চলে আসে বাংলাদেশের হাওরাঞ্চলে। বাংলাদেশে শীত পড়ার শুরুতেই এসব পাখি দেখার জন্য চলে আসেন বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাখিপ্রেমী লোকজন।

অন্যদিকে এক শ্রেণীর পাখি শিকারী এসব অতিথি পাখির অবাধ বিচরণ ঝাঁকে ঝাঁকে উড়তে দেখে রাতের অাঁধারে ফাঁদ পেতে পাখি নিধন করছে বলে জানা গেছে । আর এজন্য দিন দিন পাখির আগমন আগের তুলনায় অনেকাংশে কমে গেছে। অনেকেই মনে করেন এসব অতিথি পাখি যখন খাদ্যের সন্ধানে শামুক, মাছ আর পোকা-মাকড়ের খোঁজে বিল থেকে বিলে হাওর থেকে হাওরে যাচ্ছে তখনই অসাধু পাখি শিকারীর ফাঁদে আটকা পড়ছে এসব অতিথি পাখি।
Source: Daily Ittefaq, 28th January-2011

বিপন্ন টাঙ্গুয়ার হাওর:
লুটপাটে বিলীন হচ্ছে জীববৈচিত্র্য ০ প্রয়োজন সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা
সিলেট তথা বাংলাদেশের ঐতিহ্য টাঙ্গুয়ার হাওর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে দিন দিন ধ্বংস হতে চলছে। ১৯৯৯ সালে সরকার টাঙ্গুয়া হাওরকে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা হিসাবে ঘোষণা করে। ২০০০ সালের ২০ জানুয়ারি বিশাল এ হাওরকে রামসার ২য় সাইট হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। প্রথমদিকে হাওরের ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে চললেও পরবর্তীতে সেই মান আর ধরে রাখতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এই হাওরে নির্বিচারে মাছ ও জলজ উদ্ভিদ লুটপাট হচ্ছে। ফলে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ও রামসার প্রকল্পভুক্ত এ হাওরের মূল্যবান জীববৈচিত্র্য এখন হুমকির মুখে।

‘‘টাঙ্গুয়ার হাওরে চলছে হরিলুট, প্রতিদিন এই হাওরে ৮/১০ কেজি ওজনের রুই ও গ্রাসকাপসহ অন্যান্য মাছ সিলেট, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানের আড়তে যাচ্ছে,’’ এই মন্তব্য করে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে টাঙ্গুয়ার হাওরের তীর থেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘যারা রক্ষক তারাই লুটপাটে ব্যস্ত।’’ এলাকাবাসী আরো জানান, টাঙ্গুয়ার হাওর পাড়ের মানুষেরা জ্বালানির জন্য প্রতিদিনই ছোট-ছোট নৌকায় করে বন ও গাছপালা কেটে নিয়ে উজাড় করছে। ফলে এ হাওরে অবস্থানরত প্রাণীরা হারাচ্ছে আবাসস্থল।

অবৈধভাবে মাছ আহরণ ও হাওরের নলখাগরা, বনতুলশি কেটে নেয়ার কারণে টাঙ্গুয়ার ঐতিহ্য বিনষ্ট হচ্ছে- এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর। টাঙ্গুয়ার জীববৈচিত্র্যে সব চিহ্ন আজ বিলীন হওয়ার পথে। ছোট-বড় ১২০টি হাওর-বিল ও ১৮০টি কান্দা সমন্বয়ে জীববৈচিত্র্যে ভরপুর টাঙ্গুয়া হাওর। এখন হাওরের অবস্থা আর আগের মত নেই। বিশাল এই টাঙ্গুয়ার হাওর বর্ষায় সাগর সদৃশ রূপ নেয়। আর শীতকালে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে আসা অতিথি পাখির কলতান আর নয়ন জুড়ানো দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ ধান যখন বাতাসে হিল্লোল খেলে তখন এক অন্যরকম অনুভূতির সৃষ্টি হয়। দুই মৌসুমেই পর্যটকদের আনাগোনা রয়েছে প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ এ হাওরে।

দু’টি উপজেলা নিয়ে টাঙ্গুয়ার অবস্থান। একদিকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তরে ভারতের মেঘালয় এবং পশ্চিমদিকে ধর্মপাশা, মধ্যনগর উপজেলা। টাঙ্গুয়ার আয়তন ৬ হাজার ৯১২ দশমিক ২০ একর। বর্ষা মৌসুমে এর আয়তন গিয়ে দাঁড়ায় ২০ হাজার একরে। টাঙ্গুয়ার হাওরের মাঝ দিয়ে ছোট-বড় বেশ কয়েকটি নদী বয়ে গেছে। এসব নদীও মাছের অভয়স্থল। বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ টাঙ্গুয়ার হাওর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ২০০০ সালে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনকে দায়িত্ব দেয়া হয়। এর পর থেকে বিশেষ টাস্কফোর্সের মাধ্যমে টাঙ্গুয়ার হাওর রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, অসংখ্য জলজ প্রজাতির উদ্ভিদ আছে এ হাওরে। এর মধ্যে হিজল, করচ, বরুণ, পানিফল, হেলেঞ্চা, বনতুলশী, নলখাগরা, বল্লুয়া, চাল্লিয়া ইত্যাদি।

এছাড়া ২শ’ প্রজাতির মাছ, ৬ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৪ প্রজাতির সাপ, বিরল প্রজাতির উভচর, ৫১ প্রজাতির পাখি, ৬ প্রজাতির কচ্ছপ, ৭ প্রজাতির গিরগিটিসহ নানাবিধ প্রাণীর বাস এ হাওরে। টাঙ্গুয়ার হাওর রক্ষার যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল তা কতটুকু সফল হয়েছে তার মূল্যায়ন প্রয়োজন-এমন মন্তব্য করেছেন এলাকাবাসী।
Source: http://realestatebd.net, January-2011

Related Link-

TANGUA, BANGLADESH



Wednesday, January 12, 2011

হাকালুকি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অতিথি পাখিরা

হাকালুকি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অতিথি পাখিরা কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধিএকটু ওম আর খাবারের নিশ্চয়তায় ওরা প্রতি বছরই আসে এ দেশে। তবে তাদের বেশির ভাগের পছন্দ দেশের অন্যতম বৃহত্তম হাওর হাকালুকিসহ দেশের বিভিন্ন হাওর-বাঁওড় ও জলাশয়। এরা পরিযায়ী পাখি। দক্ষিণ গোলার্ধের শীত প্রধান দেশ রাশিয়ার সাইবেরিয়া, উত্তর মেরু, অস্ট্রেলিয়াসহ নানা দেশের পাখি মূলত অতি ঠাণ্ডা থেকে রক্ষা, খাবারের নিশ্চয়তা এবং নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে নানা প্রজাতির, রং-বেরংয়ের এসব পরিযায়ী পাখি আসে। এবারও তারা আসতে শুরু করেছে হাকালুকিতে। পরিবেশ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে অতিথি পাখিরা এ দেশে আসতে শুরু করে এবং এপ্রিলের শেষ দিকে গরম পড়লে ওরা কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে নিজ দেশের আপন নীড়ে ফিরতে শুরু করে। এই ৫-৬ মাস তারা হাকালুকিসহ দেশের জলাশয়গুলোতে গড়ে তুলে অস্থায়ী নিবাস। কুলাউড়া, জুড়ি, বড়লেখা, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলাজুড়ে ২৩৮টি বিলের বিশাল এ হাওরটিতে এখন ওরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। দিনের বেলায় পাখিগুলোর খাবার সংগ্রহের ব্যস্ততা, খুনসুটি, ডুবসাঁতার ও রোদে পালক শুকানোর দৃশ্য আর ঝাঁকে ঝাঁকে দলবদ্ধ হয়ে ওড়ার দৃশ্য মন কাড়ে প্রকৃত প্রকৃতিপ্রেমীদের। গোধূলিলগ্নে ওরা ফিরে নীড়ে, তাদের বরণ করতে প্রস্তুত থাকে হিজল, করচ, আঢ়ং, মুর্তাসহ নানা জলজ গাছ। ওদের ডালেই তাদের অস্থায়ী নিবাস। জানা গেছে, পরিবেশ অধিদফতর প্রতি বছরই অতিথি পাখিদের বরণ, তাদের দেখভাল, তদারকি ও পরিযায়ী পাখি দেখতে আসা পর্যটকদের সার্বিক সহযোগিতা করে থাকে। কিন্তু এ বছরের ডিসেম্বরে তাদের প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। ফলে পর্যটক ও পাখিপ্রেমীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা। পাখি দেখতে আসা কয়েকজন পর্যটক জানান, সরকারি ওই নজরদারি না থাকলে পাখিদের ওপর লোলুপ দৃষ্টি পড়তে পারে এক শ্রেণীর চোরাকারবারির। সিডাবিউবিএমপির পাখি শুমারির তথ্যানুসারে ২০০৬-০৭ সালের ৪২ প্রজাতির ৫২ হাজার, ২০০৭-০৮ সালে ৪০ প্রজাতির ১ লাখ ২৬ হাজারের বেশি, ২০০৮-০৯ সালে শুধু হাকালুকি হাওরে ৫৩ প্রজাতির মোট ৮৫ হাজারের বেশি পাখি পাওয়া যায়। এরমধ্যে দেশীয় ২০ প্রজাতি এবং পরিযায়ী ৩৩ প্রজাতি। পরিবেশ অধিদফতরের বন্যপ্রাণী ও সংরক্ষণ কর্মকর্তা পাখি বিশেষজ্ঞ বশির আহমদ জানান, গত বছর বিলুপ্ত প্রায় ৫ প্রজাতির পাখি দেখা গেছে হাকালুকি হাওরে। সেগুলো হলো_ বেয়ার্স পোচার্ড বা বেয়ারের ভুতিহাঁস, স্নেক বার্ড, মরচে রং ভুতিহাঁস, প্রশান্ত শৈলবগা ও ফুলুরি হাঁস। তিনি আরও জানান, গত বছরের হাকালুকি হাওরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার সংযুক্ত পাখি এখনো হাকালুকি হাওরে ফেরেনি। স্যাটেলাইট ট্রেকিং করে অনেক পাখি ভারতে অবস্থান করছে এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। এদিকে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন, নানা কারণে হাকালুকির ঐতিহ্য বিলীন হওয়ায় আগের চাইতে এখন পাখি কম আসছে। প্রতি বছর অতিথি পাখি এলে একদল দুর্বৃত্ত নানা কৌশলে বিষটোপ ও ফাঁদ পেতে পাখি ধরে।
Source: Bangladesh Pratidin

Sunday, December 26, 2010

অতিথি পাখির জলকেলি কলকাকলিতে মুখর নীলসাগর


অতিথি পাখির জলকেলি কলকাকলিতে মুখর নীলসাগর
দেখে আসুন নীলফামারীর বিরাট রাজার দীঘি

-তাহমিন হক ববি, নীলফামারী থেকে :
বাতাসে শীতের ছোঁয়া লাগতেই শুরম্ন হয়ে গেছে পরিযায়ী পাখির আনাগোনা। চারদিকে দাঁড়িয়ে বনবাবুল আকাশমণি, শিশু, পাকুড়, ঝাউ এবং ইউক্যালিপটাস। এ ছাড়া কত না ফুলের সমারোহ। এসব কিছুর টানে বাঙালী একটু অবসরে পা বাড়াচ্ছেন বিন্নাবতী কন্যার নীলসাগরে।
বিরাট রাজার কন্যা বিন্না। বিন্নার নামে সেই বিন্নাদীঘি আবার কেউ বলেন বিরাট রাজার দীঘি। আর কালের আবর্তের আজকের নীলসাগর। নীলফামারীর এই বিরাট দীঘিতে ভিনদেশী পাখির সমারোহ। সুদূর সাইবেরিয়া থেকে প্রতি বছরের মতো এবারও ছুটে এসেছে শীতের অতিখি পাখিরা। এখন নীলসাগর দীঘিটি এই শীতের হাজারো অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর। পাখি দেখতে এখানে ছুটে আসছে বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য মানুষ। বসেছে দর্শনাথর্ীদের মিলনমেলা। শীতের অতিথি পাখিরা কিচিরমিচির ডাক আর পাখা নাচিয়ে উড়াল দিয়ে ফের দীঘির পানিতে ভেসে বেড়ানোর খেলায় মেতে উঠছে। নীলসাগরের উদার উদাস পরিবেশ খুব সহজেই কাছে টানে প্রকৃতিপ্রেমী মানুষদের। দীঘির এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এখন পাখি আর পাখি। পাখিদের জলকেলির দৃশ্য দেখে দুই নয়ন ভরে যায়। এ ছাড়া এলাকাটি পিকনিক স্পট হিসেবেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এ সময় শীতের পাখি দেখতে আর বনভোজনে ছুটে আসছেন বিভিন্ন জেলার মানুষ।
চলে আসুন নীলফামারীর বিন্নাবতীর দীঘি ও দীঘির জলে জলকেলিতে মুখর করে রাখা অতিথি পাখি দেখতে। আপনি আসুন, এই পাখিরা আপনাকে স্বাগত জানাবে।
বিরাট রাজার দীঘি এই নীলসাগরকে পাখিদের অভয়ারণ্য হিসেবে গড়ে তুলেছে নীলফামারী জেলা প্রশাসন। এখানে বৃরে সমারোহ ঘটিয়ে মনোমুগ্ধ পরিবেশ সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে পিকনিক স্পট। রয়েছে রেস্ট হাউস। দীঘিজুড়ে পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। পাখিদের যাতে কোন প্রকার অসুবিধা না হয় সেজন্য দীঘি এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। বৃরাজির পাশাপাশি বিভিন্ন জাতের ফুলে ফুলে ভরে দেয়া হয়েছে নীলসাগরকে। সীমানা প্রাচীর দিয়ে এই নীলসাগরকে সুরার ব্যবস্থা করা হয়েছে শুধু অতিথি পাখিদের জন্য। জেল প্রশাসক ফরহাদ হোসেন বললেন পাখিদের অভয়রন্যের পাশাপাশি নীলসাগরের দীঘিতে মাছও চাষ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে অসংখ্য বৃরাজির সমারোহ ঘটিয়ে এলাকাটি সবুজে ছেয়ে দেয়া হয়েছে।
নীলসাগরে দর্শনাথর্ীদের জন্য টিকেটের মূল্য রাখা হয়েছে মাত্র ৫ টাকা। কেউ যদি এখানকার রেস্ট হাউসে রাতযাপন করতে চান তা হলে আগাম জেলা প্রশাসন হতে বুকিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
নীলফামারী জেলা শহর হতে ১৫ কিলোমিটার দূরে পাকা সড়ক বেয়ে এই নীলসাগরের অবস্থান। প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ৫৫ একর জমির ওপর বিরাট রাজার বিন্নাবতী কন্যার এই বিরাট দীঘি। লোকমুখে প্রচলন আছে অষ্টম শতাব্দীর বিরাট রাজার গো খামার ছিল এখানে। শত শত গরম্নকে পানি খাওয়ানোর জন্য বিরাট রাজা এখানে এই দীঘি খনন করেছিলেন। আর রাজার মেয়ে বিন্নাবতীর নামানুসারে এই দীঘির নামকরণ করা হয় বিন্নাদীঘি। কালের আবর্তে বিন্না থেকে এটি বিরাট দীঘি। আর সেই গো খামার থেকে এলাকাটির ইউনিয়নের নাম হয়ে যায় গোড়গ্রাম।
কালের আবর্তে ১৯৮৩ সালে এটির নাম পরিবর্তন ঘটিয়ে রাখা হয় নীলসাগর। এই নীলসাগর নামের সঙ্গে মিলিয়ে এখন সরাসরি নীলফামারী-ঢাকা পথে নিয়মিত চলাচল করছে আনত্মঃনগর ট্রেন নীলসাগর। ট্রেনটি নীলফামারী থেকে রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশন অভিমুখে ছেড়ে যায়। অপরদিকে ঢাকা থেকে সকাল ৮টায় নীলফামারী অভিমুখে ছেড়ে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে নীলফামারী পেঁৗছে। এ ছাড়া ঢাকার গাবতলী থেকে নীলফামারীর নীলসাগর যারা দেখতে আসতে চান তারা নাবিল, হানিফ, বাবলু, রোজিনা, শ্যামলী, দ্রম্নতি পরিবহন কোচে আসতে পারেন। মহাখালী থেকেও গাড়ি পাওয়া যায় নাদের ও নীলফামারী পরিবহন।
Source: Daily janakantha, 22th December

রাঙ্গুনিয়ায় তৈরি হচ্ছে পাখিশালা

রাঙ্গুনিয়ায় তৈরি হচ্ছে পাখিশালা
- মুহাম্মদ সেলিম, রাঙ্গুনিয়া থেকে ফিরে
চট্টগ্রামে রাঙ্গুনিয়ায় নির্মিত হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম পাখিশালা 'শেখ রাসেল এভিয়ারি অ্যান্ড ইকো-পার্ক'। এ পাখিশালায় বিলুপ্ত হতে যাওয়া পাখি ও বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ সংরক্ষণ করা হবে।

কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরপাখির জগৎ সম্পর্কে ধারণা দিতে গড়ে তোলা হচ্ছে এই ইকো-পার্ক। প্রাণিজগৎ সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের গবেষণায় সহায়তার পাশাপাশি পর্যটকদের আকর্ষণ করতে এখানে বিভিন্ন ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। গতকাল পার্কটির নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। উদ্বোধনের পর প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পার্ক তৈরির মাধ্যমে এখানে পরিবেশের উন্নয়ন ঘটানো হবে। বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে পার্কটিতে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা রাখা হচ্ছে। এর মাধ্যমে রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সভাপতি পাখিবিশেষজ্ঞ মওদুদুল আলম বলেন, এখানে বিলুপ্ত হওয়া বিভিন্ন পাখি ও বৃক্ষ সংরক্ষণ করা হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় কোনো দেশে এভিয়ারি অ্যান্ড ইকো-পার্ক নেই। এশিয়ায় শুধু মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে এ পার্ক রয়েছে। এশিয়ার তৃতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এভিয়ারি পার্ক প্রতিষ্ঠা করছে। এ ধরনের পার্কে সাধারণত বিলুপ্ত হওয়া পাখি সংরক্ষণ করা হয়। সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, রাঙ্গুনিয়ার পাহাড় ও সমতলের ২১০ হেক্টর এলাকা জুড়ে পার্কটি গড়ে উঠছে। এটি তৈরিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ কোটি টাকা। এখানে বাবুই, হলদে পাখি, ইগল, শকুন, বুলবুলি, দোয়েল, শ্যামা, শালিক, ভিংবাজ, পেঁচা, টুনটুনি, টিয়া, ঘুঘু, মাছরাঙা, সাদা বকের মতো বিলুপ্তপ্রায় পাখিগুলো সংরক্ষণ করা হবে। প্রকল্প এলাকায় ভেষজ ও অন্যান্য বিলুপ্তপ্রায় ৭১ হাজার ৫০০ গাছ লাগানো হচ্ছে। এ ছাড়া রোপণ করা হচ্ছে ৩০ হাজার সৌন্দর্যবর্ধক গাছ। পাশাপাশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে থাকছে রেস্টহাউস, ঝুলন্ত সেতু, আধুনিক রেস্তোরাঁ, লেক, হেলানো বেঞ্চ, আরসিসি স্টিল ছাতা, ওয়াচ টাওয়ার এবং শিশুদের জন্য দোলনা ও স্লিপার। এ ছাড়া প্রকল্প এলাকায় থাকছে শেখ রাসেলের ম্যুরাল, হরিণ বিচরণক্ষেত্র ও কুমির প্রজননক্ষেত্র। এ বিষয়ে প্রকল্প কর্মকর্তা এস এম গোলাম মওলা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ পাহাড় ও বনজঙ্গল ধ্বংস করার ফলে পাখির অনেক প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। শেখ রাসেল এভিয়ারি অ্যান্ড ইকো-পার্কে বিলুপ্ত হওয়া বিভিন্ন প্রজাতির পাখি সংরক্ষণ করা হবে।
Source: Daily Bangladesh-Pratidin, 8th August

Friday, December 24, 2010

দিনাজপুরে পাখির অভয়ারণ্য গড়েছেন এক বীর মুক্তিযোদ্ধা

০০ মোঃ মতিউর রহমান, দিনাজপুর

জেলার ভাটিনায় একক আন্দোলনের ফসল হিসাবে গড়ে উঠেছে পাখির অভয়ারণ্য। বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসেমের প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠা অভয়ারণ্যে আছে অসংখ্য পাখি। ওই এলাকায় পাখি শিকার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। খোদ গ্রামবাসী এখন পাখি লালন-পালনে ব্যস্ত।

জেলা শহর থেকে ৫ কি. মি. পূর্ব দিকে সদর উপজেলার উত্তর ভাটিনা গ্রামে একাধিক বাঁশঝাড় এবং বড় বড় বৃক্ষের উপর গড়ে উঠেছে অপরূপ সৌন্দর্য্যমণ্ডিত পাখির অভয়ারণ্য। প্রতিদিন শিক্ষানুরাগীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের আগমন ঘটে এই পক্ষীশালায়। রং-বেরংয়ের নানা পাখি দেখা যায় সেখানে। সাদা-কালো-হলুদ বক, পানকৌড়ি, বেলে হাঁস, ডাহুক, রাতচোরা, ঘুঘু, চড়-ইসহ ৩০/৪০ প্রজাতির দেশীয় পাখিদের কলরব আর অঙ্গ ভঙ্গিমায় সৃষ্টি হয় এক অভূতপূর্ব পরিবেশ। পাখির এই মিলন মেলা আগত দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। দীর্ঘ এক যুগ আগে এই গ্রামটি পাখিদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়। আলোর ভুবন যুব সমবায় সমিতির তত্ত্বাবধানে এই অভয়ারণ্যের পাখির সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করা হয়। বীর-মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবুল হাসেম তালুকদার আন্তরিকভাবে এই দেখভালে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছেন। শীত মৌসুমে হাজার হাজার অতিথি পাখির আগমনে অভয়ারণ্য কলকাকলিতে মুখর হয়ে ওঠে।

আবুল হাসেম জানান, প্রায় ৪০ বছর পূর্বে আবাদী ফসলে কোন বিষ প্রয়োগ করা হতো না। আমরা বিষমুক্ত ফসল উৎপাদন করতাম এবং বিষমুক্ত খাদ্য খেত দেশবাসী। বর্তমান বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির যুগে ফসল উৎপাদনে প্রচুর পরিমাণ বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে কীটপতঙ্গ ধ্বংসের জন্য। সে কারণে দেশীয় প্রজাতির পাখি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। তাদের নিরাপদ আবাসস্থল না থাকার কারণে বংশবিস্তারে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়া কিছু লোভী মানুষ পাখি নিধন করে বংশবিস্তারে বাধা সৃষ্টি করছে। ফলে লাখো পাখি পালিয়ে গেছে পাশর্্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে।

পাখিদের অভয়ারণ্য তৈরি করে প্রজনন বৃদ্ধি করতে আবুল হাসেম তালুকদার দীর্ঘ এক যুগ পূর্বে এই আন্দোলন শুরু করেন। আন্দোলনের কর্মসূচি হিসাবে প্রায় ৫/৬ কি. মি. জুড়ে বিভিন্ন পুকুর ও খাল-বিলের পাশে বাঁশঝাড় লাগানো হয়েছে। কয়েক বছর পূর্বে ওইসব এলাকায় প্রায় ২ শতাধিক বটগাছ ও পাকুড় গাছ রোপণ করা হয়েছে। পাখিরা এই সব বাঁশঝাড় ও গাছগালার ফল খাবে ও আবাসস্থল সৃষ্টি করে অত্র অঞ্চলের ফসলাদি রক্ষা করবে। প্রকৃতির সাথে তাল মিলিয়ে বিষাক্ত কীটপতঙ্গ ধ্বংস করবে। ফলে ফসলাদির ক্ষতি কম হবে। জনগণ বিষমুক্ত খাদ্য খেতে পারবে। এই পাখিদের রক্ষার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। এ পরিপ্রেক্ষিতে দেড় বছর পূর্বে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে ম্যাজিস্ট্রেট সাদি ও ম্যাজিস্ট্রেট হেমন্ত রায়ের নেতৃত্বে একটি টিম ভাটিনায় পাখির অভয়ারণ্য জরিপ করেন। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিগত বছরে জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগ আবারও জরিপ করে। তবে সরকারিভাবে এ যাবৎ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। আবুল হাসেম জানান, সরকারি পদক্ষেপ না থাকলেও পাখির অভয়ারণ্য তৈরি করতে এলাকার জনগণ সচেতনভাবে এগিয়ে এসেছে। প্রকৃতপক্ষে পাখি নিধন ও গাছপালা কেটে ফেলার ব্যাপারে জনগণকে সচেতন করার জন্যই পাখির আবাসস্থল তৈরির কাজ শুরু করা হয়। তিনি বলেন, জ্যৈষ্ঠ থেকে শুরু করে ভাদ্র মাস পর্যন্ত ৩ বার এসব পাখি ৩০ থেকে ৪০ হাজার ছানার জন্ম দেয়। প্রকৃতির সাথে মিশে যায় এরা। নিজস্ব এলাকায় জমির ফসলাদি রক্ষার জন্য এসব পাখি কীটপতঙ্গ, পোকামাকড় ধ্বংস করে। তবে নিজস্ব এলাকার (আবাসস্থলের আশপাশের) পুকুর ও খাল-বিলের ক্ষতি করে না। এসব পাখি দূর-দূরান্ত থেকে তাদের আহার যোগাড় করে নিয়ে আসে। ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আগত পাখিরা একবার বাংলাদেশে আসলে আর ফিরে যেতে চায় না। তবে কোন কোন সময় আবাসস্থল না থাকার কারণে অসংখ্য পাখি ফিরে যায়। তিনি ভাটিনা অভয়ারণ্য এলাকাকে পাখির প্রজন্ম এলাকা হিসাবে উলেস্নখ করেন।
Source: Daily Ittefaq, 22th Nov.

Wednesday, December 22, 2010

Make a trip to Puthia bird village where bird and people adore together

It is far infrequent to locate such a place, both rural and urbane areas, where people are habituated to leave bed in the morning hearing tweeting of birds. It will be really amazing for you to visit such a village in Rajshahi and make a vacation with different flying creatures.

Birds and cattle are friends together

Birds and cattle are friends together here

In that village, sun shines or not, people begin their working, school goers march for learning, farmers step towards cropland and at dusk wrap up their day’s work by hearing colloquy and chirping of thousands of birds.

Not only in winter, but all the year round the village become abode of thousands of birds, both indigenous and migratory, those have made the pastoral village Pochamaria into a safe asylum.

The bird’s sanctuary attracts lots of bird lovers, from both home and abroad, at village Pochamaria Sanctuary, located some 35-kilometers northeast of Rajshahi city and 15 km West to Natore town.

Relax of birds

Its evening time, they were tired!

Villagers also bear profound belief on birds as ‘harbinger of good fortune’ despite tolerating annoyance of their [birds] damaging of ripened crops, fruits and leafs of trees.

Though their [bird’s] stupidity and nuisance embarrasses locals enormous and brings many sufferings when they take flight with meals, chicks and fish from wetlands.

The farmers, however, are the best beneficiaries from eco-friendly birds when the creature makes cropland free from harmful insects and crop-killing weeds by eating.

The bird friendly people decided using limited insect-repellents so that birds are not poisoned. This feeling of locals on birds is truly rare and unbelievable.

Sleeping bats

wow! guess what?

During fishing session one can see in the village ponds and water bodies that many fish-eating birds flocks here as ‘uninvited guests’ for appetizing fishes.

If you visit the village and notice entire scene, one could able to get a great test of life.

It’s also very much pleasing as at daytime hundreds of birds are seen collecting foodstuffs at nearby water bodies and wetlands at their own fashion. Birds moves at large during locals busy with their daily works like cultivating, fishing or working.

Country’s eminent ornithologists from different universities, foreign tourists, bird lovers like Japanese visitor Takuma Kurataki, Dubai Zoo Curator, Bangladesh Bird Club Founder president also eminent ornithologist Enam Ul Haque, Dr. Ali Raza Khan however, frequently visits the safe den.

Locals and foreigners are closely watching birds at Pochamaria

Locals and foreigners are closely watching birds at Pochamaria

In last March, local Bird Protection Club and Bangladesh Birds Club jointly organized a day long bird fair here to make aware locals about save bird and nature.

Surprisingly, bird-loving villagers have strictly prohibited hunting birds in 42 square kilometer area and declared the village a bird sanctuary.

Any nature lovers with their family members have a nice opportunity to blend with nature and have scope to spend a night with birds if they able to make a trip.

Within 50 minutes one can reach the village amazingly without help of any tourist guide as hundreds of aerial birds along with members of Bird club welcome visitors any season of year!

Children are performing on Bird's fair at Pochamaria

Children are performing on Bird's fair at Pochamaria

A good number of cheap-rated residential hotels are available both in Natore town and Rajshahi city for visitors.

The highway communication is very easy, inexpensive and smooth as both motorized and non-motorized vehicles are available from Puthia upazila headquarters (on the Rajshahi-Dhaka highway).

Beside visiting ‘Bird village’ visitor have scope to peep through nearby archeological and tourist spots like Puthia Jaminder Bari, Uttara Gana Bhaban at Natore town, Tahirpur Jaminder Bari, Rajshahi Barendra Research museum, Sadhonpur Disabled Rehabilitation Center. Those historical spots are surrounded by the bird village and distance of those places within 20 kms.

Chirping of bird attains tranquility in mind that makes alliance with people and real natural life taste.

Birds are playing

Birds are playing in a tree

One can witness many rare mixtures of birds like Oriental Magpie, Turtle Dove, Asian Koel, white and painted stork, herons and owls from very little range of vision.

Any way, visitors should not forget to carry binocular and digital zoomed camera during the trip otherwise one may miss enjoy dancing, feeding and swimming birds either on top of tree or wetlands. So try to avail the opportunity to discover the bird’s heaven at your yard!

Source: http://www.travel-bangladesh.net

Monday, December 13, 2010

Baikka Beel Bird Sanctuary


Baikka Beel Bird Sanctuary

Thousands of migratory birds in a wetland that can be reached by two hours trek, The scenic countryside is a bonus.

Explo History and Description:

Beel or wetlands are one special geographic feature of Bangladesh. You can consider a Beel to be a shallow natural lake. How shallow? 2 meters or less. Baikka Beel is a part of the Hail Haor, a vast wetland of almost 100 acres. Each year in winter, thousands of migratory birds fly from way north to make this wetland their home.

Highlights 1

The road that takes you to the Beel runs through scenic country side, typical rural area of Bangladesh.

Highlights 2

There is an observation tower at the beel, you can climb the tower to watch birds.

Highlights 3

Don't forget to bring your tele-lens if you are into wildlife / bird photography.

Highlights 4

You can hire a boat and get pretty close the flock of resting birds.

My experience and personal tips:

If you are planning to watch birds in the afternoon, start sufficiently early so that you can reach the Beel at about 3:00PM. In this way, you'll get plenty of time to watch and photograph birds.

How getting there:

Start from Srimongol town. Hire a CNG at station road, standard is 400taka for taking you to the Beel, waiting there for two hours while you watch birds and bringing you back to the town.

You can also drive your own vehicle. A 4WD Jeep or similar vehicle is suggested, the country road is not suitable for sedans. Take the road that goes to Moulovibazar. Drive for about 6 kilometers, you'll find a signboard that tells you to turn left from there to reach Baikka Beel. Now you are on country road and the road is marked with signboards, you can also ask the locals if needed.

You can also consider trekking/bicycle ride through the country. For trekking, you can take a bus. They will drop you at the point where you have to leave the highway and get on the country road. The trek to Baikka Beel will take 2hours or little more.

A tip to eat:

You can find some road side cafes on the way, but nothing to eat at the beel. Better take your own food if you think you'll get hungry.

A tip to sleep:

Don't stay overnight, no accommodation at the Beel. Nearest hotels are in Srimongol town.

Useful information:
Open hours:

Sunrise to sunset.

Best time to watch birds is early in the morning for two hours starting from sunrise and in the afternoon since two hours before the sunset.

Basically its open 24 hours, nobody will block your way if you want to climb the observation tower at 1:00AM in the morning. But that probably is not a good idea because the guards work only during their work shift.

Visit duration:

2 hours for bird watching.

Entry fees:

Climb observation tower : 05 taka
Boat ride half an hour : 20 taka
Boat ride one hour : 30 taka

Source: http://www.exploguide.com

Related Links:

অতিথি পাখির কলতানে মুখর বাইক্কা বিল

Nawabganj Bird Sanctuary, INDIA


The Nawabganj Bird Sanctuary is one of the most important bird sanctuaries located close to the Nawabganj town in the Unnao district of Uttar Pradesh. The sanctuary is known as the bird watcher's paradise in India. The sanctuary is located at a distance of 45 km from the highway connecting Kanpur and Lucknow. Rambling over an area of 2.246 sq. km, the place is beautifully lined with many different trees and shrubs. Both local as well as traveling birds are found in abundance in the sanctuary. The birds help a lot to maintain the biological equilibrium of the place. The migratory birds that flock the sanctuary come from all over the world including countries like Siberia, Europe, and Tibet etc.

Nawabganj Bird Sanctuary has about 250 species of drifting and local birds. The migrant birds can be seen between the months of November and February. The sanctuary also has a beautiful lake in its vicinity. Some of the birds that can be spotted easily in the sanctuary include Pintail, Red Crested Pochard, Common Teal, Mallard, Brahmini Duck, Greylag Goose, Cotton Teal, and gadwall, Shoveller, Coot and Wigeon.

Some of the colorful species of birds that can be seen in the Nawabganj Bird Sanctuary include Sarus Crane, Painted Stork, Stopwill, Black Ibis, Whistling Teal, Dabchick, White Ibis, White necked Stork, Spoon Bill, Open Billed Stork, Black Necked Stork, Purple Moorhen, Broze Winged Jacana, Pheasant Tailed jacana, White Breasted Water Hen, Moorhen, Cormorant Darter, Egret, and Pond Heron.

Some other birds making the Nawabganj Bird Sanctuary more vibrant include Lapwing, Koel, Hawk Eagle, Stone Curlew, Night Jar, Kingfisher, Dove, Tern Vulture, King Crow, Hoopoe, Drongo, Bee Eater, Muniya, Brain Fever Bird, Indian Roller, Parakeet, Finch, Comb Duck, Peacock, Babbler, Barbet and Pigeon.

You can also delight yourself by observing gaiety little fish like Sindhi, Saul, Katla, Kavai, and Mangur swimming in the lake. The sanctuary is also a dwelling place of numerous reptiles especially snakes. Viper, Rat snake, Water Snake, Krait and Cobra are some of the poisonous snakes that can be spotted at numerous places in the sanctuary. The Nawabganj Bird Sanctuary also has a deer park in its vicinity. Barking Deer and Spotted deer are the common species of deer found at the place. The verdant sanctuary offers enchanting and picturesque settings for the photographers. Nawabganj Bird Sanctuary has a number of comfortable and budget hotels for the convenience of the modest traveler. Small bistros and coffee bars available at the place add to the delight of tourists. The Nawabganj Bird Sanctuary is easily accessible as the railway station of Kusumbi lies just 2km from the place. This beautiful sanctuary is definitely a great place to spend your holiday.
Ask for Tour

Saturday, December 11, 2010

দক্ষিণ চট্টগ্রামের পর্যটন স্পটগুলো অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর

দক্ষিণ চট্টগ্রামের পর্যটন স্পটগুলো অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর

০০ লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা , ডিসেম্বর ০৮, ২০১০

দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারা, বাঁশখালী ও লোহাগাড়ার পর্যটন স্পট ও বনাঞ্চলে ভিনদেশী পাখি ভিড় জমিয়েছে। অতিথি পাখি দেখার জন্য প্রতিদিন পর্যটকরা স্পটে ভিড় জমাচ্ছে। এসব এলাকার পাহাড়ি অঞ্চলেও অতিথি পাখিরা ভিড় জমাচ্ছে। ইতিমধ্যে উত্তরাঞ্চলে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় চট্টগ্রামের এসব অঞ্চলে অতিথি পাখিরা ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম শহর থেকে ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে বাঁশখালী উপজেলার জলদী বনবিটের আওতাধীন বাঁশখালী ইকোপার্কটিতে পর্যটকদের পাশাপাশি অতিথি পাখিদের কল-কাকলিতে মুখরিত। ২০০৪ সালে বামের ছড়া ও ডানের ছড়া নিয়ে এ পার্কটির সৃষ্টি করা হয়। ইকোপার্কে আসা পর্যটক মোঃ সেলিম জানান, তিনি বহুবার এ ইকোপার্কে এসেছেন। কিন্তু এবারের শীতে বেশি অতিথি পাখির আগমন ঘটেছে, যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। অতিথি পাখিদের অবাধে বিচরণের জন্য ঝুলন্ত ব্রিজের মেরামত ও ইকোটু্যরিজম বৃদ্ধি করা দরকার বলে তিনি জানান। এছাড়া দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আসা-যাওয়ার সুবিধার্থে ইকোপার্কের রাস্তা সমপ্রসারণ ও গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থাও জরুরি বলে তিনি মনে করেন।

অপরদিকে, লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যেও অতিথি পাখিদের বিচরণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যতোই অভয়ারণ্যের ভিতরে যাওয়া যাবে, ততই গাছে-গাছে, পাহাড়ে ও বিলে ঝাঁকে ঝাঁকে রঙ-বেরঙের অতিথি পাখি। ৭ হাজার ৭৬৪ হেক্টর জায়গা নিয়ে গঠিত এ অভয়ারণ্য থেকে প্রতিনিয়ত গাছ নিধন হলেও এটি অতিথি পাখি বিচরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান। অন্যদিকে এশিয়ান হাতি প্রজননের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল এবং দেশের বিরল বিশাল বন এলাকা হিসেবে এ অভয়ারণ্যটির বেশ পরিচিতি রয়েছে।
Source: Daily Ittefaq

চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হতে পারে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র

০০লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা

জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ বনাঞ্চল এবং হাতি প্রজননের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য সম্ভাবনাময় প্রাকৃতিক অপরূপ লীলাভূমি। অভয়ারণ্যের উলেস্নখযোগ্য প্রাণী এশীয় হাতি ছাড়া বন্য শুকর, বানর, হনুমান, মায়া হরিণ, সাম্বারসহ ১৯ প্রজাতির স্তন্যপায়ী ও চার প্রজাতির উভচর প্রাণী, সাত প্রজাতির সরীসৃপ, ৫৩ প্রজাতির পাখি এবং ১০৭ প্রজাতির বৃক্ষরাজির সমন্বয়ে গঠিত বিশাল বনভূমি। বৃক্ষের সৌন্দর্যের সমন্বয়, উঁচু-নিচু পাহাড়ে সৃজিত বাগান আর বাগানে পাখিদের মিষ্টি সুরে মুখরিত অভয়ারণ্যটি হতে পারে একটি আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র। যা থেকে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা আয় করা সম্ভব।

সংশিস্নষ্ট বিভাগের তথ্য মতে, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এ বনাঞ্চল ও তার পাশর্্ববর্তী এলাকাসমূহ মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ স্থান ছিল। ১৯৮৬ সালে চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া, বাঁশখালী ও কক্সবাজার জেলার চকরিয়াসহ ৭টি সংরক্ষিত বনভূমি নিয়ে অভয়ারণ্যটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯২ সালে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের অধীনে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। বনাঞ্চল সুরক্ষা, বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল উন্নয়ন, শিক্ষা, গবেষণা ও চিত্ত বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টির জন্য ২০০৩ সালে এলাকায় চুনতি ও জলদী রেঞ্জের অধীনে ৭টি বিট অফিস স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে পর্যটকদের কাছে আরো আকর্ষণীয় করার জন্য অভয়ারণ্য এলাকায় বনপুকুর, প্রাকৃতিক গর্জন বনাঞ্চল, এশীয় বন্যহাতির অবাধে বিচরণ, গয়ালমারা প্রাকৃতিক হ্রদ, বনপুকুর ফুটট্রেইল, জাঙ্গালীয়া ফুটট্রেইল, পর্যটন টাওয়ার, গোলঘর, স্টুডেন্ট ডরমিটরি, নেচার কনজারভেশন সেন্টার, গবেষণা কেন্দ্র, ইকোকটেজসহ বিভিন্ন প্রতিবেশ পর্যটন বা ইকোটু্যরিজম স্থাপন করা হয়। সংরক্ষিত বন এলাকায় ভ্রমণের জন্য ৮ জন প্রশিক্ষিত টু্যরগাইড সার্বক্ষণিক নিয়োজিত আছে।

পর্যবেক্ষণ টাওয়ারের মাধ্যমে সহজে অভয়ারণ্যের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যসহ এশীয় হাতি ও অন্য বন্যপ্রাণীর এবং পাখির অবাধ বিচরণ উপভোগ করা যায়। চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতিস্থ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পশ্চিম পাশ্বর্ে অভয়ারণ্যের অবস্থান। অভয়ারণ্যের সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা জানান, এটিকে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ার জন্য ইকোটু্যরিজমের কিছু বিশেষ আকর্ষণ বিশেষ করে পর্যটন অবকাঠামো তৈরি করলে এটি দেশের অন্যতম ইকোপার্কে পরিণত হবে। ফলে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় হবে। এদিকে অভয়ারণ্যের বিশাল এলাকার প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য সমন্বিত রক্ষিত এলাকা সহ-ব্যবস্থাপনা (আইপ্যাক) ইউএসআইডি'র অর্থায়নে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। আইপ্যাকের সাইট ফ্যাসিলিটেটর মোঃ খাইরুজ্জামান জানান, ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে অচিরেই অভয়ারণ্যটি দেশের সম্ভাবনাময় প্রাকৃতিক পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে। সহজেই মনোরম পরিবেশে এ প্রাকৃতিক সৌন্দয্য উপভোগ করা যাবে। সহ-ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ইতিমধ্যে অভয়ারণ্যের জীববৈচিত্র্য বহুলাংশে উন্নয়ন করা হয়েছে। সামনে লেক ও বিশ্রামাগার করার পরিকল্পনা আছে। অভয়ারণ্যের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক রবীন্দ্রনাথ অধিকারী জানান, পর্যটকদের আকর্ষণীয় করার জন্য অভয়ারণ্যের ভিতরে আরো প্রাকৃতিক হ্রদ, রাস্তা-ঘাট, পর্যবেক্ষণ টাওয়ারসহ বিভিন্ন পর্যটন উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। জার্মানীর জেটিজেড'র অর্থায়নে আগামী পাঁচ বছরে প্রাকৃতিক বন সুরক্ষা ও বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনাসহ ইকোটু্যরিজমের কাজ হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিমল সিংহ জানান, চুনতি অভয়ারণ্যটি দক্ষিণ পূর্ব উপমহাদেশের জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ একটি বনাঞ্চল। এটিকে আধুনিক পর্যটনের সুবিধায় নিয়ে আসতে পারলে প্রকৃতি গবেষণাগারের সুবিধাসহ সরকারের প্রচুর রাজস্ব আয় হবে।
Source: Daily Ittefaq
চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারন্য এলাকা পর্যটন শিল্পের বিশাল সম্ভাবনাঃ

চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য অঞ্চলটি চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া ও বাঁশখালী উপজেলা এবং কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার মধ্যবর্তী সংযোগস্থলের নিবিড় পাহাড়ী এলাকায় বিস্তৃত বনভূমি নিয়ে গঠিত। চট্টগ্রাম শহর থেকে ৭০ কিঃ মি দক্ষিনে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পশ্চিম পার্শ্বে প্রাকৃতিক বনভূমির জীববৈচিত্র সমৃদ্ধ অঞ্চলটি নিয়ে চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারন্যের অবস্থান।

ক্ষয়িষ্ণু এ অঞ্চলের জীববৈচিত্র পূনরুদ্ধার, সুরক্ষা, বন্যপ্রানীর আবাসস্থল উন্নয়ন, শিক্ষা গবেষনা ও চিত্তবিনোদনের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৯৮৬ সালে ৭৭৬৪.০০ হেক্টর সংরক্ষিত বনভূমি নিয়ে এ অভয়ারন্যটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। উক্ত বনাঞ্চলের উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০০৩-০৪ অর্থ বছর থেকে এ পর্যন্ত ৪৬৫.০০ হেক্টর এলাকায় বাগান সৃজন করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বনায়ন কার্যক্রম চলছে। ২০০৯-১০ অর্থ বছরে ১৫০.০০ হেক্টর বনায়নের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তাছাড়া প্রকৃতি শিক্ষা কেন্দ্র-১টি, ষ্টুডেন্ট ডরমিটরী-১টি, এসিএফ বাংলো ও পার্ক অফিস-চুনতি সদরে ১টি,হারবাং বিটে -১টির উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত হয়েছে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে প্রস্তাবিত নিম্নবর্ণিত অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। ষ্টাফ ব্যারাক-১টি, পাবলিক টয়লেট-১টি, এইচবিবি সিসি রাস্তা-৩০০মিঃ

চুনতি অভয়ারণ্য এলাকায় পর্যটক সুবিধার জন্য নিম্নবর্ণিত প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রয়োজন। এটি বাস্তবায়িত হলে পর্যটকের ব্যাপক সমাগম হবে। একই সাথে রাজস্ব আরও বাড়বে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী হওয়ায় এ অভয়ারণ্যের পর্যটন সম্ভাবনা বিশাল।
১। প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে ঢোকার প্রবেশমুখে ১টি ডিজিটাল সাইনবোর্ড স্থাপন।
২। পার্কিং স্থানগুলোয় মাটিভরাট।
৩। পার্কিং এলাকার আশেপাশে বসার স্থান, গেষ্ট রুম, খাওয়া-দাওয়ার স্থান নির্মান।
৪। পর্যটকদের আকর্ষন বাড়ানোর জন্য বনের ৪০/৫০ একর জায়গা ঘিরা দিয়ে নীচু জায়গায় জলাশয় নির্মাণ করে উহার মধ্যে হরিন,সম্বর ইত্যাদির একটি প্রজননকেন্দ্র তৈরী করা।
৫। পর্যটকদের ঘুরে বেড়ানোর জন্য foot trail গুলোকে ইটের সলিং দ্বারা ৫র্ চওড়া রাস্তা তৈরী করা।
৬। কিছু দুর পর পর পাহাড়ের উপর উঁচু গোলঘর তৈরী করা যাতে পর্যটকগন মাঝে মাঝে বিশ্রাম নিতে পারে।
৭। অভয়ারন্যের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য তিনটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার (৮০-১০০)ফুট নির্মাণ করা।
৮। অভয়ারন্য এলাকায় ১০টি Water Body বা জলাশয়/লেক নির্মান করা।
৯। পর্যটকদের চিত্ত বিনোদনের জন্য বোটিং, ফিশিং, চলচিত্রের স্যুাটিং ইত্যাদির ব্যবস্থা করা
১০। বন্য পশু পাখীদের সংরক্ষন ও প্রজননের জন্য প্রাকৃতিক আবাসস্থল সংরক্ষন ও উন্নয়ন।
১১। চুনতি থেকে বাঁশখালী ইকোপার্ক পর্যন্ত ১টি Rope Way নির্মাণ করা।
১২। Tourist Hotel নির্মাণ করা।

চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারন্য অঞ্চলটি একটি বিস্তৃত পাহাড়ী বনভূমি বিধায় উহার ভূপ্রকৃতি ও অবস্থানের জন্য উহার দ্বারা পরিবেশগত এবং জলবায়ুর প্রভাব খুবই গুরুত্বপূর্ন।

Related Linls:

বিপদাপন্ন বাদামি ঘুরাল