অতিথি পাখির কলকাকলীতে মুখরিত টাঙ্গুয়া হাওর
০০তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা
তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওর শতাধিক অতিথি পাখির কলকাকলীতে মুখরিত হয়ে উঠেছে। নেপাল, চীন, মঙ্গোলিয়া ও সুদূর সাইবেরিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় শতাধিক প্রজাতির পাখি হাজার হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এখন টাঙ্গুয়া হাওরে। এছাড়াও শনির হাওর, মাটিয়ান হাওর, কানামুইয়া, ফানা হাওর ওপলই বিলসহ ছোট-বড় বিলসমূহে লেনজা হাঁস, পিং হাঁস, বালি হাঁস, সরালী, কাইম, মদনা, গঙ্গা কবুতর, কালাকোড়া, পিয়ারি ছাড়াও নাম না জানা অনেক অতিথি পাখির বিচরণ লক্ষণীয়। কখনও জলকেলি, কখনও খুনসুটিতে কিংবা খাদ্যের সন্ধানে এক বিল থেকে অন্য বিলে, এক হাওর থেকে আরেক হাওরে গলা ছেড়ে সুর তোলে ঝাঁকে ঝাঁকে আকাশে উড়ছে এসব অতিথি পাখি। এদের দলবদ্ধ বিচরণ সহজেই মন কেড়ে নেয়। আকৃষ্ট করে তোলে ভ্রমণপিয়াসু মানুষের। শীতের সকালে সোনালী রোদে পাখিদের ডানা জাপটিয়ে আকাশে উড়া, আর তাদের কিচিরমিচির শব্দ তার সাথে এ দেশীয় প্রজাতির পাখি বক, পানকৌড়ি, মাছরাঙ্গা, গাংচিল পাখিদের সংমিশ্রণে যেন একাকার হয়ে গেছে টাঙ্গুয়া। এদিকে পাখির কোলাহলে হাওর পাড়ের গ্রামবাসীর ঘুম ভাঙ্গে। বোরো মৌসুমে কৃষকদের হাড়কাপা শীতের মাঝেও যেন পাখি ভোরের আলোয় আলোকিত করে তোলে। তাই হাওরের কৃষকরাও খাদ্যের যোগান দিতে চলে যান বীজ বপনে। হাওরে পাখি আর কৃষকের বীজবপন দুই মিলে এক অপরুপ দৃশ্য । শীত উপেক্ষা করে প্রতিদিন মানুষ পাখি দেখতে হাওরে ভীড় জমাচ্ছেন। জানা যায়, শৈত্যপ্রবাহ আর প্রচুর ঠান্ডার হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে এসব পাখি হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে দু'তিন মাসের জন্য চলে আসে বাংলাদেশের হাওরাঞ্চলে। বাংলাদেশে শীত পড়ার শুরুতেই এসব পাখি দেখার জন্য চলে আসেন বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাখিপ্রেমী লোকজন।
অন্যদিকে এক শ্রেণীর পাখি শিকারী এসব অতিথি পাখির অবাধ বিচরণ ঝাঁকে ঝাঁকে উড়তে দেখে রাতের অাঁধারে ফাঁদ পেতে পাখি নিধন করছে বলে জানা গেছে । আর এজন্য দিন দিন পাখির আগমন আগের তুলনায় অনেকাংশে কমে গেছে। অনেকেই মনে করেন এসব অতিথি পাখি যখন খাদ্যের সন্ধানে শামুক, মাছ আর পোকা-মাকড়ের খোঁজে বিল থেকে বিলে হাওর থেকে হাওরে যাচ্ছে তখনই অসাধু পাখি শিকারীর ফাঁদে আটকা পড়ছে এসব অতিথি পাখি।
Source: Daily Ittefaq, 28th January-2011
Related Link-
অন্যদিকে এক শ্রেণীর পাখি শিকারী এসব অতিথি পাখির অবাধ বিচরণ ঝাঁকে ঝাঁকে উড়তে দেখে রাতের অাঁধারে ফাঁদ পেতে পাখি নিধন করছে বলে জানা গেছে । আর এজন্য দিন দিন পাখির আগমন আগের তুলনায় অনেকাংশে কমে গেছে। অনেকেই মনে করেন এসব অতিথি পাখি যখন খাদ্যের সন্ধানে শামুক, মাছ আর পোকা-মাকড়ের খোঁজে বিল থেকে বিলে হাওর থেকে হাওরে যাচ্ছে তখনই অসাধু পাখি শিকারীর ফাঁদে আটকা পড়ছে এসব অতিথি পাখি।
Source: Daily Ittefaq, 28th January-2011
বিপন্ন টাঙ্গুয়ার হাওর:
লুটপাটে বিলীন হচ্ছে জীববৈচিত্র্য ০ প্রয়োজন সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা
সিলেট তথা বাংলাদেশের ঐতিহ্য টাঙ্গুয়ার হাওর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে দিন দিন ধ্বংস হতে চলছে। ১৯৯৯ সালে সরকার টাঙ্গুয়া হাওরকে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা হিসাবে ঘোষণা করে। ২০০০ সালের ২০ জানুয়ারি বিশাল এ হাওরকে রামসার ২য় সাইট হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। প্রথমদিকে হাওরের ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে চললেও পরবর্তীতে সেই মান আর ধরে রাখতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এই হাওরে নির্বিচারে মাছ ও জলজ উদ্ভিদ লুটপাট হচ্ছে। ফলে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ও রামসার প্রকল্পভুক্ত এ হাওরের মূল্যবান জীববৈচিত্র্য এখন হুমকির মুখে।
‘‘টাঙ্গুয়ার হাওরে চলছে হরিলুট, প্রতিদিন এই হাওরে ৮/১০ কেজি ওজনের রুই ও গ্রাসকাপসহ অন্যান্য মাছ সিলেট, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানের আড়তে যাচ্ছে,’’ এই মন্তব্য করে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে টাঙ্গুয়ার হাওরের তীর থেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘যারা রক্ষক তারাই লুটপাটে ব্যস্ত।’’ এলাকাবাসী আরো জানান, টাঙ্গুয়ার হাওর পাড়ের মানুষেরা জ্বালানির জন্য প্রতিদিনই ছোট-ছোট নৌকায় করে বন ও গাছপালা কেটে নিয়ে উজাড় করছে। ফলে এ হাওরে অবস্থানরত প্রাণীরা হারাচ্ছে আবাসস্থল।
অবৈধভাবে মাছ আহরণ ও হাওরের নলখাগরা, বনতুলশি কেটে নেয়ার কারণে টাঙ্গুয়ার ঐতিহ্য বিনষ্ট হচ্ছে- এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর। টাঙ্গুয়ার জীববৈচিত্র্যে সব চিহ্ন আজ বিলীন হওয়ার পথে। ছোট-বড় ১২০টি হাওর-বিল ও ১৮০টি কান্দা সমন্বয়ে জীববৈচিত্র্যে ভরপুর টাঙ্গুয়া হাওর। এখন হাওরের অবস্থা আর আগের মত নেই। বিশাল এই টাঙ্গুয়ার হাওর বর্ষায় সাগর সদৃশ রূপ নেয়। আর শীতকালে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে আসা অতিথি পাখির কলতান আর নয়ন জুড়ানো দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ ধান যখন বাতাসে হিল্লোল খেলে তখন এক অন্যরকম অনুভূতির সৃষ্টি হয়। দুই মৌসুমেই পর্যটকদের আনাগোনা রয়েছে প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ এ হাওরে।
দু’টি উপজেলা নিয়ে টাঙ্গুয়ার অবস্থান। একদিকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তরে ভারতের মেঘালয় এবং পশ্চিমদিকে ধর্মপাশা, মধ্যনগর উপজেলা। টাঙ্গুয়ার আয়তন ৬ হাজার ৯১২ দশমিক ২০ একর। বর্ষা মৌসুমে এর আয়তন গিয়ে দাঁড়ায় ২০ হাজার একরে। টাঙ্গুয়ার হাওরের মাঝ দিয়ে ছোট-বড় বেশ কয়েকটি নদী বয়ে গেছে। এসব নদীও মাছের অভয়স্থল। বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ টাঙ্গুয়ার হাওর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ২০০০ সালে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনকে দায়িত্ব দেয়া হয়। এর পর থেকে বিশেষ টাস্কফোর্সের মাধ্যমে টাঙ্গুয়ার হাওর রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, অসংখ্য জলজ প্রজাতির উদ্ভিদ আছে এ হাওরে। এর মধ্যে হিজল, করচ, বরুণ, পানিফল, হেলেঞ্চা, বনতুলশী, নলখাগরা, বল্লুয়া, চাল্লিয়া ইত্যাদি।
এছাড়া ২শ’ প্রজাতির মাছ, ৬ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৪ প্রজাতির সাপ, বিরল প্রজাতির উভচর, ৫১ প্রজাতির পাখি, ৬ প্রজাতির কচ্ছপ, ৭ প্রজাতির গিরগিটিসহ নানাবিধ প্রাণীর বাস এ হাওরে। টাঙ্গুয়ার হাওর রক্ষার যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল তা কতটুকু সফল হয়েছে তার মূল্যায়ন প্রয়োজন-এমন মন্তব্য করেছেন এলাকাবাসী।
Source: http://realestatebd.net, January-2011‘‘টাঙ্গুয়ার হাওরে চলছে হরিলুট, প্রতিদিন এই হাওরে ৮/১০ কেজি ওজনের রুই ও গ্রাসকাপসহ অন্যান্য মাছ সিলেট, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানের আড়তে যাচ্ছে,’’ এই মন্তব্য করে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে টাঙ্গুয়ার হাওরের তীর থেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘যারা রক্ষক তারাই লুটপাটে ব্যস্ত।’’ এলাকাবাসী আরো জানান, টাঙ্গুয়ার হাওর পাড়ের মানুষেরা জ্বালানির জন্য প্রতিদিনই ছোট-ছোট নৌকায় করে বন ও গাছপালা কেটে নিয়ে উজাড় করছে। ফলে এ হাওরে অবস্থানরত প্রাণীরা হারাচ্ছে আবাসস্থল।
অবৈধভাবে মাছ আহরণ ও হাওরের নলখাগরা, বনতুলশি কেটে নেয়ার কারণে টাঙ্গুয়ার ঐতিহ্য বিনষ্ট হচ্ছে- এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর। টাঙ্গুয়ার জীববৈচিত্র্যে সব চিহ্ন আজ বিলীন হওয়ার পথে। ছোট-বড় ১২০টি হাওর-বিল ও ১৮০টি কান্দা সমন্বয়ে জীববৈচিত্র্যে ভরপুর টাঙ্গুয়া হাওর। এখন হাওরের অবস্থা আর আগের মত নেই। বিশাল এই টাঙ্গুয়ার হাওর বর্ষায় সাগর সদৃশ রূপ নেয়। আর শীতকালে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে আসা অতিথি পাখির কলতান আর নয়ন জুড়ানো দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ ধান যখন বাতাসে হিল্লোল খেলে তখন এক অন্যরকম অনুভূতির সৃষ্টি হয়। দুই মৌসুমেই পর্যটকদের আনাগোনা রয়েছে প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ এ হাওরে।
দু’টি উপজেলা নিয়ে টাঙ্গুয়ার অবস্থান। একদিকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তরে ভারতের মেঘালয় এবং পশ্চিমদিকে ধর্মপাশা, মধ্যনগর উপজেলা। টাঙ্গুয়ার আয়তন ৬ হাজার ৯১২ দশমিক ২০ একর। বর্ষা মৌসুমে এর আয়তন গিয়ে দাঁড়ায় ২০ হাজার একরে। টাঙ্গুয়ার হাওরের মাঝ দিয়ে ছোট-বড় বেশ কয়েকটি নদী বয়ে গেছে। এসব নদীও মাছের অভয়স্থল। বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ টাঙ্গুয়ার হাওর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ২০০০ সালে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনকে দায়িত্ব দেয়া হয়। এর পর থেকে বিশেষ টাস্কফোর্সের মাধ্যমে টাঙ্গুয়ার হাওর রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, অসংখ্য জলজ প্রজাতির উদ্ভিদ আছে এ হাওরে। এর মধ্যে হিজল, করচ, বরুণ, পানিফল, হেলেঞ্চা, বনতুলশী, নলখাগরা, বল্লুয়া, চাল্লিয়া ইত্যাদি।
এছাড়া ২শ’ প্রজাতির মাছ, ৬ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৪ প্রজাতির সাপ, বিরল প্রজাতির উভচর, ৫১ প্রজাতির পাখি, ৬ প্রজাতির কচ্ছপ, ৭ প্রজাতির গিরগিটিসহ নানাবিধ প্রাণীর বাস এ হাওরে। টাঙ্গুয়ার হাওর রক্ষার যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল তা কতটুকু সফল হয়েছে তার মূল্যায়ন প্রয়োজন-এমন মন্তব্য করেছেন এলাকাবাসী।
Related Link-