০০ মোঃ মতিউর রহমান, দিনাজপুর
জেলার ভাটিনায় একক আন্দোলনের ফসল হিসাবে গড়ে উঠেছে পাখির অভয়ারণ্য। বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসেমের প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠা অভয়ারণ্যে আছে অসংখ্য পাখি। ওই এলাকায় পাখি শিকার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। খোদ গ্রামবাসী এখন পাখি লালন-পালনে ব্যস্ত।
জেলা শহর থেকে ৫ কি. মি. পূর্ব দিকে সদর উপজেলার উত্তর ভাটিনা গ্রামে একাধিক বাঁশঝাড় এবং বড় বড় বৃক্ষের উপর গড়ে উঠেছে অপরূপ সৌন্দর্য্যমণ্ডিত পাখির অভয়ারণ্য। প্রতিদিন শিক্ষানুরাগীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের আগমন ঘটে এই পক্ষীশালায়। রং-বেরংয়ের নানা পাখি দেখা যায় সেখানে। সাদা-কালো-হলুদ বক, পানকৌড়ি, বেলে হাঁস, ডাহুক, রাতচোরা, ঘুঘু, চড়-ইসহ ৩০/৪০ প্রজাতির দেশীয় পাখিদের কলরব আর অঙ্গ ভঙ্গিমায় সৃষ্টি হয় এক অভূতপূর্ব পরিবেশ। পাখির এই মিলন মেলা আগত দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। দীর্ঘ এক যুগ আগে এই গ্রামটি পাখিদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়। আলোর ভুবন যুব সমবায় সমিতির তত্ত্বাবধানে এই অভয়ারণ্যের পাখির সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করা হয়। বীর-মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবুল হাসেম তালুকদার আন্তরিকভাবে এই দেখভালে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছেন। শীত মৌসুমে হাজার হাজার অতিথি পাখির আগমনে অভয়ারণ্য কলকাকলিতে মুখর হয়ে ওঠে।
আবুল হাসেম জানান, প্রায় ৪০ বছর পূর্বে আবাদী ফসলে কোন বিষ প্রয়োগ করা হতো না। আমরা বিষমুক্ত ফসল উৎপাদন করতাম এবং বিষমুক্ত খাদ্য খেত দেশবাসী। বর্তমান বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির যুগে ফসল উৎপাদনে প্রচুর পরিমাণ বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে কীটপতঙ্গ ধ্বংসের জন্য। সে কারণে দেশীয় প্রজাতির পাখি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। তাদের নিরাপদ আবাসস্থল না থাকার কারণে বংশবিস্তারে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়া কিছু লোভী মানুষ পাখি নিধন করে বংশবিস্তারে বাধা সৃষ্টি করছে। ফলে লাখো পাখি পালিয়ে গেছে পাশর্্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে।
পাখিদের অভয়ারণ্য তৈরি করে প্রজনন বৃদ্ধি করতে আবুল হাসেম তালুকদার দীর্ঘ এক যুগ পূর্বে এই আন্দোলন শুরু করেন। আন্দোলনের কর্মসূচি হিসাবে প্রায় ৫/৬ কি. মি. জুড়ে বিভিন্ন পুকুর ও খাল-বিলের পাশে বাঁশঝাড় লাগানো হয়েছে। কয়েক বছর পূর্বে ওইসব এলাকায় প্রায় ২ শতাধিক বটগাছ ও পাকুড় গাছ রোপণ করা হয়েছে। পাখিরা এই সব বাঁশঝাড় ও গাছগালার ফল খাবে ও আবাসস্থল সৃষ্টি করে অত্র অঞ্চলের ফসলাদি রক্ষা করবে। প্রকৃতির সাথে তাল মিলিয়ে বিষাক্ত কীটপতঙ্গ ধ্বংস করবে। ফলে ফসলাদির ক্ষতি কম হবে। জনগণ বিষমুক্ত খাদ্য খেতে পারবে। এই পাখিদের রক্ষার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। এ পরিপ্রেক্ষিতে দেড় বছর পূর্বে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে ম্যাজিস্ট্রেট সাদি ও ম্যাজিস্ট্রেট হেমন্ত রায়ের নেতৃত্বে একটি টিম ভাটিনায় পাখির অভয়ারণ্য জরিপ করেন। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিগত বছরে জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগ আবারও জরিপ করে। তবে সরকারিভাবে এ যাবৎ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। আবুল হাসেম জানান, সরকারি পদক্ষেপ না থাকলেও পাখির অভয়ারণ্য তৈরি করতে এলাকার জনগণ সচেতনভাবে এগিয়ে এসেছে। প্রকৃতপক্ষে পাখি নিধন ও গাছপালা কেটে ফেলার ব্যাপারে জনগণকে সচেতন করার জন্যই পাখির আবাসস্থল তৈরির কাজ শুরু করা হয়। তিনি বলেন, জ্যৈষ্ঠ থেকে শুরু করে ভাদ্র মাস পর্যন্ত ৩ বার এসব পাখি ৩০ থেকে ৪০ হাজার ছানার জন্ম দেয়। প্রকৃতির সাথে মিশে যায় এরা। নিজস্ব এলাকায় জমির ফসলাদি রক্ষার জন্য এসব পাখি কীটপতঙ্গ, পোকামাকড় ধ্বংস করে। তবে নিজস্ব এলাকার (আবাসস্থলের আশপাশের) পুকুর ও খাল-বিলের ক্ষতি করে না। এসব পাখি দূর-দূরান্ত থেকে তাদের আহার যোগাড় করে নিয়ে আসে। ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আগত পাখিরা একবার বাংলাদেশে আসলে আর ফিরে যেতে চায় না। তবে কোন কোন সময় আবাসস্থল না থাকার কারণে অসংখ্য পাখি ফিরে যায়। তিনি ভাটিনা অভয়ারণ্য এলাকাকে পাখির প্রজন্ম এলাকা হিসাবে উলেস্নখ করেন।
Source: Daily Ittefaq, 22th Nov.
জেলা শহর থেকে ৫ কি. মি. পূর্ব দিকে সদর উপজেলার উত্তর ভাটিনা গ্রামে একাধিক বাঁশঝাড় এবং বড় বড় বৃক্ষের উপর গড়ে উঠেছে অপরূপ সৌন্দর্য্যমণ্ডিত পাখির অভয়ারণ্য। প্রতিদিন শিক্ষানুরাগীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের আগমন ঘটে এই পক্ষীশালায়। রং-বেরংয়ের নানা পাখি দেখা যায় সেখানে। সাদা-কালো-হলুদ বক, পানকৌড়ি, বেলে হাঁস, ডাহুক, রাতচোরা, ঘুঘু, চড়-ইসহ ৩০/৪০ প্রজাতির দেশীয় পাখিদের কলরব আর অঙ্গ ভঙ্গিমায় সৃষ্টি হয় এক অভূতপূর্ব পরিবেশ। পাখির এই মিলন মেলা আগত দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। দীর্ঘ এক যুগ আগে এই গ্রামটি পাখিদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়। আলোর ভুবন যুব সমবায় সমিতির তত্ত্বাবধানে এই অভয়ারণ্যের পাখির সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করা হয়। বীর-মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবুল হাসেম তালুকদার আন্তরিকভাবে এই দেখভালে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছেন। শীত মৌসুমে হাজার হাজার অতিথি পাখির আগমনে অভয়ারণ্য কলকাকলিতে মুখর হয়ে ওঠে।
আবুল হাসেম জানান, প্রায় ৪০ বছর পূর্বে আবাদী ফসলে কোন বিষ প্রয়োগ করা হতো না। আমরা বিষমুক্ত ফসল উৎপাদন করতাম এবং বিষমুক্ত খাদ্য খেত দেশবাসী। বর্তমান বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির যুগে ফসল উৎপাদনে প্রচুর পরিমাণ বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে কীটপতঙ্গ ধ্বংসের জন্য। সে কারণে দেশীয় প্রজাতির পাখি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। তাদের নিরাপদ আবাসস্থল না থাকার কারণে বংশবিস্তারে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়া কিছু লোভী মানুষ পাখি নিধন করে বংশবিস্তারে বাধা সৃষ্টি করছে। ফলে লাখো পাখি পালিয়ে গেছে পাশর্্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে।
পাখিদের অভয়ারণ্য তৈরি করে প্রজনন বৃদ্ধি করতে আবুল হাসেম তালুকদার দীর্ঘ এক যুগ পূর্বে এই আন্দোলন শুরু করেন। আন্দোলনের কর্মসূচি হিসাবে প্রায় ৫/৬ কি. মি. জুড়ে বিভিন্ন পুকুর ও খাল-বিলের পাশে বাঁশঝাড় লাগানো হয়েছে। কয়েক বছর পূর্বে ওইসব এলাকায় প্রায় ২ শতাধিক বটগাছ ও পাকুড় গাছ রোপণ করা হয়েছে। পাখিরা এই সব বাঁশঝাড় ও গাছগালার ফল খাবে ও আবাসস্থল সৃষ্টি করে অত্র অঞ্চলের ফসলাদি রক্ষা করবে। প্রকৃতির সাথে তাল মিলিয়ে বিষাক্ত কীটপতঙ্গ ধ্বংস করবে। ফলে ফসলাদির ক্ষতি কম হবে। জনগণ বিষমুক্ত খাদ্য খেতে পারবে। এই পাখিদের রক্ষার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। এ পরিপ্রেক্ষিতে দেড় বছর পূর্বে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে ম্যাজিস্ট্রেট সাদি ও ম্যাজিস্ট্রেট হেমন্ত রায়ের নেতৃত্বে একটি টিম ভাটিনায় পাখির অভয়ারণ্য জরিপ করেন। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিগত বছরে জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগ আবারও জরিপ করে। তবে সরকারিভাবে এ যাবৎ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। আবুল হাসেম জানান, সরকারি পদক্ষেপ না থাকলেও পাখির অভয়ারণ্য তৈরি করতে এলাকার জনগণ সচেতনভাবে এগিয়ে এসেছে। প্রকৃতপক্ষে পাখি নিধন ও গাছপালা কেটে ফেলার ব্যাপারে জনগণকে সচেতন করার জন্যই পাখির আবাসস্থল তৈরির কাজ শুরু করা হয়। তিনি বলেন, জ্যৈষ্ঠ থেকে শুরু করে ভাদ্র মাস পর্যন্ত ৩ বার এসব পাখি ৩০ থেকে ৪০ হাজার ছানার জন্ম দেয়। প্রকৃতির সাথে মিশে যায় এরা। নিজস্ব এলাকায় জমির ফসলাদি রক্ষার জন্য এসব পাখি কীটপতঙ্গ, পোকামাকড় ধ্বংস করে। তবে নিজস্ব এলাকার (আবাসস্থলের আশপাশের) পুকুর ও খাল-বিলের ক্ষতি করে না। এসব পাখি দূর-দূরান্ত থেকে তাদের আহার যোগাড় করে নিয়ে আসে। ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আগত পাখিরা একবার বাংলাদেশে আসলে আর ফিরে যেতে চায় না। তবে কোন কোন সময় আবাসস্থল না থাকার কারণে অসংখ্য পাখি ফিরে যায়। তিনি ভাটিনা অভয়ারণ্য এলাকাকে পাখির প্রজন্ম এলাকা হিসাবে উলেস্নখ করেন।
Source: Daily Ittefaq, 22th Nov.
No comments:
Post a Comment