Sunday, December 26, 2010

অতিথি পাখির জলকেলি কলকাকলিতে মুখর নীলসাগর


অতিথি পাখির জলকেলি কলকাকলিতে মুখর নীলসাগর
দেখে আসুন নীলফামারীর বিরাট রাজার দীঘি

-তাহমিন হক ববি, নীলফামারী থেকে :
বাতাসে শীতের ছোঁয়া লাগতেই শুরম্ন হয়ে গেছে পরিযায়ী পাখির আনাগোনা। চারদিকে দাঁড়িয়ে বনবাবুল আকাশমণি, শিশু, পাকুড়, ঝাউ এবং ইউক্যালিপটাস। এ ছাড়া কত না ফুলের সমারোহ। এসব কিছুর টানে বাঙালী একটু অবসরে পা বাড়াচ্ছেন বিন্নাবতী কন্যার নীলসাগরে।
বিরাট রাজার কন্যা বিন্না। বিন্নার নামে সেই বিন্নাদীঘি আবার কেউ বলেন বিরাট রাজার দীঘি। আর কালের আবর্তের আজকের নীলসাগর। নীলফামারীর এই বিরাট দীঘিতে ভিনদেশী পাখির সমারোহ। সুদূর সাইবেরিয়া থেকে প্রতি বছরের মতো এবারও ছুটে এসেছে শীতের অতিখি পাখিরা। এখন নীলসাগর দীঘিটি এই শীতের হাজারো অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর। পাখি দেখতে এখানে ছুটে আসছে বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য মানুষ। বসেছে দর্শনাথর্ীদের মিলনমেলা। শীতের অতিথি পাখিরা কিচিরমিচির ডাক আর পাখা নাচিয়ে উড়াল দিয়ে ফের দীঘির পানিতে ভেসে বেড়ানোর খেলায় মেতে উঠছে। নীলসাগরের উদার উদাস পরিবেশ খুব সহজেই কাছে টানে প্রকৃতিপ্রেমী মানুষদের। দীঘির এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এখন পাখি আর পাখি। পাখিদের জলকেলির দৃশ্য দেখে দুই নয়ন ভরে যায়। এ ছাড়া এলাকাটি পিকনিক স্পট হিসেবেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এ সময় শীতের পাখি দেখতে আর বনভোজনে ছুটে আসছেন বিভিন্ন জেলার মানুষ।
চলে আসুন নীলফামারীর বিন্নাবতীর দীঘি ও দীঘির জলে জলকেলিতে মুখর করে রাখা অতিথি পাখি দেখতে। আপনি আসুন, এই পাখিরা আপনাকে স্বাগত জানাবে।
বিরাট রাজার দীঘি এই নীলসাগরকে পাখিদের অভয়ারণ্য হিসেবে গড়ে তুলেছে নীলফামারী জেলা প্রশাসন। এখানে বৃরে সমারোহ ঘটিয়ে মনোমুগ্ধ পরিবেশ সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে পিকনিক স্পট। রয়েছে রেস্ট হাউস। দীঘিজুড়ে পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। পাখিদের যাতে কোন প্রকার অসুবিধা না হয় সেজন্য দীঘি এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। বৃরাজির পাশাপাশি বিভিন্ন জাতের ফুলে ফুলে ভরে দেয়া হয়েছে নীলসাগরকে। সীমানা প্রাচীর দিয়ে এই নীলসাগরকে সুরার ব্যবস্থা করা হয়েছে শুধু অতিথি পাখিদের জন্য। জেল প্রশাসক ফরহাদ হোসেন বললেন পাখিদের অভয়রন্যের পাশাপাশি নীলসাগরের দীঘিতে মাছও চাষ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে অসংখ্য বৃরাজির সমারোহ ঘটিয়ে এলাকাটি সবুজে ছেয়ে দেয়া হয়েছে।
নীলসাগরে দর্শনাথর্ীদের জন্য টিকেটের মূল্য রাখা হয়েছে মাত্র ৫ টাকা। কেউ যদি এখানকার রেস্ট হাউসে রাতযাপন করতে চান তা হলে আগাম জেলা প্রশাসন হতে বুকিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
নীলফামারী জেলা শহর হতে ১৫ কিলোমিটার দূরে পাকা সড়ক বেয়ে এই নীলসাগরের অবস্থান। প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ৫৫ একর জমির ওপর বিরাট রাজার বিন্নাবতী কন্যার এই বিরাট দীঘি। লোকমুখে প্রচলন আছে অষ্টম শতাব্দীর বিরাট রাজার গো খামার ছিল এখানে। শত শত গরম্নকে পানি খাওয়ানোর জন্য বিরাট রাজা এখানে এই দীঘি খনন করেছিলেন। আর রাজার মেয়ে বিন্নাবতীর নামানুসারে এই দীঘির নামকরণ করা হয় বিন্নাদীঘি। কালের আবর্তে বিন্না থেকে এটি বিরাট দীঘি। আর সেই গো খামার থেকে এলাকাটির ইউনিয়নের নাম হয়ে যায় গোড়গ্রাম।
কালের আবর্তে ১৯৮৩ সালে এটির নাম পরিবর্তন ঘটিয়ে রাখা হয় নীলসাগর। এই নীলসাগর নামের সঙ্গে মিলিয়ে এখন সরাসরি নীলফামারী-ঢাকা পথে নিয়মিত চলাচল করছে আনত্মঃনগর ট্রেন নীলসাগর। ট্রেনটি নীলফামারী থেকে রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশন অভিমুখে ছেড়ে যায়। অপরদিকে ঢাকা থেকে সকাল ৮টায় নীলফামারী অভিমুখে ছেড়ে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে নীলফামারী পেঁৗছে। এ ছাড়া ঢাকার গাবতলী থেকে নীলফামারীর নীলসাগর যারা দেখতে আসতে চান তারা নাবিল, হানিফ, বাবলু, রোজিনা, শ্যামলী, দ্রম্নতি পরিবহন কোচে আসতে পারেন। মহাখালী থেকেও গাড়ি পাওয়া যায় নাদের ও নীলফামারী পরিবহন।
Source: Daily janakantha, 22th December

রাঙ্গুনিয়ায় তৈরি হচ্ছে পাখিশালা

রাঙ্গুনিয়ায় তৈরি হচ্ছে পাখিশালা
- মুহাম্মদ সেলিম, রাঙ্গুনিয়া থেকে ফিরে
চট্টগ্রামে রাঙ্গুনিয়ায় নির্মিত হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম পাখিশালা 'শেখ রাসেল এভিয়ারি অ্যান্ড ইকো-পার্ক'। এ পাখিশালায় বিলুপ্ত হতে যাওয়া পাখি ও বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ সংরক্ষণ করা হবে।

কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরপাখির জগৎ সম্পর্কে ধারণা দিতে গড়ে তোলা হচ্ছে এই ইকো-পার্ক। প্রাণিজগৎ সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের গবেষণায় সহায়তার পাশাপাশি পর্যটকদের আকর্ষণ করতে এখানে বিভিন্ন ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। গতকাল পার্কটির নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। উদ্বোধনের পর প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পার্ক তৈরির মাধ্যমে এখানে পরিবেশের উন্নয়ন ঘটানো হবে। বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে পার্কটিতে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা রাখা হচ্ছে। এর মাধ্যমে রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সভাপতি পাখিবিশেষজ্ঞ মওদুদুল আলম বলেন, এখানে বিলুপ্ত হওয়া বিভিন্ন পাখি ও বৃক্ষ সংরক্ষণ করা হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় কোনো দেশে এভিয়ারি অ্যান্ড ইকো-পার্ক নেই। এশিয়ায় শুধু মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে এ পার্ক রয়েছে। এশিয়ার তৃতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এভিয়ারি পার্ক প্রতিষ্ঠা করছে। এ ধরনের পার্কে সাধারণত বিলুপ্ত হওয়া পাখি সংরক্ষণ করা হয়। সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, রাঙ্গুনিয়ার পাহাড় ও সমতলের ২১০ হেক্টর এলাকা জুড়ে পার্কটি গড়ে উঠছে। এটি তৈরিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ কোটি টাকা। এখানে বাবুই, হলদে পাখি, ইগল, শকুন, বুলবুলি, দোয়েল, শ্যামা, শালিক, ভিংবাজ, পেঁচা, টুনটুনি, টিয়া, ঘুঘু, মাছরাঙা, সাদা বকের মতো বিলুপ্তপ্রায় পাখিগুলো সংরক্ষণ করা হবে। প্রকল্প এলাকায় ভেষজ ও অন্যান্য বিলুপ্তপ্রায় ৭১ হাজার ৫০০ গাছ লাগানো হচ্ছে। এ ছাড়া রোপণ করা হচ্ছে ৩০ হাজার সৌন্দর্যবর্ধক গাছ। পাশাপাশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে থাকছে রেস্টহাউস, ঝুলন্ত সেতু, আধুনিক রেস্তোরাঁ, লেক, হেলানো বেঞ্চ, আরসিসি স্টিল ছাতা, ওয়াচ টাওয়ার এবং শিশুদের জন্য দোলনা ও স্লিপার। এ ছাড়া প্রকল্প এলাকায় থাকছে শেখ রাসেলের ম্যুরাল, হরিণ বিচরণক্ষেত্র ও কুমির প্রজননক্ষেত্র। এ বিষয়ে প্রকল্প কর্মকর্তা এস এম গোলাম মওলা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ পাহাড় ও বনজঙ্গল ধ্বংস করার ফলে পাখির অনেক প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। শেখ রাসেল এভিয়ারি অ্যান্ড ইকো-পার্কে বিলুপ্ত হওয়া বিভিন্ন প্রজাতির পাখি সংরক্ষণ করা হবে।
Source: Daily Bangladesh-Pratidin, 8th August

Friday, December 24, 2010

দিনাজপুরে পাখির অভয়ারণ্য গড়েছেন এক বীর মুক্তিযোদ্ধা

০০ মোঃ মতিউর রহমান, দিনাজপুর

জেলার ভাটিনায় একক আন্দোলনের ফসল হিসাবে গড়ে উঠেছে পাখির অভয়ারণ্য। বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসেমের প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠা অভয়ারণ্যে আছে অসংখ্য পাখি। ওই এলাকায় পাখি শিকার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। খোদ গ্রামবাসী এখন পাখি লালন-পালনে ব্যস্ত।

জেলা শহর থেকে ৫ কি. মি. পূর্ব দিকে সদর উপজেলার উত্তর ভাটিনা গ্রামে একাধিক বাঁশঝাড় এবং বড় বড় বৃক্ষের উপর গড়ে উঠেছে অপরূপ সৌন্দর্য্যমণ্ডিত পাখির অভয়ারণ্য। প্রতিদিন শিক্ষানুরাগীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের আগমন ঘটে এই পক্ষীশালায়। রং-বেরংয়ের নানা পাখি দেখা যায় সেখানে। সাদা-কালো-হলুদ বক, পানকৌড়ি, বেলে হাঁস, ডাহুক, রাতচোরা, ঘুঘু, চড়-ইসহ ৩০/৪০ প্রজাতির দেশীয় পাখিদের কলরব আর অঙ্গ ভঙ্গিমায় সৃষ্টি হয় এক অভূতপূর্ব পরিবেশ। পাখির এই মিলন মেলা আগত দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। দীর্ঘ এক যুগ আগে এই গ্রামটি পাখিদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়। আলোর ভুবন যুব সমবায় সমিতির তত্ত্বাবধানে এই অভয়ারণ্যের পাখির সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করা হয়। বীর-মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবুল হাসেম তালুকদার আন্তরিকভাবে এই দেখভালে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছেন। শীত মৌসুমে হাজার হাজার অতিথি পাখির আগমনে অভয়ারণ্য কলকাকলিতে মুখর হয়ে ওঠে।

আবুল হাসেম জানান, প্রায় ৪০ বছর পূর্বে আবাদী ফসলে কোন বিষ প্রয়োগ করা হতো না। আমরা বিষমুক্ত ফসল উৎপাদন করতাম এবং বিষমুক্ত খাদ্য খেত দেশবাসী। বর্তমান বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির যুগে ফসল উৎপাদনে প্রচুর পরিমাণ বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে কীটপতঙ্গ ধ্বংসের জন্য। সে কারণে দেশীয় প্রজাতির পাখি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। তাদের নিরাপদ আবাসস্থল না থাকার কারণে বংশবিস্তারে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়া কিছু লোভী মানুষ পাখি নিধন করে বংশবিস্তারে বাধা সৃষ্টি করছে। ফলে লাখো পাখি পালিয়ে গেছে পাশর্্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে।

পাখিদের অভয়ারণ্য তৈরি করে প্রজনন বৃদ্ধি করতে আবুল হাসেম তালুকদার দীর্ঘ এক যুগ পূর্বে এই আন্দোলন শুরু করেন। আন্দোলনের কর্মসূচি হিসাবে প্রায় ৫/৬ কি. মি. জুড়ে বিভিন্ন পুকুর ও খাল-বিলের পাশে বাঁশঝাড় লাগানো হয়েছে। কয়েক বছর পূর্বে ওইসব এলাকায় প্রায় ২ শতাধিক বটগাছ ও পাকুড় গাছ রোপণ করা হয়েছে। পাখিরা এই সব বাঁশঝাড় ও গাছগালার ফল খাবে ও আবাসস্থল সৃষ্টি করে অত্র অঞ্চলের ফসলাদি রক্ষা করবে। প্রকৃতির সাথে তাল মিলিয়ে বিষাক্ত কীটপতঙ্গ ধ্বংস করবে। ফলে ফসলাদির ক্ষতি কম হবে। জনগণ বিষমুক্ত খাদ্য খেতে পারবে। এই পাখিদের রক্ষার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। এ পরিপ্রেক্ষিতে দেড় বছর পূর্বে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে ম্যাজিস্ট্রেট সাদি ও ম্যাজিস্ট্রেট হেমন্ত রায়ের নেতৃত্বে একটি টিম ভাটিনায় পাখির অভয়ারণ্য জরিপ করেন। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিগত বছরে জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগ আবারও জরিপ করে। তবে সরকারিভাবে এ যাবৎ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। আবুল হাসেম জানান, সরকারি পদক্ষেপ না থাকলেও পাখির অভয়ারণ্য তৈরি করতে এলাকার জনগণ সচেতনভাবে এগিয়ে এসেছে। প্রকৃতপক্ষে পাখি নিধন ও গাছপালা কেটে ফেলার ব্যাপারে জনগণকে সচেতন করার জন্যই পাখির আবাসস্থল তৈরির কাজ শুরু করা হয়। তিনি বলেন, জ্যৈষ্ঠ থেকে শুরু করে ভাদ্র মাস পর্যন্ত ৩ বার এসব পাখি ৩০ থেকে ৪০ হাজার ছানার জন্ম দেয়। প্রকৃতির সাথে মিশে যায় এরা। নিজস্ব এলাকায় জমির ফসলাদি রক্ষার জন্য এসব পাখি কীটপতঙ্গ, পোকামাকড় ধ্বংস করে। তবে নিজস্ব এলাকার (আবাসস্থলের আশপাশের) পুকুর ও খাল-বিলের ক্ষতি করে না। এসব পাখি দূর-দূরান্ত থেকে তাদের আহার যোগাড় করে নিয়ে আসে। ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আগত পাখিরা একবার বাংলাদেশে আসলে আর ফিরে যেতে চায় না। তবে কোন কোন সময় আবাসস্থল না থাকার কারণে অসংখ্য পাখি ফিরে যায়। তিনি ভাটিনা অভয়ারণ্য এলাকাকে পাখির প্রজন্ম এলাকা হিসাবে উলেস্নখ করেন।
Source: Daily Ittefaq, 22th Nov.

Wednesday, December 22, 2010

Make a trip to Puthia bird village where bird and people adore together

It is far infrequent to locate such a place, both rural and urbane areas, where people are habituated to leave bed in the morning hearing tweeting of birds. It will be really amazing for you to visit such a village in Rajshahi and make a vacation with different flying creatures.

Birds and cattle are friends together

Birds and cattle are friends together here

In that village, sun shines or not, people begin their working, school goers march for learning, farmers step towards cropland and at dusk wrap up their day’s work by hearing colloquy and chirping of thousands of birds.

Not only in winter, but all the year round the village become abode of thousands of birds, both indigenous and migratory, those have made the pastoral village Pochamaria into a safe asylum.

The bird’s sanctuary attracts lots of bird lovers, from both home and abroad, at village Pochamaria Sanctuary, located some 35-kilometers northeast of Rajshahi city and 15 km West to Natore town.

Relax of birds

Its evening time, they were tired!

Villagers also bear profound belief on birds as ‘harbinger of good fortune’ despite tolerating annoyance of their [birds] damaging of ripened crops, fruits and leafs of trees.

Though their [bird’s] stupidity and nuisance embarrasses locals enormous and brings many sufferings when they take flight with meals, chicks and fish from wetlands.

The farmers, however, are the best beneficiaries from eco-friendly birds when the creature makes cropland free from harmful insects and crop-killing weeds by eating.

The bird friendly people decided using limited insect-repellents so that birds are not poisoned. This feeling of locals on birds is truly rare and unbelievable.

Sleeping bats

wow! guess what?

During fishing session one can see in the village ponds and water bodies that many fish-eating birds flocks here as ‘uninvited guests’ for appetizing fishes.

If you visit the village and notice entire scene, one could able to get a great test of life.

It’s also very much pleasing as at daytime hundreds of birds are seen collecting foodstuffs at nearby water bodies and wetlands at their own fashion. Birds moves at large during locals busy with their daily works like cultivating, fishing or working.

Country’s eminent ornithologists from different universities, foreign tourists, bird lovers like Japanese visitor Takuma Kurataki, Dubai Zoo Curator, Bangladesh Bird Club Founder president also eminent ornithologist Enam Ul Haque, Dr. Ali Raza Khan however, frequently visits the safe den.

Locals and foreigners are closely watching birds at Pochamaria

Locals and foreigners are closely watching birds at Pochamaria

In last March, local Bird Protection Club and Bangladesh Birds Club jointly organized a day long bird fair here to make aware locals about save bird and nature.

Surprisingly, bird-loving villagers have strictly prohibited hunting birds in 42 square kilometer area and declared the village a bird sanctuary.

Any nature lovers with their family members have a nice opportunity to blend with nature and have scope to spend a night with birds if they able to make a trip.

Within 50 minutes one can reach the village amazingly without help of any tourist guide as hundreds of aerial birds along with members of Bird club welcome visitors any season of year!

Children are performing on Bird's fair at Pochamaria

Children are performing on Bird's fair at Pochamaria

A good number of cheap-rated residential hotels are available both in Natore town and Rajshahi city for visitors.

The highway communication is very easy, inexpensive and smooth as both motorized and non-motorized vehicles are available from Puthia upazila headquarters (on the Rajshahi-Dhaka highway).

Beside visiting ‘Bird village’ visitor have scope to peep through nearby archeological and tourist spots like Puthia Jaminder Bari, Uttara Gana Bhaban at Natore town, Tahirpur Jaminder Bari, Rajshahi Barendra Research museum, Sadhonpur Disabled Rehabilitation Center. Those historical spots are surrounded by the bird village and distance of those places within 20 kms.

Chirping of bird attains tranquility in mind that makes alliance with people and real natural life taste.

Birds are playing

Birds are playing in a tree

One can witness many rare mixtures of birds like Oriental Magpie, Turtle Dove, Asian Koel, white and painted stork, herons and owls from very little range of vision.

Any way, visitors should not forget to carry binocular and digital zoomed camera during the trip otherwise one may miss enjoy dancing, feeding and swimming birds either on top of tree or wetlands. So try to avail the opportunity to discover the bird’s heaven at your yard!

Source: http://www.travel-bangladesh.net

Monday, December 13, 2010

Baikka Beel Bird Sanctuary


Baikka Beel Bird Sanctuary

Thousands of migratory birds in a wetland that can be reached by two hours trek, The scenic countryside is a bonus.

Explo History and Description:

Beel or wetlands are one special geographic feature of Bangladesh. You can consider a Beel to be a shallow natural lake. How shallow? 2 meters or less. Baikka Beel is a part of the Hail Haor, a vast wetland of almost 100 acres. Each year in winter, thousands of migratory birds fly from way north to make this wetland their home.

Highlights 1

The road that takes you to the Beel runs through scenic country side, typical rural area of Bangladesh.

Highlights 2

There is an observation tower at the beel, you can climb the tower to watch birds.

Highlights 3

Don't forget to bring your tele-lens if you are into wildlife / bird photography.

Highlights 4

You can hire a boat and get pretty close the flock of resting birds.

My experience and personal tips:

If you are planning to watch birds in the afternoon, start sufficiently early so that you can reach the Beel at about 3:00PM. In this way, you'll get plenty of time to watch and photograph birds.

How getting there:

Start from Srimongol town. Hire a CNG at station road, standard is 400taka for taking you to the Beel, waiting there for two hours while you watch birds and bringing you back to the town.

You can also drive your own vehicle. A 4WD Jeep or similar vehicle is suggested, the country road is not suitable for sedans. Take the road that goes to Moulovibazar. Drive for about 6 kilometers, you'll find a signboard that tells you to turn left from there to reach Baikka Beel. Now you are on country road and the road is marked with signboards, you can also ask the locals if needed.

You can also consider trekking/bicycle ride through the country. For trekking, you can take a bus. They will drop you at the point where you have to leave the highway and get on the country road. The trek to Baikka Beel will take 2hours or little more.

A tip to eat:

You can find some road side cafes on the way, but nothing to eat at the beel. Better take your own food if you think you'll get hungry.

A tip to sleep:

Don't stay overnight, no accommodation at the Beel. Nearest hotels are in Srimongol town.

Useful information:
Open hours:

Sunrise to sunset.

Best time to watch birds is early in the morning for two hours starting from sunrise and in the afternoon since two hours before the sunset.

Basically its open 24 hours, nobody will block your way if you want to climb the observation tower at 1:00AM in the morning. But that probably is not a good idea because the guards work only during their work shift.

Visit duration:

2 hours for bird watching.

Entry fees:

Climb observation tower : 05 taka
Boat ride half an hour : 20 taka
Boat ride one hour : 30 taka

Source: http://www.exploguide.com

Related Links:

অতিথি পাখির কলতানে মুখর বাইক্কা বিল

Nawabganj Bird Sanctuary, INDIA


The Nawabganj Bird Sanctuary is one of the most important bird sanctuaries located close to the Nawabganj town in the Unnao district of Uttar Pradesh. The sanctuary is known as the bird watcher's paradise in India. The sanctuary is located at a distance of 45 km from the highway connecting Kanpur and Lucknow. Rambling over an area of 2.246 sq. km, the place is beautifully lined with many different trees and shrubs. Both local as well as traveling birds are found in abundance in the sanctuary. The birds help a lot to maintain the biological equilibrium of the place. The migratory birds that flock the sanctuary come from all over the world including countries like Siberia, Europe, and Tibet etc.

Nawabganj Bird Sanctuary has about 250 species of drifting and local birds. The migrant birds can be seen between the months of November and February. The sanctuary also has a beautiful lake in its vicinity. Some of the birds that can be spotted easily in the sanctuary include Pintail, Red Crested Pochard, Common Teal, Mallard, Brahmini Duck, Greylag Goose, Cotton Teal, and gadwall, Shoveller, Coot and Wigeon.

Some of the colorful species of birds that can be seen in the Nawabganj Bird Sanctuary include Sarus Crane, Painted Stork, Stopwill, Black Ibis, Whistling Teal, Dabchick, White Ibis, White necked Stork, Spoon Bill, Open Billed Stork, Black Necked Stork, Purple Moorhen, Broze Winged Jacana, Pheasant Tailed jacana, White Breasted Water Hen, Moorhen, Cormorant Darter, Egret, and Pond Heron.

Some other birds making the Nawabganj Bird Sanctuary more vibrant include Lapwing, Koel, Hawk Eagle, Stone Curlew, Night Jar, Kingfisher, Dove, Tern Vulture, King Crow, Hoopoe, Drongo, Bee Eater, Muniya, Brain Fever Bird, Indian Roller, Parakeet, Finch, Comb Duck, Peacock, Babbler, Barbet and Pigeon.

You can also delight yourself by observing gaiety little fish like Sindhi, Saul, Katla, Kavai, and Mangur swimming in the lake. The sanctuary is also a dwelling place of numerous reptiles especially snakes. Viper, Rat snake, Water Snake, Krait and Cobra are some of the poisonous snakes that can be spotted at numerous places in the sanctuary. The Nawabganj Bird Sanctuary also has a deer park in its vicinity. Barking Deer and Spotted deer are the common species of deer found at the place. The verdant sanctuary offers enchanting and picturesque settings for the photographers. Nawabganj Bird Sanctuary has a number of comfortable and budget hotels for the convenience of the modest traveler. Small bistros and coffee bars available at the place add to the delight of tourists. The Nawabganj Bird Sanctuary is easily accessible as the railway station of Kusumbi lies just 2km from the place. This beautiful sanctuary is definitely a great place to spend your holiday.
Ask for Tour

Saturday, December 11, 2010

দক্ষিণ চট্টগ্রামের পর্যটন স্পটগুলো অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর

দক্ষিণ চট্টগ্রামের পর্যটন স্পটগুলো অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর

০০ লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা , ডিসেম্বর ০৮, ২০১০

দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারা, বাঁশখালী ও লোহাগাড়ার পর্যটন স্পট ও বনাঞ্চলে ভিনদেশী পাখি ভিড় জমিয়েছে। অতিথি পাখি দেখার জন্য প্রতিদিন পর্যটকরা স্পটে ভিড় জমাচ্ছে। এসব এলাকার পাহাড়ি অঞ্চলেও অতিথি পাখিরা ভিড় জমাচ্ছে। ইতিমধ্যে উত্তরাঞ্চলে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় চট্টগ্রামের এসব অঞ্চলে অতিথি পাখিরা ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম শহর থেকে ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে বাঁশখালী উপজেলার জলদী বনবিটের আওতাধীন বাঁশখালী ইকোপার্কটিতে পর্যটকদের পাশাপাশি অতিথি পাখিদের কল-কাকলিতে মুখরিত। ২০০৪ সালে বামের ছড়া ও ডানের ছড়া নিয়ে এ পার্কটির সৃষ্টি করা হয়। ইকোপার্কে আসা পর্যটক মোঃ সেলিম জানান, তিনি বহুবার এ ইকোপার্কে এসেছেন। কিন্তু এবারের শীতে বেশি অতিথি পাখির আগমন ঘটেছে, যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। অতিথি পাখিদের অবাধে বিচরণের জন্য ঝুলন্ত ব্রিজের মেরামত ও ইকোটু্যরিজম বৃদ্ধি করা দরকার বলে তিনি জানান। এছাড়া দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আসা-যাওয়ার সুবিধার্থে ইকোপার্কের রাস্তা সমপ্রসারণ ও গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থাও জরুরি বলে তিনি মনে করেন।

অপরদিকে, লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যেও অতিথি পাখিদের বিচরণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যতোই অভয়ারণ্যের ভিতরে যাওয়া যাবে, ততই গাছে-গাছে, পাহাড়ে ও বিলে ঝাঁকে ঝাঁকে রঙ-বেরঙের অতিথি পাখি। ৭ হাজার ৭৬৪ হেক্টর জায়গা নিয়ে গঠিত এ অভয়ারণ্য থেকে প্রতিনিয়ত গাছ নিধন হলেও এটি অতিথি পাখি বিচরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান। অন্যদিকে এশিয়ান হাতি প্রজননের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল এবং দেশের বিরল বিশাল বন এলাকা হিসেবে এ অভয়ারণ্যটির বেশ পরিচিতি রয়েছে।
Source: Daily Ittefaq

চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হতে পারে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র

০০লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা

জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ বনাঞ্চল এবং হাতি প্রজননের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য সম্ভাবনাময় প্রাকৃতিক অপরূপ লীলাভূমি। অভয়ারণ্যের উলেস্নখযোগ্য প্রাণী এশীয় হাতি ছাড়া বন্য শুকর, বানর, হনুমান, মায়া হরিণ, সাম্বারসহ ১৯ প্রজাতির স্তন্যপায়ী ও চার প্রজাতির উভচর প্রাণী, সাত প্রজাতির সরীসৃপ, ৫৩ প্রজাতির পাখি এবং ১০৭ প্রজাতির বৃক্ষরাজির সমন্বয়ে গঠিত বিশাল বনভূমি। বৃক্ষের সৌন্দর্যের সমন্বয়, উঁচু-নিচু পাহাড়ে সৃজিত বাগান আর বাগানে পাখিদের মিষ্টি সুরে মুখরিত অভয়ারণ্যটি হতে পারে একটি আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র। যা থেকে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা আয় করা সম্ভব।

সংশিস্নষ্ট বিভাগের তথ্য মতে, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এ বনাঞ্চল ও তার পাশর্্ববর্তী এলাকাসমূহ মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ স্থান ছিল। ১৯৮৬ সালে চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া, বাঁশখালী ও কক্সবাজার জেলার চকরিয়াসহ ৭টি সংরক্ষিত বনভূমি নিয়ে অভয়ারণ্যটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯২ সালে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের অধীনে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। বনাঞ্চল সুরক্ষা, বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল উন্নয়ন, শিক্ষা, গবেষণা ও চিত্ত বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টির জন্য ২০০৩ সালে এলাকায় চুনতি ও জলদী রেঞ্জের অধীনে ৭টি বিট অফিস স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে পর্যটকদের কাছে আরো আকর্ষণীয় করার জন্য অভয়ারণ্য এলাকায় বনপুকুর, প্রাকৃতিক গর্জন বনাঞ্চল, এশীয় বন্যহাতির অবাধে বিচরণ, গয়ালমারা প্রাকৃতিক হ্রদ, বনপুকুর ফুটট্রেইল, জাঙ্গালীয়া ফুটট্রেইল, পর্যটন টাওয়ার, গোলঘর, স্টুডেন্ট ডরমিটরি, নেচার কনজারভেশন সেন্টার, গবেষণা কেন্দ্র, ইকোকটেজসহ বিভিন্ন প্রতিবেশ পর্যটন বা ইকোটু্যরিজম স্থাপন করা হয়। সংরক্ষিত বন এলাকায় ভ্রমণের জন্য ৮ জন প্রশিক্ষিত টু্যরগাইড সার্বক্ষণিক নিয়োজিত আছে।

পর্যবেক্ষণ টাওয়ারের মাধ্যমে সহজে অভয়ারণ্যের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যসহ এশীয় হাতি ও অন্য বন্যপ্রাণীর এবং পাখির অবাধ বিচরণ উপভোগ করা যায়। চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতিস্থ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পশ্চিম পাশ্বর্ে অভয়ারণ্যের অবস্থান। অভয়ারণ্যের সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা জানান, এটিকে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ার জন্য ইকোটু্যরিজমের কিছু বিশেষ আকর্ষণ বিশেষ করে পর্যটন অবকাঠামো তৈরি করলে এটি দেশের অন্যতম ইকোপার্কে পরিণত হবে। ফলে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় হবে। এদিকে অভয়ারণ্যের বিশাল এলাকার প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য সমন্বিত রক্ষিত এলাকা সহ-ব্যবস্থাপনা (আইপ্যাক) ইউএসআইডি'র অর্থায়নে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। আইপ্যাকের সাইট ফ্যাসিলিটেটর মোঃ খাইরুজ্জামান জানান, ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে অচিরেই অভয়ারণ্যটি দেশের সম্ভাবনাময় প্রাকৃতিক পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে। সহজেই মনোরম পরিবেশে এ প্রাকৃতিক সৌন্দয্য উপভোগ করা যাবে। সহ-ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ইতিমধ্যে অভয়ারণ্যের জীববৈচিত্র্য বহুলাংশে উন্নয়ন করা হয়েছে। সামনে লেক ও বিশ্রামাগার করার পরিকল্পনা আছে। অভয়ারণ্যের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক রবীন্দ্রনাথ অধিকারী জানান, পর্যটকদের আকর্ষণীয় করার জন্য অভয়ারণ্যের ভিতরে আরো প্রাকৃতিক হ্রদ, রাস্তা-ঘাট, পর্যবেক্ষণ টাওয়ারসহ বিভিন্ন পর্যটন উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। জার্মানীর জেটিজেড'র অর্থায়নে আগামী পাঁচ বছরে প্রাকৃতিক বন সুরক্ষা ও বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনাসহ ইকোটু্যরিজমের কাজ হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিমল সিংহ জানান, চুনতি অভয়ারণ্যটি দক্ষিণ পূর্ব উপমহাদেশের জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ একটি বনাঞ্চল। এটিকে আধুনিক পর্যটনের সুবিধায় নিয়ে আসতে পারলে প্রকৃতি গবেষণাগারের সুবিধাসহ সরকারের প্রচুর রাজস্ব আয় হবে।
Source: Daily Ittefaq
চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারন্য এলাকা পর্যটন শিল্পের বিশাল সম্ভাবনাঃ

চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য অঞ্চলটি চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া ও বাঁশখালী উপজেলা এবং কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার মধ্যবর্তী সংযোগস্থলের নিবিড় পাহাড়ী এলাকায় বিস্তৃত বনভূমি নিয়ে গঠিত। চট্টগ্রাম শহর থেকে ৭০ কিঃ মি দক্ষিনে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পশ্চিম পার্শ্বে প্রাকৃতিক বনভূমির জীববৈচিত্র সমৃদ্ধ অঞ্চলটি নিয়ে চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারন্যের অবস্থান।

ক্ষয়িষ্ণু এ অঞ্চলের জীববৈচিত্র পূনরুদ্ধার, সুরক্ষা, বন্যপ্রানীর আবাসস্থল উন্নয়ন, শিক্ষা গবেষনা ও চিত্তবিনোদনের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৯৮৬ সালে ৭৭৬৪.০০ হেক্টর সংরক্ষিত বনভূমি নিয়ে এ অভয়ারন্যটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। উক্ত বনাঞ্চলের উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০০৩-০৪ অর্থ বছর থেকে এ পর্যন্ত ৪৬৫.০০ হেক্টর এলাকায় বাগান সৃজন করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বনায়ন কার্যক্রম চলছে। ২০০৯-১০ অর্থ বছরে ১৫০.০০ হেক্টর বনায়নের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তাছাড়া প্রকৃতি শিক্ষা কেন্দ্র-১টি, ষ্টুডেন্ট ডরমিটরী-১টি, এসিএফ বাংলো ও পার্ক অফিস-চুনতি সদরে ১টি,হারবাং বিটে -১টির উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত হয়েছে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে প্রস্তাবিত নিম্নবর্ণিত অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। ষ্টাফ ব্যারাক-১টি, পাবলিক টয়লেট-১টি, এইচবিবি সিসি রাস্তা-৩০০মিঃ

চুনতি অভয়ারণ্য এলাকায় পর্যটক সুবিধার জন্য নিম্নবর্ণিত প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রয়োজন। এটি বাস্তবায়িত হলে পর্যটকের ব্যাপক সমাগম হবে। একই সাথে রাজস্ব আরও বাড়বে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী হওয়ায় এ অভয়ারণ্যের পর্যটন সম্ভাবনা বিশাল।
১। প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে ঢোকার প্রবেশমুখে ১টি ডিজিটাল সাইনবোর্ড স্থাপন।
২। পার্কিং স্থানগুলোয় মাটিভরাট।
৩। পার্কিং এলাকার আশেপাশে বসার স্থান, গেষ্ট রুম, খাওয়া-দাওয়ার স্থান নির্মান।
৪। পর্যটকদের আকর্ষন বাড়ানোর জন্য বনের ৪০/৫০ একর জায়গা ঘিরা দিয়ে নীচু জায়গায় জলাশয় নির্মাণ করে উহার মধ্যে হরিন,সম্বর ইত্যাদির একটি প্রজননকেন্দ্র তৈরী করা।
৫। পর্যটকদের ঘুরে বেড়ানোর জন্য foot trail গুলোকে ইটের সলিং দ্বারা ৫র্ চওড়া রাস্তা তৈরী করা।
৬। কিছু দুর পর পর পাহাড়ের উপর উঁচু গোলঘর তৈরী করা যাতে পর্যটকগন মাঝে মাঝে বিশ্রাম নিতে পারে।
৭। অভয়ারন্যের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য তিনটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার (৮০-১০০)ফুট নির্মাণ করা।
৮। অভয়ারন্য এলাকায় ১০টি Water Body বা জলাশয়/লেক নির্মান করা।
৯। পর্যটকদের চিত্ত বিনোদনের জন্য বোটিং, ফিশিং, চলচিত্রের স্যুাটিং ইত্যাদির ব্যবস্থা করা
১০। বন্য পশু পাখীদের সংরক্ষন ও প্রজননের জন্য প্রাকৃতিক আবাসস্থল সংরক্ষন ও উন্নয়ন।
১১। চুনতি থেকে বাঁশখালী ইকোপার্ক পর্যন্ত ১টি Rope Way নির্মাণ করা।
১২। Tourist Hotel নির্মাণ করা।

চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারন্য অঞ্চলটি একটি বিস্তৃত পাহাড়ী বনভূমি বিধায় উহার ভূপ্রকৃতি ও অবস্থানের জন্য উহার দ্বারা পরিবেশগত এবং জলবায়ুর প্রভাব খুবই গুরুত্বপূর্ন।

Related Linls:

বিপদাপন্ন বাদামি ঘুরাল

জাবির জলাশয়ে অতিথি পাখি

জাবির জলাশয়ে অতিথি পাখি

০০মুকিমুল আহসান হিমেল

লাল শাপলা শোভিত জলাশয়ে রঙিন ডানায় ভর করে ভেসে বেড়াচ্ছে হাজার হাজার অতিথি পাখি। হঠাৎ করে নির্জনতা ভেঙ্গে কিচিরমিচির আওয়াজ তুলে এ সব পাখি ডানা মেলে উড়ে যাচ্ছে আকাশে। কখনো আবার নিজেদের উপস্থিতি জানান দেয়ার জন্য তারা গোটা আকাশ জুড়ে চক্রাকারে উড়ে বেড়াচ্ছে। কিছুক্ষণ পর পাখিগুলো জলাশয়ের পানিতে ধীর গতিতে ডানা ঝাপটে নামছে। শিশির ভেজা সকাল থেকে শুরু করে শেষ বিকাল পর্যন্ত পানিতে ডুবসাঁতার আর খুনসুটিতে মেতে উঠছে তারা। গত কয়েকদিন ধরে ঢাকার অদূরে সাভারের প্রাণী সম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি স্থানের জলাশয়ে সমাগম ঘটেছে হাজার হাজার অতিথি পাখির। মনোমুগ্ধকর এ দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থী ভিড় জমাচ্ছে। পাখিরাও মধুমাখা কণ্ঠে কিচিরমিচির আওয়াজে স্বাগত জানাচ্ছে দর্শনার্থীদের। এসকল শীতের অতিথি পাখির কলতানে মুখর হয়ে উঠেছে গোটা এলাকা।

প্রতিবছর শীতের শুরুতে উত্তরের সুদূর সাইবেরিয়া, হিমালয়সহ বিভিন্ন শীত প্রধান দেশের তীব্র শীতের হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে এদেশে আগমন ঘটে হাজার হাজার অতিথি পাখির। অন্যান্য বারের তুলনায় একটু দেরিতে হলেও শীতের অতিথিরা প্রকৃতির সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিতে হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে আমাদের দেশে এসেছে। বাংলাদেশের উত্তর অঞ্চলের বিভিন্ন বিল, হাওর অঞ্চল ও সাভারের এ জলাশয়গুলোতে শীতের অতিথিরা আসে। তাদের আগমনে প্রকৃতি নতুন সাজে সজ্জিত হয়। প্রাণ ফিরে পায় দেশের বিভিন্ন প্রাকৃতিক জলাশয়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকার এসকল জলাশয়ের তীরে প্রতিদিন সকাল থেকেই হাজার হাজার দর্শনার্থী ভিড় জমাতে শুরু করেন। শিশির ভেজা সকালে অতিথি পাখির নির্জনতা ভাঙ্গে দর্শনার্থীদের আসা যাওয়ায়। ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে পাখিরা সকালে জলাশয়ের পানিতে লাল শাপলার পাশে গিয়ে খুনসুটি আর ডুবসাঁতারে মেতে ওঠে। কোন কোনটি জলাশয়ের পানিতে গোসল করছে, কোনটি আবার নিজেদের মধ্যে খুনসুটি আর খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকে। কিছুক্ষণ পর দলবদ্ধ হয়ে কিচিরমিচির আওয়াজে ডানা ঝাপটে দীর্ঘক্ষণ আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে।

পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে, এ দেশে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর, নভেম্বর-জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি-এপ্রিল এই তিনটি পর্যায়ে অতিথি পাখিরা আসে। মূলত অক্টোবরের শেষ ও নভেম্বরের প্রথম দিকেই এরা বাংলাদেশে আসে। আবার মার্চের শেষ দিকে প্রকৃতিতে গরমের ছোঁয়া লাগতেই ফিরে যায় আপন ঠিকানায়। এদেশে যে সকল প্রজাতির অতিথি পাখি আসে তার মধ্যে ২৫ প্রজাতির হাঁস ও ৫০ প্রজাতির সৈকত পাখি রয়েছে।

পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক জানান, এদেশে আসা অতিথি পাখির মধ্যেও আবার দুইটি ধরন রয়েছে। এর মধ্যে এক ধরনের পাখি শীতে বাংলাদেশে আসে গ্রীষ্মে ফিরে যায়। অন্য জাতের পাখিরা গ্রীষ্মে আসে শীতে ফিরে যায়। এ জাতের পাখিরা মূলত এদেশের বনাঞ্চলেই বেশির ভাগ সময় থাকে। আর জলাশয়গুলোকে যে পাখি দেখা যায় সেগুলোকেই শীতের অতিথি পাখি হিসাবে সকলেই জানে। এছাড়া আর এক জাত রয়েছে যারা মূলত বিদেশী পাখি কিন্তু আমাদের দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করার কারণে তাদের অতিথি পাখি বলা হয় না।'
Source: Daily Ittefaq:26th December

জা হা ঙ্গী র ন গ র বি শ্ব বি দ্যা ল য় : অতিথির সংখ্যা কমছে

এম আরিফুর রহমান
হঠাত্ কারও বাসায় অতিথি এলে মেজবানের অবস্থাটা কেমন হয়? বাসায় তোড়জোড় পড়ে যায় আপ্যায়ন নিয়ে। প্রস্তুতি না থাকায় মনের মতো করে আতিথেয়তাও করা যায় না। কিন্তু মেহমান আসার বিষয়টি যদি আগে থেকেই জানা থাকে তাহলে তো কথাই নেই। মেহমানের পছন্দ অনুযায়ী নানা প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়। কীভাবে তাকে খুশি করা যায় তা নিয়ে মোটামুটি মেজবানের ঘুম হারাম। অতিথি নিয়ে বছরে একবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারে ঠিক এরকম ঘটনাই ঘটে।
অতিথি আসার সময়টা পরিবারের সবার জানা। শীতের শুরুতে অতিথিরা আসছে। তাও আবার কাছের কেউ নয়। সুদূর সাইবেরিয়া থেকে আসছে। তাই শীত পড়ার আগে থেকেই শুরু হয় ক্যাম্পাসবাসীর প্রস্তুতি। অতিথি বরণে চলতে থাকে নানান আয়োজন। অতিথিরা কোথায় থাকবে, কীভাবে থাকবে তা নিয়ে ব্যস্ত কেউ কেউ। কেউবা আবার তাদের খাবার নিয়ে চিন্তিত। কীভাবে সন্ধ্যা নামার আগ পর্যন্ত আড্ডা দিয়ে অতিথিদের সঙ্গে সময় পার করবে সে পরিকল্পনা আঁটছেন জাবি পরিবারের ছোট এবং তরুণ সদস্যরা। অতিথিদের থাকা ও খাবারের চিন্তা থাকবেই বা না কেন, তারা তো দু’চারদিনের মেহমান নয়। চার-চারটি মাস ক্যাম্পাসে অবস্থান করবে তারা। অতিথিরা সবাই আবার একই প্রজাতির নয়। তাদের মধ্যে রয়েছে নানান বৈচিত্র্য। এরকম ৩০-৩৫ প্রজাতির অতিথি পাখির সমাগম ঘটে জাবিতে। তাদের নামেও রয়েছে ভিন্নতা। অতিথির আগমনকে উপলক্ষ করে ক্যাম্পাসে বসে ঐতিহ্যবাহী পাখি মেলা। মেলার মাধ্যমে অতিথিদের নামসহ চিনে রাখার সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না পাখিপ্রেমিকরা। সেই চমত্কার নামগুলো না বললেই নয়। সরালি, খন্জনা, পাতিতারা, নোনা জ্যোত্স্না, গয়ার, ধুপানি, লালমুড়ি, বাড়িঘোরা, হুডহুড—এরকম আরও কত নাম।
এখন নভেম্বর মাস। শীত পড়া সবে শুরু। প্রতি বছরের মতো এবারও জাবিতে অতিথি পাখিদের জন্য চলছে নানান প্রস্তুতি। সাধারণত পাখিরা নভেম্বরের শুরুর দিকে আসে এবং মার্চের শেষের দিকে আপন নীড়ে ফিরে যায়। এরই মধ্যে তাদের থাকা এবং খাবারের প্রস্তুতি সম্পন্ন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ১৩টি লেক রয়েছে। এর মধ্যে ৪টিতে পাখি বসে। লেকগুলোর কচুরিপানা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। অতিরিক্ত মাছ ধরে ফেলা হচ্ছে। সব মিলিয়ে তাদের থাকা ও খাবারের প্রস্তুতিটা ভালোই মনে হলো।
বরাবরের মতো পাখিদের নিরাপত্তা নিয়ে সুধী মহল এখনও শঙ্কিত। পরদেশে বেড়াতে এসে নিশ্চিন্তে তারা দেশে ফিরতে পারবে তো? কারণ একটি স্বার্থান্বেষী মহল আতিথেয়তার বদলে অতিথি পাখি শিকারে মেতে ওঠে। লেকের চারপাশের কাঁটাতারের বেড়াগুলো মেরামত করা হয়নি, সেগুলো এখনও ভাঙা। আবার অতিথিদের যারা আড্ডা দিয়ে সময় দেবেন, তাদেরও বসার কোনো ভালো ব্যবস্থা নেই। লেকের পাড়ের বেঞ্চগুলো ভেঙে গেছে, কিছু অংশ আবার চুরি হয়ে গেছে। এসব সমস্যার আশু প্রতিকার জরুরি।
অন্য সদস্যরা অতিথি নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও জাবি পরিবারের কর্তাব্যক্তিরা কতটুকু অতিথিপরায়ণ এবং পরিবেশ সচেতন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ প্রতি বছর অতিথি পাখির সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে ব্যর্থতাই এজন্য দায়ী। অতিথি পাখি আমাদের জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাদের উপযুক্ত আতিথেয়তা প্রদান করা আমাদের নিজেদের পরিবেশ রক্ষার জন্যই জরুরি। তবে জাবি পরিবারের আতিথেয়তা বেড়েছে না কমেছে, তা আর কিছুদিন পরেই বোঝা যাবে।
Source: Daily Amardesh

Related Links:

পাখির অভয়ারণ্য জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়

Friday, December 10, 2010

কড়াই বিলে শীতের পাখি

কড়াই বিলে শীতের পাখিঅতিথি পাখিদের কলতান ও জলকেলিতে মুখরিত মনোমুঙ্কর দৃশ্য আকৃষ্ট করছে কড়াই বিল ভ্রমণপিয়াসীদের। সুদূর সাইবেরিয়াসহ শীতপ্রধান দেশ থেকে এসব অতিথি পাখি এসেছে। এসব পাখির মধ্যে রয়েছে বালিহাঁস, পানকৌড়ি, সরালিসহ বিভিন্ন জাতের পাখি। বিলের গাছপালাসহ জলাশয়ে বিভিন্ন জাতের অতিথি পাখির কিচির-মিচির শব্দে এলাকা মুখরিত। কিন্তু এবার শীতে পাখির আগমন কম হলেও থেমে নেই প্রতিদিন প্রকৃতিপ্রেমী নারী-পুরুষসহ নানা বয়সের দর্শনার্থীদের আগমন। বিলের পাড়ের ছায়াঘেরা পরিবেশে শীত উপেক্ষা করেও অতিথি পাখির উড়াউড়ি, কিচির-মিচির শব্দ ও জলকেলির দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হয় ভ্রমণপিয়াসীরা। বিলের চারপাশে বিভিন্ন ধরনের সবুজ গাছ-গাছালি রয়েছে। ওই বিলের পাড় দিয়ে যেতে চোখে পড়বে পাড়ের পাশে সারিবদ্ধ টুল-চেয়ার। এগুলোতে বসে পর্যটকরা কড়াই বিলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করে। এছাড়া বিলের পাড় দিয়ে যেতে যেতে দেখতে পাবেন টমেটো, কুমড়া, ধনেপাতা ও নানা ধরনের ঔষধি ও ফুলগাছ। দিনাজপুর জেলাশহর থেকে ৮ কি.মি. পশ্চিমে বিরল উপজেলা। আর বিরলের মাত্র ১ কিলোমিটার পশ্চিমে নাড়াবাড়ি বোর্ড সংলগ্ন হুসনা গ্রামের নিরিবিলি পরিবেশে অবস্থিত বিরলের মুক্তিযোদ্ধা সমিতির কড়াই বিল। কড়াই বিলজুড়ে রয়েছে প্রাকৃতিক দৃশ্য চোখে পড়ার মতো। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাবলম্বী করার ক্ষেত্রে অবদান রাখায় ইতোমধ্যে বিলটি সরকার কর্তৃক বিশেষ মর্যাদা লাভ করেছে। কড়াই বিলের মূল জলাশয় বিলের পাড়সহ ১৮ একর। এছাড়া পাশেই রয়েছে প্রায় ৫৬ একর খাস আবাদি জমি। পুরো সম্পত্তিই স্বাধীনতা-পরবর্তী সরকার কড়াই বিল সমবায় সমিতিকে দান করেছে। উল্লেখ্য, ১৯৭৪ সালের ১৬ এপ্রিল এটি তৎকালীন সরকার বিরল থানা মুক্তিযোদ্ধাদের রেজিস্ট্রি করে দেয়। তারা বিরল থানা মুক্তিযোদ্ধা সমবায় সমিতি লিমিটেড গঠন করে দর্শনীয় স্থান কড়াই বিল প্রকল্প তৈরি করেছে। বিরল থানার মুক্তিযোদ্ধা সমবায় সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম (অরু) ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল রহমান আলী। মোট ১৫০ জন এ সমিতির সদস্য এবং তারাই কড়াই বিল পরিচালনা করেন। শিশু, আকাশমনি, দেশি কড়াই, আমলকী, মেহগনি, আম, কাঁঠাল, জাম, বেল সব মিলিয়ে ১ হাজার ৫০০ গাছ রয়েছে। এখানে গেস্ট হাউস নির্মাণের কাজ চলছে।
- রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর থেকে
Daily Bangladesh Pratidin, 26-01-2011

উড়ে আসে পাখি

উড়ে আসে পাখিওরা আসে দূরদেশ থেকে। জলাশয়গুলো রাঙিয়ে দেয়। দল বেঁধে ঘুরতে, উড়তে, নাচতে পছন্দ করে। সারা দিন বসে থাকা যায় ওদের টানে। এবারের অন্য কোনোখানে তাই অতিথি পাখির বসতি নিয়ে। ছবি : সৈয়দ জাকির হোসেন
হালতি বিল ও চলন বিল নাটোর
নলকাক, সল্লী, নাড়ালসহ আরো অনেক পাখি আসে হালতি ও চলন বিলে। বালিহাঁস তো আছেই। পাখিগুলোর প্রিয় খাবার ছোট মাছ ও শামুক। নভেম্বর মাসের শুরুতে আসে তারা। হালতি বিলের টেঙ্গরগাড়ী, ভেদরগাড়ী ও ডাঙ্গা বিল পাখির জন্য বিখ্যাত। চলন বিলের সিংড়া উপজেলার বেসানীর খাঁড়ি, তিসিগালির বিল ও কাউয়াটিকড়ি এবং গুরুদাসপুর উপজেলার বিলসা, রুহাই প্রভৃতি পাখি দেখার জন্য ভালো। তবে নির্বিচার শিকারের কারণে পাখি কমে আসছে কয়েক বছর ধরে। হালতি বিলে যেতে নাটোর শহরের রসুলের মোড় থেকে পাটুল গ্রামে যেতে হবে রিকশাভ্যানে। এরপর পাটুল নদ পার হয়ে টেঙ্গর বিল। চলন বিলের বেসানীর খাঁড়ি যেতে সিংড়া উপজেলা সদর থেকে মোটরসাইকেলে ছয় কিলোমিটার যেতে হয়। রেজাউল করিম রেজা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাভার, ঢাকা
ডেইরি ফার্ম গেট দিয়ে ঢুকে সমাজবিজ্ঞান অনুষদ ও অমর একুশে পার হলে শহীদ মিনার। আরেকটু পরে প্রশাসনিক ভবন। ভবনের পশ্চিম ও উত্তর দিকের দুটি লেকেই নেমেছে পাখি। পশ্চিম লেকের পাড়ে বেঞ্চ পাতা। দর্শনার্থীরা তাতে বসে পাখি দেখতে পারে। পাখিগুলোর কোনোটির নাম সরালি, কোনোটির নাম গার্গেনি। আরো আছে চটক, পাতারি, মানিকজোড়, খঞ্জনা প্রভৃতি। উত্তরের লেকটি জাহানারা ইমাম ও প্রীতিলতা হল ছুঁয়েছে। পাখিদের কলকাকলিতে এটাও মুখরিত। এখানকার বারোমেসে শাপলা আর পদ্মপাতার ফাঁকে ফাঁকে নাচতে থাকে পাখিরা। তবে পাখি দেখার নীরব লেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনের কাছে। এ বছর প্রথম পাখি এসেছে ওখানেই। ঢাকার ফার্মগেট থেকে হানিফ, সুপারসহ আরো কিছু পরিবহনের বাসে জাহাঙ্গীরনগর যাওয়া যায়। ভাড়া ৩৫ টাকা। সময় লাগে দেড় ঘণ্টা। মেহেদী উল্লাহ
কেন্দুয়া-কোদালিয়া বিল
মোল্লাহাট, বাগেরহাট
বিলটি প্রায় এক লাখ হেক্টরের। খুলনা-ঢাকা মহাসড়ক গেছে বিলের মাঝখান দিয়ে। বিলে এ বছর ডুংকোর, বুরে, কালকুচ, কাম, বালিহাঁসসহ অনেক পাখি এসেছে। বিলের একপাশে সদর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়ন, ফকিরহাটের মূলঘর-নলধামৌভোগ ও ফলতিতা এলাকা। তবে বিলটি মোল্লাহাট উপজেলার অন্তর্ভুক্ত। চোরা শিকারিদের তাণ্ডবে পাখিরা স্বস্তিতে নেই। বাখরগঞ্জ, বারাশিয়া ও ডুমুরিয়া বাজারে দেদার অতিথি পাখি বিক্রি হয়।
ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে আরা, দোলাসহ আরো কিছু পরিবহনের বাসে মাওয়া হয়ে সরাসরি কেন্দুয়া-কোদালিয়া বিলে যাওয়া যায়। ভাড়া ২৫০ টাকা। সুনীল দাস
কাট্টলি বিল রাঙামাটি
পার্বত্য শহর রাঙামাটিকে তিন পাশ থেকে ঘিরে আছে ৩৫৬ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ কৃত্রিম হ্রদ কাপ্তাই। শীতকালে হ্রদের বুকে রংবেরঙের পাখির মেলা বসে। হ্রদ ধরে কাপ্তাই সদরের দিকে যেতে প্রচুর পাখি দেখা যায়। আবার রাঙামাটি থেকে সুভলং পেরিয়ে কাট্টলি যাওয়ার পর কাট্টলি থেকে ফেরেরমুখ বিশাল হ্রদের অংশটি, যেখানে হ্রদের প্রস্থ প্রায় ১০ কিলোমিটার, সেখানটা পাখির স্বর্গরাজ্য। রাঙামাটি থেকে লংগদুগামী যাত্রীবাহী লঞ্চে কাট্টলি যাওয়া যায়। ভাড়া ৬০ টাকা। সময় লাগে আড়াই ঘণ্টা। ফজলে এলাহী
টাঙ্গুয়ার হাওর তাহিরপুর, সুনামগঞ্জ
রামকুড়া, এশিয়ান কোয়েলসহ ২০৮ প্রজাতির পাখি পাওয়া যায় টাঙ্গুয়ার হাওরে। ১১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ৭ কিলোমিটার প্রস্থের মধ্যে ৫১টি বিলের সমন্বয়ে হাওরটি দেশের মাদার ফিশারিজ হিসেবে খ্যাত। হাওরপারের ৮৮টি গ্রামে ৫৬ হাজার মানুষের বাস। রুপাবই, বেরবেরিয়া, পালই, বউন্না, সমসা, রৌয়া, নোহাল, মহিষেরগাথা, হাতিরগাথা ও তেখুনিয়া বিলে অতিথি পাখি বেশি। মাছ ও জলজ উদ্ভিদ পাখিদের আহার। সারা দিন বিলে বেড়িয়ে রাতে হিজল-করচের গাছে বিশ্রাম নেয় এসব পাখি।
ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে সুনামগঞ্জে যাওয়ার বাস আছে। ভাড়া ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। সুনামগঞ্জ থেকে নৌকায় অথবা মোটরসাইকেলে যেতে হয় টাঙ্গুয়ার হাওরে। শহরের তেঘরিয়া সাহেববাড়ির ঘাট থেকে নৌকা ভাড়া করতে হয়। দুই দিনের জন্য ভাড়া তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা। তাহিরপুর উপজেলার ডাকবাংলোতে থাকা যায়। সাজ্জাদ হোসেন
চর কুকরি-মুকরি ভোলা
২৮ প্রজাতির জলচরসহ প্রায় ৫০ প্রজাতির পাখি আশ্রয় নেয় ভোলার চরাঞ্চলে। ডিসেম্বর আর জানুয়ারি মাসে বেশি পাখি থাকে। সদর উপজেলার মাঝেরচর, মেদুয়া, রামদাসপুর, মদনপুরা ও চরউড়িলসংলগ্ন কেওড়াবন, চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর, চরকচুয়াখালী, চরকুকরি-মুকরি, চররামনেওয়াজ, বুড়া গৌরাঙ্গচর, চর-অহিলউদ্দিন, চরজহিরউদ্দিন, কলাতলীর চর, চরনিজাম ও রামদাসপুর পাখির জন্য বিখ্যাত। এসব চরাঞ্চলে বন বিভাগের চারটি রেঞ্জ এবং তিনটি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র আছে। চরাঞ্চলকে ঘিরে প্রশাসনের নিরাপত্তাবেষ্টনী থাকা সত্ত্বেও প্রতিবছর শিকারিরা অতিথি পাখির ওপর হামলা চালায়। রাজমণি হাঁস, সরালি, বালিহাঁস, বেয়ারের হাঁস, খোঁপা হাঁস, চা পাখি, গুলিন্দা, চ্যাগা, পিয়ং হাঁস, রাজহাঁস, জিরিয়া, হট-টি-টি প্রভৃতি জলচর অতিথি পাখি মেলে এখানে।
ঢাকার সদরঘাট থেকে সন্ধ্যায় ভোলার লঞ্চ ছাড়ে। ভোলার সদরঘাট থেকে রিকশায় বাসস্ট্যান্ডে যেতে ভাড়া লাগে ২০ টাকা। বাসে করে চরফ্যাশন উপজেলায় যেতে সময় লাগে আড়াই ঘণ্টা। ভাড়া ৬৫ টাকা। সেখান থেকে আরেকটি বাসে কচ্ছপিয়া যেতে সময় লাগে এক ঘণ্টা। কচ্ছপিয়া থেকে ট্রলারে করে ওই সব চরে যেতে হয়। শিমুল চৌধুরী
বাইক্কা বিল শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার
শ্রীমঙ্গল শহর থেকে মাত্র ১৮ কিলোমিটারের পথ। বাইক্কা বিল দেশের অন্যতম মৎস্য অভয়াশ্রম। হাইল-হাওরে এর অবস্থান। আয়তন ১০০ হেক্টর। পাখিপ্রেমীদের জন্য সম্প্রতি এখানে একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে। এটি দ্বিতল। পাখি ও মাছ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য আছে এখানে। অতিথি পাখিরা কোন পথ ধরে আমাদের দেশে আসে, তারও বর্ণনা আছে। টাওয়ারে বসে দূরের পাখি কিংবা জলজ সম্পদ দেখার জন্য আছে বাইনোকুলার ও টেলিস্কোপ। গিরিয়া, ল্যাঞ্জা, মরচেরং ভূতিহাঁসসহ অনেক রকম হাঁস আছে এই বিলে। দলপিপি, নেউপিপি, কালোমাথা কাস্তেচরা আছে।
বিশ্বব্যাপী বিপন্ন পালাসী কুড়া ঈগল এই বিলে ফিরে এসেছে। ঈগলের বিশ্রাম ও বাসা তৈরির জন্য বিলে চারটি উঁচু প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে। বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন
নিলুয়ার বিল দৌলতপুর, মানিকগঞ্জ
মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত নিলুয়ার বিলে পাখি থাকে। বিলটি মানিকগঞ্জের দৌলতপুর ও ঘিওর উপজেলার মাঝখানে নিলুয়া গ্রামে অবস্থিত।একসময় এটি অনেক বড় ছিল। এখন ভরাট হতে হতে ছোট হয়ে গেছে। ঢাকার গাবতলী থেকে বাসে সরাসরি নিলুয়ার বিলে যাওয়া যায়। সময় লাগে আড়াই ঘণ্টা।
সাবি্বরুল ইসলাম সাবু
Source: Dailykalerkantho

রাজধানীতে পাখির মেলা

রাজধানীতে পাখির মেলা

০০ রফিকুল বাসার

পাখির কাকলিতে মুখর সারা দিন। কার গান শুনি, কাকে রেখে কাকে দেখি। লাল নীল সবুজ রঙধনুর সব রঙ নিয়ে বাহারি পাখির মেলা। কারো মাথায় ঝুটি। কারো ইয়া লম্বা লেজ। কেউ খাঁচায়। কারো পায়ে শিকল। কেউ বা আবার দর্শনাথর্ীদের হাতে বসে পিট পিট করে তাকাচ্ছে।

এমনই হরেক রকম বিদেশি পাখির মেলা বসেছে জাতীয় প্রেসক্লাবে। প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে আয়োজন করা হয়েছে এই পাখি প্রদর্শনীর। আয়োজক বাংলাদেশ এক্সোটিক বার্ড ব্রিডার্স এসোসিয়েশন। শুরু হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার (9th Dec, 2010)। শেষ হবে আজ। পাখি দেখা যাবে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।

মাথায় হলদে ঝুটি, দুধ সাদা তাকাতুয়ার পায়ে শিকল। দাঁড়ের উপর বসে আছে চুপচাপ। যেন গভীর চিন্তায় মগ্ন। কাকাতুয়ার পাশেই রয়েছে ম্যাকাও, গ্রে প্যারট। এরা কাকাতুয়ার জাতি। 'কথা বলা', পাখি হিসাবে গ্রে প্যারটের নাম-ডাক সবচেয়ে বেশি। ম্যাকাও প্রায় দুই ফুট লম্বা পাখি। আছে বাজরিগার। বাজরিগার এসেছে অস্ট্রেলিয়া থেকে। অস্ট্রেলিয়ায় এই পাখিকে সবাই চেনে প্যারাকিট নামে। যেকোন পরিবেশে সহজে খাপ খাইয়ে নিতে পারে সে। সাত ইঞ্চি দৈর্ঘ্যর এই পাখি খাঁচায় পোষা যায়। পুরো বুকটা সবুজে হলুদে মাখাপাখি। ঘাড়ের কাছে কালো হলুদ। লাভ বার্ডের রঙটাও ভারি মন কেড়ে নেয়। বেশ কয়েক রঙের লাভবার্ড আছে। হলুদ লাল বেগুনি। আফ্রিকা অঞ্চলের এই পাখির দৈর্ঘ্য সাড়ে ৫ ইঞ্চি। পিঠের দিকটা সবুজ। বুক হলুদ, ঠোঁট লাল। প্যারোটলেট বা ফরপাস অনেকটা লাভবার্ডের মতো। আয়তনে আমাদের চড়-ই পাখির মতো। পাওয়া যায় ভেনেজুয়েলা, পানামা, কলম্বিয়া ও পেরু অঞ্চলে। এরা ১০/১৫ বছর বাঁচে।

মাথায় তাজ বা মুকুট পরে মেজাজি চোখে তাকিয়ে আছে ককাটেল। এটি শান্তিপ্রিয় পাখি তোতাপাখি জাতের। মাথায় পালক থাকায় অনেকে একে ছোট কাকাতুয়া বলে। গ্রে বা ধূসর এর রঙ। এছাড়াও আছে সাদা, পার্ল, হলুদ ও পাইড। ইউরোপে এর বাস হলেও অন্যান্য এলাকাতেও পাওয়া যায়। জাভা চড়-ই মাথা উঁচু করে থাকলে মনে হবে যেন পেঙ্গুইনের মতো তাকিয়ে আছে। ছোট ঠোঁটের এই পাখি খুব সতর্ক। গোলাপি ঠোঁট, চোখ কালো, চোখের পাশে লাল বৃত্ত। স্পেনডিড প্যারাকিট দেখতে অনেকটা টিয়ার মতো। অস্ট্রেলিয়ার এই পাখির লেজ অনেক লম্বা। হলুদ-লালের এমন মিশ্রণ চোখকে স্থির করে দেবে। চোখ ধাঁধানো সুন্দর রঙের মিলন সোনালি আভা রোজেলা পাখির পালকে। প্রতিটি রঙই গাঢ়। পালক জুড়ে সোনালি আভা। দু'টি ডানার ধারে হলুদ রঙের ছোপ। শরীরের পেছনে কালো ফিতের মতো লম্বা দাগ। তার নিচে সোনালি হলুদ। লেজের নিচে নীলচে হলুদ। তলপেটে লাল আভা।

আরো আছে কাকারিকি, ক্যানারি, স্প্যাঞ্জেল বাজরিগার, গোল্ডিয়েন ফিঞ্চ, লোরি, ডায়মন্ড ডোভ বা ঘুঘু, লাফিং ডোভ ইত্যাদি। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০০ পাখি প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে।

বাসায় পোষার জন্য এসব পাখি উপযোগী বলে জানালেন আয়োজকরা। বড় আকারের ম্যাকাও কিনতে গেলে লাগবে এক লাখ টাকা। এর পায়ে সব সময় থাকবে শিকল। রোজেলা কিনতে গেলে লাগবে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। লাভবার্ডের দাম ৩ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা। বাজরিগার ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা।

চবি ক্যাম্পাস : শীত এসেছে অতিথি পাখি আসেনি

চবি ক্যাম্পাস : শীত এসেছে অতিথি পাখি আসেনি রাজীব নন্দী শীতের কুয়াশা ভেদ করে সুন্দর 'আবাবিল', ভোরের আলোতে চঞ্চল 'সাদামাটানাকুটি' আর পড়ন্ত বিকেলের দুরন্ত 'সুঁইচোরা'- এখন কেবলই স্মৃতি। গত চার বছর আগেও স্থানটি ছিল পাখিবৈচিত্র্যের সমাহার। আজ সেই তেরশ' একরের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যেন 'নিঝুমপুরী'! অথচ দেশের অন্য সবকটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই ক্যাম্পাস ছিল পাখিবৈচিত্র্যে অনন্য।
সর্বশেষ ১৯৯৯ সালে হওয়া পাখি শুমারির পর আর কোন শুমারি হয়নি এখানে। তবে ব্যক্তিগত গবেষণা ও সংশ্লিষ্টদের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে যে, পাখির নিরাপদ আবাস হয়ে উঠতে পারেনি এই ক্যাম্পাস। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না থাকা, সচেতনতার অভাব আর বিদেশি গাছ রোপণের ফলে ক্যাম্পাস এলাকা পাখি বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে সংশ্লিষ্টরা আগামী জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহকে পাখি শুমারি করার দাবি জানিয়েছেন ।
প্রাণিবিদ্যা বিভাগের এক জরিপ মতে এই ক্যাম্পাসে মোট ১৫০ প্রজাতির পাখির বসতি! যার অন্তত আশি প্রজাতি দেশীয়। বর্তমানে এই সংখ্যাটি কত জানতে চাইলে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. গাজী সৈয়দ আসমত কালের কণ্ঠকে বলেন, 'শীতের অতিথি পাখিদের নিয়ে শুমারি কিংবা দেশীয় পাখিদের নিয়ে কোন জরিপ না হওয়ায় সংখ্যাটা বলা মুশকিল। তবে পাখির সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক কমেছে। অথচ তিন পার্বত্যাঞ্চল কিংবা সুন্দরবনেও এত প্রজাতির পাখি ছিল না ।'
প্রাণিবিদ্যা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর আগেও ক্যাম্পাসের কাটা পাহাড়ে ছিল ৫০ প্রজাতির পাখি। সবুজ পাহাড়ের গায়ে ছোট ছোট খোপ করে বাসা বুনতো 'সাদামাটানাকুটি'। আর 'সুঁইচোরা'র ঝাঁক চোখে পড়তো ক্যাম্পাসের শহীদমিনারের পেছনের এলাকা, উদ্ভিদ উদ্যান ও ফরেস্ট্রি ইনস্টিটিউট এলাকায়। সারাক্যাম্পাসজুড়ে ছিল মথুরা, মাছরাঙ্গা, জংলি মুরগী, চড়ই, শালিক আর ময়নার কলকাকলি। কিন্তু এখন এই পাখিগুলো খুব একটা চোখে পড়ে না। এক পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গত চার বছরে ক্যাম্পাসে আসছে না আবাবিল, চেস্টনাট, জলপিপি পাখিও।
সরেজমিন পরির্দশনে দেখা গেছে, ক্যাম্পাসের কাটাপাহাড়, ফরেস্টি ইনস্টিটিউটের সংরক্ষিত এলাকা, ছাত্র হলসংলগ্ন এলাকায় গত চার বছর ধরে লাগানো হয়েছে এ্যাকাশিয়া আর ইউকেলিপটাস প্রজাতির গাছ। দ্রুত বর্ধনশীল হলেও এসব গাছ অধিক পানি শোষণ করে। ফলে অন্য কোন গাছ এর পাশে বেড়ে উঠতে পারে না। দেশীয় পাখিরাও এসব গাছে বাসা বাধে না। অধ্যাপক সৈয়দ আসমত বলেন, 'ক্যাম্পাস 'ইন্দো বার্মা হট স্পট' এলাকায় হওয়ায় প্রাণীবৈচিত্র্যের সম্ভাবনা বেশি । কিন্তু বিদেশি প্রজাতির গাছের কারণে পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে । বেশি করে দেশি গাছ লাগানোর মাধ্যমে পাখির নিরাপদ আশ্রয়স্থল গড়ে তুলতে হবে। পাখি সপ্তাহ এবং পাখি উৎসব করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রাণিবিদ্যা বিভাগকে দায়িত্ব দিলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তা আন্তরিকতার সাথেই পালন করবে।'
প্রাণীবৈচিত্র্য বিষয়ক গবেষক ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের একজন সাবেক শিক্ষার্থী সাজিদ আলী হাওলাদার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'তিন বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয় বার্ড ক্লাব গঠিত হয়েছিল। পাখি সংরক্ষণে গণসচেতনতা গড়ে উঠা দূরে থাক এখন তারই অস্তিত্ব নেই। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতি জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহকে পাখি শুমারি করার জন্য দাবি জানাই।

Thursday, December 9, 2010

বড়লেখায় নিরাপদ আবাসের খোঁজে হাজার হাজার পাখির আবাস পরিবর্তন

বড়লেখায় নিরাপদ আবাসের খোঁজে হাজার হাজার পাখির আবাস পরিবর্তন

০০ আব্দুল খালিক, বিয়ানীবাজার সংবাদদাতা

পাখির কিচিরমিচির শব্দে ভোরের ঘুম ভেঙেছিল হাকালুকি হাওরপারের গ্রামবাসীর। কিন্তু নিরাপদ আবাসের খোঁজে বার বার স্থান পরিবর্তন করেছে অতিথি পাখিগুলো। তারপরও নিরাপদ নয় পানকৌড়ি, বক ও হাঁস জাতীয় শীতের অতিথি পাখি। নতুন আশ্রয় স্থলেও শিকারীদের উৎপাত মাত্রাধিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, গত ৩/৪ বছর থেকে হাকালুকি হাওরের বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার পাখি সুজানগর সালদিগা গ্রামের বরহুম মিয়ার বাড়িতে নীড় গড়ে তুলেছিল। আর পাখির অভয়াশ্রম রক্ষায় বরহুম মিয়াসহ স্থানীয় পাখিপ্রেমী যুবকরা বাড়িটি ঘিরে পাহারা চৌকি বসিয়েছিল। ভোরবেলা খাদ্যের সন্ধানে ছুটে যাওয়া ও সন্ধ্যায় নীড়ে ফেরার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্তের পাখিপ্রেমিকরা ভিড় জমাতেন বরহুম মিয়ার বাড়িতে। কিন্ত বরহুম মিয়ার বাড়িতে শিকারীদের তাড়ায় বেশিদিন পাখিগুলো থাকতে পারেনি। শিকারীদের উৎপাতে গত বছরের ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে পাখিগুলো আবাস পরিবর্তন করে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে রহিম বক্ত মুসার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। দুই একদিন থাকার পর বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে নতুন আবাস গড়ে উপজেলার দক্ষিণ ভাগ (দ:) ইউনিয়নের নিউ সমনবাগ চা বাগান সংলগ্ন মনিপুরি পাড়ায়।
সরেজমিনে দেখা যায় মনিপুরি পাড়ার বিভিন্ন গাছে বসার জন্য হাজার হাজার শীতের পাখির উড়োউড়ির মনোরম দৃশ্য। সূর্য ডোবার আধ ঘন্টা পূর্ব থেকে রাত যাপনের জন্য পাখিগুলো প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরবতর্ী হাকালুকি হাওরের বিভিন্ন বিল থেকে আসতে শুরু করে। মনিপুরি পাড়ার ১৫/১৬ পরিবারের লোকজনও পাখিগুলোকে আপন করে নিয়েছে। পাখিগুলোর আসা-যাওয়ার মনোরম দৃশ্য এবং কিচিরমিচির সুমিষ্টি ডাক প্রতিদিন ভোরবেলা ও সন্ধ্যায় প্রাণভরে উপভোগ করে গজভাগ মনিপুরি পাড়ার লোকজন।

ঐ গ্রামের পাখিপ্রেমী স্কুল শিক্ষক রাম চন্দ্র সিংহ ইত্তেফাককে বলেন, তাদের গ্রামের কুঞ্জেশ্বর সিংহ, বিরচান্দ সিংহ ও হরেন্দ্র সিংহের বাড়ির বাঁশঝাড় ও অন্যান্য গাছে হাজার হাজার পানকৌড়ি, বক ও হাঁস জাতীয় শীতের পাখি আশ্রয় নেয়া শুরু করে। পাখির সংখ্যা ২০/২৫ হাজারের কম হবে না। গ্রামবাসীও পাখিগুলোর দেখভাল করতে থাকে। রাতের বেলা মনিপুরি পাড়ার পাখিপ্রেমীরা পাহারার ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু কিছু শিকারীর উৎপাতে তারা শংকিত হয়ে পড়েছেন, পাখিগুলো নিরাপদে থাকতে পারবে কি-না। গ্রামবাসি পাখিগুলোর নিরাপত্তায় সরকারি হস্তক্ষেপ কামনা করছে। কুলাউড়া-জুড়ী-বড়লেখার সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) মোঃ আহাদুজ্জামান জানান, পাখি শিকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Source: Daily Ittefaq, 13th January-2010

অতিথি পাখি আসেনি এবার বরিশালের দুর্গা সাগর

অতিথি পাখি আসেনি এবার বরিশালের দুর্গা সাগর

০০ লিটন বাশার, বরিশাল অফিস

অতিথি পাখির ঝাপটায় এখন আর আলোড়িত হয় না দুর্গা সাগরের পানি। এবার অতিথি পাখির দেখা নেই দুর্গাসাগরে, এমনকি দক্ষিণাঞ্চলের বিলগুলোতেও। এভাবে অতিথি পাখির আগমন কমে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন পরিবেশবিদরা।
এক সময় নগরীর অদূরবর্তী দুর্গা সাগরে শীত মৌসুম আসার সাথে সাথেই ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি আসতো। পাখিতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠতো দুর্গা সাগর। মনোমুগ্ধকর এ দৃশ্য দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসতেন পর্যটকরা। কিন্তু এক পর্যায়ে অতিথি পাখি আসা কমতে শুরু করলে দর্শনার্থীর সংখ্যাও হ্রাস পেতে থাকে। দুর্গা সাগরে চলতি শীতে এখনও কোন পাখির দেখা মেলেনি। স্থানীয়রা জানায়, প্রতি বছর শীত মৌসুমে যেসব অতিথি পাখি আসতো তারা রাত কাটাতো এ সাগরে। সূর্য ওঠার সাথে সাথেই এরা বিভিন্ন বিল ও চরাঞ্চলে খাবারের জন্য ছুটে যেত। পড়ন্ত বিকেলে আবার তারা ফিরে আসতো দুর্গা সাগরে। তখন পাখি আসা দেখতে দুর্গা সাগরের তীরে পর্যটকদের ভিড় পড়ে যেত। স্থানীয়রা জানান, দেড় দশক আগে দুর্গা সাগরের কাছাকাছি এলাকা রহমতপুর বিমানবন্দরে বিমান চলাচল শুরুর পর থেকে পাখির আনাগোনা কমতে থাকে। এছাড়া সাগরের পাশর্্ববর্তী বরিশাল-বানারীপাড়া সড়কে হর্ন বাজানো নিষিদ্ধ থাকলেও গাড়ি চালকরা তার তোয়াক্কা করে না। তাদের গাড়ির হর্নের শব্দে অতিথি পাখিরাও পালিয়েছে। পাখি না আসায় পর্যটকশূন্য দুর্গা সাগর তার ঐতিহ্য হারাচ্ছে। এখন আর আগের মত কেউ দুর্গা সাগরে বনভোজন করতেও আসে না। এখন শুধু জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে টিকেট ক্রয় করে প্রতি বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার মাছ ধরার জন্য কিছু শৌখিন মৎস্য শিকারী সেখানে ভিড় করে। সাগরের চারপাশে যে ওয়াকওয়ে তৈরি করা হয়েছিল তা বনজঙ্গলে ভরে গেছে। লাইটপোস্ট থাকলেও নেই কোন বৈদু্যতিক সংযোগ। ফলে সন্ধ্যার পরই ঘন অন্ধকার ঘিরে ধরে দুর্গা সাগরসহ পুরো মাধবপাশা এলাকা।
পাখি না আসার জন্য অনেক পরিবেশবিদ অবশ্য জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও খাদ্য সংকটকে দায়ী করেছেন। স্থানীয় পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে শব্দ দূষণের পাশাপাশি অতিথি পাখিদের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে দক্ষিণাঞ্চলে। সেখানে তিন ফসলী জমি এক ফসলিতে রূপ নেয়ায় এ খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। একই সাথে বার্ড ফ্লুসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়াও অতিথি পাখি না আসার অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছেন পরিবেশবিদরা। দুর্গাসাগর রক্ষায় জেলা প্রশাসন ৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব সংশিস্নষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে।
১৭৮০ খৃষ্টাব্দে চন্দ্রদ্বীপ পরগোনার (বর্তমান বরিশাল বিভাগ) তৎকালীন রাজা শীব নারায়ণ এলাকাবাসীর পানির সংকট নিরসনে মাধবপাশায় দক্ষিণবঙ্গের বৃহত্তর একটি দীঘি খনন করেন। তার মা দুর্গা দেবীর নামে দীঘিটির নামকরণ হয় দুর্গাসাগর। বরিশাল নগরী থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরবর্তী এই দুর্গাসাগরকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য স্বাধীনতার পরপরই উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু বার বার সে উদ্যোগ হোঁচট খেয়েছে।
Source: Daily Ittefaq, 12th January -2010

মিরপুরে অতিথি পাখির কাকলি

মিরপুরে অতিথি পাখির কাকলি মোস্তফা কাজলনানা বর্ণের অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে উঠেছে রাজধানীর মিরপুর সিরামিক কারখানা এলাকা। শত শত অতিথি পাখির আগমনে কারখানার চারপাশে বিরাজ করছে আনন্দঘন এক পরিবেশ। সেখানের সবুজ-শ্যামল নৈসর্গিক পরিবেশকে আরও মোহনীয় করে তুলেছে অতিথি পাখির আগমন। এমন কি সিরামিক এলাকায় যারা বসবাস করেন তাদের ভোর হয় অতিথি পাখির কিচিরমিচির শব্দে। আর সন্ধ্যা নামে সেই অতিথি পাখির কলরবে। এ চমৎকার দৃশ্য অবলোকন না করলে উপলব্ধি করা যায় না। পদ্ম শোভিত পুকুরগুলোতে নিরাপদ আশ্রয়ে এসব পাখি নির্ভাবনায় মেতে উঠছে জলকেলিতে। কেউ আবার ডুব-সাঁতারে ব্যস্ত। পুকুরের কোথাও তারা জুটিবদ্ধভাবে নিজেদের সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নিচ্ছে।
প্রতিবছর নভেম্বর মাসে হিমালয়ের উত্তরে শীত নামতে শুরু করলে প্রচণ্ড তুষারপাতে টিকতে না পেরে পাখিরা একটু উষ্ণতার খোঁজে পাড়ি জমায় নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে। মূলত ডিসেম্বরের শুরুতে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি আসতে থাকে।
এ সময় বিচিত্র বাংলার রূপসুষমা আরও বৈচিত্র্যময় হয়ে ওঠে। মার্চে গরম ফিরে এলে আবার পাখিরা ফিরে যায় সুদূর সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, নেপাল, চীন ও প্রতিবেশী দেশ ভারতের দুর্গম অঞ্চলে স্থায়ী নিবাসে। এই সবুজাভাব এলাকার পুকুর পাড়ে দাঁড়ালেই চোখে পড়ে অনেক সরালি ঝাঁক বেঁেধ সাঁই সাঁই করে আসছে। আবার ঝপাৎ করে বসে যাচ্ছে পুকুরের স্বচ্ছ পানিতে। কেউ বা সাঁতার কাটছে আপন মনে। অদূরে আছে ডাহুক। খুঁটে খুঁঁটে যেন খাচ্ছে। দৃষ্টি চলে যায় দুগ্ধধবল বক পাখির দিকে। আপন মনে লাফিয়ে লাফিয়ে হাঁটছে। সবচেয়ে বেশি মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি হয় ভোরে। এ সময় পাখিরা ঝাঁক বেঁধে বসে থাকে পুকুরের চারপাশে। পাখিপ্রেমিকরা আকর্ষণীয় এ দৃশ্য দেখার জন্য এখানে আসেন।
গতকাল সরেজমিন সেখানে দেখা গেছে এসব দৃশ্য। মিরপুর সিরামিক কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, এবার অতিথি পাখি একটু কম এসেছে। এখানে নিজেদের নিরাপদ মনে করে না বলেই সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। তাছাড়া এক শ্রেণীর অসাধু পাখি শিকারি লোকচক্ষুর অন্তরালে অবাধে পাখি নিধন চালায়। বাংলাদেশ বার্ডস ক্লাবের সহসভাপতি কাজী আবদুল হাকিম বলেন, অতিথি পাখির জন্য নিরাপদ আবাসস্থল গড়ে তুলতে না পারলে এক সময় তারা এখানে আসা বন্ধ করে দিতে পারে। এসব এলাকাকে অভয়ারণ্য ঘোষণা করা উচিত। প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা কর্মকর্তা জহিরউদ্দিন জানান, এখানে নিরাপত্তা জোরদার করা হলে পাখির জীবন বিপন্ন হতো না, নির্ভয়ে ঘুরে বেড়াতে পারত। এসব বিবেচনা মাথায় রেখে ১ জানুয়ারি থেকে পাখি উৎসব পালন করবে বাংলাদেশ বার্ডস ক্লাব। সিরামিক কারখানা এলাকায় দেখা গেছে, সরালি, পচার্ড, ফ্লাইফেচার, গার্গেনী, ছোট জিরিয়া, মুরগ্যাধি, কোম্বডাক ও পাতাড়ি হাঁস, জলকুক্কুট ও খয়রা নামের শীতের পাখি।
Source: Daily Bangladesh Pratidin

Tuesday, December 7, 2010

মহাদেবপুরের হাসানপুরবাসীর দাবি
পাখির অভয়ারণ্য চাই
এমআর রকি, নওগাঁ, ৩১ ডিসেম্বর ২০১০

মহাদেবপুর উপজেলার হাসানপুর গ্রামকে আনুষ্ঠানিকভাবে পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করার দাবি করেছেন এলাকাবাসী। উল্লেখ্য, এ গ্রামের মানুষ স্ব-উদ্যোগে পাখির অভয়ারণ্য গড়ে তুলেছেন। ফলে পুরো হাসানপুর গ্রাম এখন পাখির অভায়রণ্য হয়ে উঠেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শীতের আগেই এ অভয়ারণ্যে হাজার হাজার পাখির আগমন ঘটা শুরু করেছে। পাখির
কিচির মিচির শব্দে এখন এলাকাবাসীর ঘুম ভাঙে। এছাড়া জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকেও শ'শ' পাখি প্রেমিক মনোরম এ পরিবেশ দেখতে প্রতিদিন হাসানপুর গ্রামে ভীড় করছেন। গ্রামে ঢোকার আগেই চোখে পড়ে, গাছে গাছে সাঁটানো নানা সাইনবোর্ড। তাতে লেখা, 'পাখি শিকার করবেন না' 'পাখি মারবেন না' 'ওরাও আমাদের মতো বাঁচতে চায়' 'পাখি এ সমাজের পরম বন্ধু'_ ইত্যাদি।

পাখির অভায়ারণ্য গড়ার এ উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় সোনালী সংসদ নামের একটি সেবা সংঘ। তারা গোটা গ্রামবাসীকে সংগঠিত ও সচেতন করেছেন। গ্রামকে পাখি শিকারমুক্ত ঘোষণা করেছেন। এখন গ্রামের মানুষ চাইছেন, সরকার বা প্রশাসন যেন আনুষ্ঠানিকভাবে এ অভয়ারণ্যের স্বীকৃতি দেয়। গ্রামবাসীর কথা, আমরা সবখানে সব গ্রামে পাখির অভয়ারণ্য চাই।


Source: Daily Sangbad

নগরায়ণের শিকার পরিযায়ী পাখিরা

নগরায়ণের শিকার পরিযায়ী পাখিরা

০০ ডয়চে ভেলে

কলকাতা শহরে চিরকালই পাখি কম। কিন্তু প্রতি বছরই শীতকালে পরিযায়ী পাখিদের ঝাঁক এসে বাসা বাঁধতো কলকাতা আলিপুরের চিড়িয়াখানার ঝিলে। কিন্তু ইদানীং সেই পাখিদের আর চোখে পড়ে না। ১০ বছর আগেও পরিস্থিতি এমন ছিল না। প্রতি বছর শীতের মুখে নির্ভুলভাবে পথ চিনে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে দক্ষিণবঙ্গে পেঁৗছে যেত বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখির ঝাঁক। আলিপুর চিড়িয়াখানার ঝিলই শুধু নয়, কলকাতা এবং শহরতলির নানা জলাশয়ে দেখা যেত এদের। কিন্তু এই পরিযায়ী পাখির সংখ্যা কমতে কমতে এখন প্রায় শূন্যে এসে ঠেকেছে। কেন? পাখিরা কি এত বহুতল বাড়ির ভিড়ে নিজেদের পুরনো আস্তানাগুলো আর খুঁজে পাচ্ছে না? তারা কি রাস্তা হারাচ্ছে এই কংক্রিটের জঙ্গলে?

রাজারহাট ছাড়িয়ে উত্তর ২৪ পরগণার হাড়োয়ার কাছে কেবল পাখিদের জন্যেই এক অভয়ারণ্য বানাচ্ছেন পাখি বিশেষজ্ঞ ডঃ দেবাশিস ব্যানার্জি। পেশায় চিকিৎসক হলেও তার প্রতিদিনের এক বড় অংশ কাটে পাখিদের নিয়ে। তিনি জানান, বহুতল বাড়িগুলোও হয়তো অতটা সমস্যা তৈরি করত না, যদি জলাশয়গুলো দূষণমুক্ত থাকত। এবং পাখিদের স্বাভাবিক খাবারের অভাব না হত। ডঃ ব্যানার্জির বিশেষ আপত্তি, জলাশয় সংস্কারের নামে যেভাবে পাখিদের থাকার জায়গা নষ্ট করে দেয়া হয় শহরে ও গ্রামে, সেই নিয়ে। আর পরিযায়ী পাখিদের যে রাস্তা চেনার স্বাভাবিক ক্ষমতা, তাকে পুরো নষ্ট করে দেয় মোবাইল টাওয়ারের বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ আর উপগ্রহ দূর-সঞ্চার ব্যবস্থা। শুধু পরিযায়ী পাখি নয়, প্রতিদিন যে পাখিগুলোকে একসময় দেখতে পাওয়া যেত, সেই শালিক, চড়-ইয়ের সংখ্যাও ক্রমশ কমে আসছে।

তিনি আরও বলেন, একদিন আসবে যেদিন মানুষ ভুলটা ঠিকই বুঝতে পারবে যে খালি মোবাইল ফোন বা স্যাটেলাইট টিভি নয়, গাছপালা, পাখপাখালি, সবই সমান জরুরি। কিন্তু তখন অনেক দেরি না হয়ে যায়।

হাকালুকি ও তার পাখি

হাকালুকি ও তার পাখি

পাখি শিকার বন্ধ করতে হবে। হাকালুকি হাওড়ে খনন কাজ চালিয়ে এর গভীরতা ফিরিয়ে আনতে হবে। এসব দাবি উঠে এসেছে সোমবার মৌলভীবাজারে অনুষ্ঠিত এক সভায় বক্তাদের তরফ থেকে। পত্রিকান্তরে বুধবার প্রকাশিত এক খবরে জানা গেল, পরিবেশ অধিদফতরের উদ্যোগে সোমবার মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন ক েউপকূলীয় ও জলাভূমির জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের সভায় বক্তারা এসব কথা বলেছেন। তাঁরা বলেছেন, জলজ উদ্ভিদ আর জীববৈচিত্র্যে ভরপুর হাকালুকি হাওড়। কিন্তু কিছু অবিবেচক মানুষের কর্মকাণ্ডে বৃহত্তম হাওড়টি ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে যা আজ পরিবেশসহ সঙ্কটাপন্ন এলাকা হিসাবে চিহ্নিত। প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক অতিথি পাখি আসে হাকালুকিতে। পরিবেশ রার স্বার্থে সেসব পাখি শিকার বন্ধ করতে হবে। ঐ সভায় সংশ্লিষ্ট এলাকার বিলের লিজ বাতিল এবং খনন কাজের মাধ্যমে সেখানকার গভীরতা ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরা হয়। ঐ অনুষ্ঠানের সভাপতি সেখানকার জেলা প্রশাসক পাখি শিকারিকে ধরিয়ে দিলে পাঁচ হাজার টাকা পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বলেও উলি্লখিত খবরে জানা গেল।
হাকালুকি অনেকবার পত্রপত্রিকার খবর হয়েছে। বলা হয়, এটা বিশ্বের সবচেয়ে বড় হাওড়। সেখানে রয়েছে বিভিন্ন জাতের জলজ উদ্ভিদ এবং প্রাণী। হাকালুকিসহ এ ধরনের হাওড় এবং ছোট-বড় সকল জলাশয় বা জলের আধার শুধু সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকজনের জন্যই নয়, সারাদেশের মানুষের জন্য অমূল্য সম্পদস্বরূপ। আমাদের অনেক জলাশয়, ছোট নদী, খাল-বিল হারিয়ে গেছে। এগুলো হারিয়ে যাওয়ার অর্থ মাছসহ সব ধরনের জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীর সংশ্লিষ্ট এলাকা থেকে হারিয়ে যাওয়া। দেশের বহু নদী-খাল দূষিতও হয়ে পড়েছে আবর্জনা তথা বর্জ্যের কারণে তবে দেশে এখন এ ব্যাপারে সচেতনতা বেড়েছে। নদী খনন, দূষণমুক্ত করা ইত্যাদি বিষয়েও বর্তমান সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে, সেসব ব্যাপারে কাজও কিছু কিছু শুরু হয়েছে। আমরা মনে করি দেশের সব নদীকে বাঁচাতে হবে, রা করতে হবে সকল হাওড়, বিল তথা জলাশয়কে।
হাকালুকিতে প্রতিবছর শীতের মৌসুমে হাজার হাজার অতিথি পাখি আসে। দেশের অন্যান্য এলাকাতেও অনেক অতিথি পাখি আসে। অতিথি পাখি মারা নিষিদ্ধ হলেও অতীতে বহুবার দেখা গেছে অতিথি পাখি এলেই বিভিন্ন এলাকায় এক শ্রেণীর শিকারি তৎপর হয়ে ওঠে। কেউ বন্দুক দিয়ে, কেউ ফাঁদ পেতে পাখি ধরে। আবার কেউ কেউ বিষ দিয়ে পাখি মারে_ এমন খবরও পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। বেশ কিছু দিন আগে এই হাকালুকিতে এ ধরনের ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়।
শুকনো এলাকায়, মরু এলাকায় অতিথি পাখি আসে না। ওরা আসে জলাভূমিতে। জলাভূমিগুলো রা করতে হবে। প্রয়োজনে জল যাতে অনেক বেশি ধরে সেজন্য খনন করার উদ্যোগ নিতে হবে। একই সঙ্গে অতিথি পাখি শিখার বন্ধ করতে হবে। মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক অতিথি পাখি শিকারিদের ধরিয়ে দেয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণার প্রশংসনীয় এই উদ্যোগে আশা করা যায় হাকালুকির অতিথি পাখিরা এবার নিরাপদে সেখানে শীতযাপন করতে পারবে। তবে এ ধরনের পুরস্কারই পাখি রার একমাত্র পথ নয়। এর পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট এলাকার সকল কতর্ৃপকে এসব ব্যাপারে কড়া নজর দিতে হবে এবং সামগ্রিকভাবে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সর্বপর্যায়ে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রার গুরুত্ব তুলে ধরতে হবে।
Source: Daily Janakantha

পাখিদের আহমদউল্যাহ

পাখিদের আহমদউল্যাহ




গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুক কানুপুর ইউনিয়নের উত্তরপাড়া গ্রামে ঢুকেই হকচকিয়ে যেতে হলো রাস্তার ধারে, পুকুরের পাড়ে, জমির ধারে, স্কুলের চারপাশে, ঘরের খুলিতে (দুই ঘরের মাঝখানে) যেখানেই বড়সড় আর মাঝারি ধরনের গাছ, সেখানেই ডালে ডালে কলস বাঁধা বাজারে যাচ্ছিলেন স্থানীয় তালুক কানুপুর দ্বিমুখী স্কুলের শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান তাঁকে থামিয়ে ঘটনাটি জিজ্ঞেস করলে হেসে বললেন, 'এসব আমাদের আহমদ পাগলার কাণ্ড কলসি দিয়ে পাখিদের বাসা বানিয়ে দিয়েছে পড়াশোনার পাশাপাশি ছেলেটা বন্ধুবান্ধব নিয়ে এসবেই মেতে থাকে' পথচারী ব্যবসায়ী জিল্লুর রহমান বললেন, 'প্রথম দিকে অক সগলে পাগলা কতো এখন মাইনসে পায়তো অক মাতাত তুলি রাকে চ্যাংড়াটার মন খুবে বড় !' এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে লক্ষ করা গেল, সবার মধ্যেই তাঁকে 'পাগল' বলার ভেতরেও এক ধরনের অহঙ্কার কাজ করছে

একে ওকে জিজ্ঞেস করতেই তাঁরা আহমদউল্যাহর বাড়ির ঠিকানা দিলেন বাবা আলাউদ্দিন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মা খুরশিদা বেগম গৃহিণী ছয় ভাই-বোনের মধ্যে আহমদউল্যাহ পঞ্চম তিনি কামিল চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্র নাম শুনে বিশাল মানুষ মনে হলেও হালকা-পাতলা গড়নের আহমদউল্যাহকে দেখে বিশ্বাস করা শক্ত যে এতো বড় একটি কর্মযজ্ঞে তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাড়ির সামনে বসে কথা হলো আহমদউল্যাহর সঙ্গে এতো কাজ থাকতে পাখির জন্য বাসা বানানোর ইচ্ছে হলো কেন? প্রশ্ন করতেই তিনি জানান, ২০০১ সালে একদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে কেটে ফেলা একটি আমগাছের পাশে কয়েকটি নিরাশ্রয় শালিকের বাচ্চা রাস্তার ধারে পড়ে থাকতে দেখে তাঁর মন কেমন করে ওঠে মনে হয় 'আহারে ওরা ওদের মাকে হারিয়ে ফেলেছে, এই বাচ্চাগুলো এখন কোথায় যাবে'! পাখিগুলোকে অন্য একটি গাছের ডালে তুলে দিয়ে বাড়ি ফিরে পড়ার টেবিলে বসে অনেক ভেবে মোটামুটি একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তিনি সেই ভাবনা থেকে পরদিন গ্রামে মোট গাছের হিসাব নিতে বের হন আহমদ প্রথমে নিজের বাড়ির গাছে তিনটি কলস বাঁধেন পনের দিন যেতেই এসব কলসে আশ্রয় নেয় ছয় জোড়া পাখিআহমদ অবাক হয়ে দেখতে থাকেন পাখিদের ঘর-সংসার, বংশবৃদ্ধি নিজের সাফল্যে মুগ্ধ হন তিনি

আহমদ কাজ শুরু করেন ২০০১ সালের জানুয়ারি থেকে পড়ালেখার ফাঁকে ফাঁকে ও ছুটির দিনে তিনি এসব কাজ করেন পড়াশোনা আর হাতখরচের টাকা বাঁচিয়ে মাটির তৈরি কলস কেনেন তিনি প্রতিটি কলসের দাম সাত টাকা তাই রয়েসয়ে প্রথম বছরেই বিভিন্ন জাতের গাছে ১৪০টি শূন্য কলস লাগান আহমদ প্রতিটি কলস একটু বাঁকা করে বাঁধা হয় বৃষ্টির পানি বেরুবার জন্য কলসের নিচে ফুটো করে দেওয়া হয় খড়কুটো সংগ্রহ করে পাখিরা নিজেই কলসের ভেতর বাসা তৈরি করে আহমদের কলসের বাসায় দোয়েল, কোয়েল, শালিক, হুতুমপেঁচা, টিয়াসহ প্রায় সব ধরনের দেশি পাখি বাসা বেঁধেছে তাঁর কাজ দেখে ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে কর্মরত গ্রামের চাকরিজীবীরা ঈদের ছুটিতে এসে তাঁকে সহায়তা করে গাইবান্ধা সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক খলিলুর রহমান আহমদের কাজের প্রশংসা করে বলেন, 'পাখিরা এমনিতেই মানুষের কাছাকাছি থাকতে পছন্দ করে আহমদ তাদের জন্য নিরাপত্তাবোধের অভয়ারণ্য তৈরি করেছে শুরুতে আহমদ ছিল একা; কিন্তু কাজ বেড়ে গেলে এক সময় তাঁর একার পক্ষে পাখির বাসা দেখাশোনা ও বাসাগুলো সংরক্ষণ দুরূহ হয়ে পড়ে তখন তিনি ২০০৭ সালে উত্তরপাড়া শান্তিসংঘ নামে ৪০ সদস্যবিশিষ্ট একটি সংগঠন গড়ে তোলেন ক্লাবের সভাপতি আহমদউল্যাহ নিজেই ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বগুড়া আজিজুল হক কলেজের অনার্স পড়ুয়া ছাত্র হাবিবুল্লাহ তিনি জানালেন, রাস্তার পাশে ও বাড়ির আনাচে-কানাচের গাছে বাঁধা কলস যাতে ছোট ছেলে-মেয়েরা ঢিল ছুড়ে নষ্ট না করে সংগঠনের সদস্যরা তা দেখাশুনা করেন এ ছাড়া যেসব গাছের কলস ঝড়ে ভেঙে যায় সেগুলোতে নতুন কলস বেঁধে দেওয়াও তাঁদের কাজ আহমদের কাজ দেখতে এতদিন বড় বড় সরকারি কর্মকর্তা, এনজিও কর্মী, পাখিপ্রেমী ছুটে এসেছেন ছোট্ট উত্তরপাড়া গ্রামে পিঠচাপড়ে দিয়েছেন অনেকেই ১৩ মে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত পরিবেশ ও পাখি সংরক্ষণ অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেল আহমদ ও তাঁর উত্তরপাড়ার শান্তি সংঘ