এইচ এম দিদার
প্রতি বছর শীতকাল এলেই আমাদের আশপাশের জলাশয়, বিল, হাওড়, পুকুর ভরে যায় নানা রঙ বেরঙের নাম না জানা পাখিতে। এসব পাখিকে অতিথিপরায়ন বাঙালী আদর করে নাম দিয়েছে অতিথি পাখি। যাযাবর এই পাখিরা ঝাঁকে ঝাঁকে আমাদের দেশে হাজির হয় নিজেদের জীবন বাঁচাতে। আমরা যাকে অতিথি পাখি বলে চিনি, সেই পাখিকে ইংরেজিতে বলে মাইগ্রেটরি বার্ড (Migratory bird)। শুদ্ধ বাংলায় যার মানে দাঁড়ায় পরিযায়ী পাখি। অর্থাৎ যেসব পাখি বছরের নিদিষ্ট একটা সময় নিজের দেশ বা নিজের এলাকা ছেড়ে বিশেষ প্রয়োজনে অন্য কোন দেশে বা এলাকায় চলে যায় এবং কিছুদিন পর আবার নিজের এলাকায় ফিরে আসে তাদেরকেই সাধারত পরিযায়ি পাখি বলে।
জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকে বিপুল সংখ্যক অতিথি পাখিদের অবাধ বিচরণ।
পৃথিবীতে প্রায় ৫ লাখ প্রজাতির পাখি আছে। এসব পাখিদের মধ্যে অনেক প্রজাতিই বছরের একটি নিদিষ্ট সময় অন্য দেশে চলে যায়। শুধু ইউরোপ আর এশিয়ায় আছে প্রায় ৬০০ প্রজাতির পরিযায়ি পাখি। এসব পাখির মধ্যে প্রায় ১৫০ প্রজাতির পাখি আমাদের দেশে প্রতি বছর বেড়াতে আসে। এদেরকেই আমরা বলি অতিথি পাখি।
প্রতিবারের মত এবারের ও বাতাসে শীতের ছোঁয়া লাগতেই শুরু হয়ে গেছে অতিথি পাখির আনাগোনা।দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন খাল, বিল, পুকুর, হ্রদ, নদী অববাহিকায় এবারের শীতেও প্রচুর পরিমাণ বিদেশী পাখির বিচরণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অতিথি পাখির বিচরণস্থান হিসেবে পুর্বে যেসব জায়গা পরিচিত, এ শীতে সে সব জায়গা গুলোর অধিকাংশই অতিথি পাখিদের কলকাকলিতে মুখর হয়ে উঠছে।
বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় এবং প্রত্যক্ষ অনুসন্ধানের মাধ্যমে দেশে অতিথি পাখির আগমন ও বিচরণের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকার অদুরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের অভয়ারণ্য, সুন্দরবনের টুকরাখ্যাত দেশের একমাত্র আবাসিক উচ্চশিক্ষালয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ ক্যাম্পাস এখন অতিথি পাখির কলকাকলি ও ডানাঝাঁপটানিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে। প্রতিবছরের মতো এবারও শীতে অতিথি পাখিরা এসেছে। অতিথি পাখির আগমনে ক্যাম্পাসের পদ্ম শোভিত লেকগুলোর সৌন্দর্যে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। এসব অতিথি পাখির কলকাকলি আর কিচিরমিচির শব্দে ক্যাম্পাসে মধুময় সুরের আবহ বিরাজ করছে। এখন ক্যাম্পাসবাসী শিক্ষার্থীদের ঘুম ভাঙে অতিথি পাখির কলকাকলিতে। আবার সারাদিনের কর্মব্যস্ততা শেষে অতিথি পাখির মধুময় সুরে ঘুমিয়ে পড়েন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অবসর সময়ে লেকের পাড়ে এসে অতিথি পাখিদের সৌন্দর্য অবলোকন করে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অসংখ্য পাখিপ্রেমী দর্শনার্থী প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছে ক্যাম্পাসে।
নীলফামারী জেলার নীলসাগরেও এবার প্রচুর পাখির বিচরণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জেলার এই বিরাট দীঘিতে বিপুল সংখ্যক ভিনদেশী পাখির সমারোহ। সুদূর সাইবেরিয়া থেকে প্রতি বছরের মতো এবারও ছুটে এসেছে শীতের অতিখি পাখিরা। এখন নীলসাগর দীঘিটি এই শীতের হাজারো অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর। পাখি দেখতে এখানে ছুটে আসছে বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য মানুষ। বসেছে দর্শনার্থীদের মিলনমেলা। শীতের অতিথি পাখিরা কিচিরমিচির ডাক আর পাখা নাচিয়ে উড়াল দিয়ে ফের দীঘির পানিতে ভেসে বেড়ানোর খেলায় মেতে উঠছে। নীলসাগরের উদার উদাস পরিবেশ খুব সহজেই কাছে টানে প্রকৃতিপ্রেমী মানুষদের।
দেশের উত্তরাঞ্চলে নীল সাগরে ভেসে ভেড়াচ্ছে একটি অতিথি পাখি
দেশের সর্ববৃহৎ হাওর হাকালুকিতে আসা শুরু করেছে শীতের অতিথি পাখি। ৭টি অভয়াশ্রমসহ গোটা হাওরই যেন এসব অতিথি পাখির মুক্ত বিচরণভূমি। ক্রমে অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে উঠবে ছোট-বড় ২৩৫টি বিলের সমন্বয়ে গড়া হাওরাঞ্চল। দেশের যে কয়টি স্থানে অতিথি পাখির সমাগম ঘটে হাকালুকি হাওর তাদের মধ্যে অন্যতম। জানা যায় পাখি বিশেষজ্ঞরা গত ৫ বছর এই হাওরে পাখি জরিপ করে ঘোষণা দিয়েছেন সবচেয়ে বেশি অতিথি পাখি সমাগমের পাশাপাশি বেশি প্রজাতির এবং বিলুপ্ত প্রজাতির পাখির দেখা মেলে এখানে। সচরাচর যেসব পাখি হাকালুকি হাওরে দেখা যায় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল লেঞ্জা, কুন্তি হাঁস, জিরিয়া হাঁস, নীলশির, গ্যাডওয়াল, লালশির, পাতারি হাঁস, বামনীয়া, ভুটি হাঁস, কালো হাঁস, চখা-চখি, বালি হাঁস, বড় সরালী, ছোট সরালী, রাজ হাঁস, কানি বক, ধূসর বক, গো বক, সাদা বক, ছোট বক, মাঝলা বক, কালেম বা কায়েন, জল ময়ূর, ডুবুরি, খোপা ডুবুরি, ছোট পানকৌড়ি, বড় পানকৌড়ি, শামুক ভাঙ্গা বা শামুক খোলা, কালো কুট, কাদা খোঁচা বা চ্যাগা, জলের কাদাখোঁচা পাখি, ছোট জিরিয়া, বাটান, চা পাখি, সবুজ পা, লাল পা পিও, লাল লতিফা বা হটটিটি, গঙ্গা কবুতর, কাল মাখা গঙ্গা কবুতর প্রভৃতি প্রজাতি।
বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের আরেকটি, বাইক্কা বিলেও অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে। মৌলভীবাজার জেলার অন্যতম জলাভূমি শ্রীমঙ্গলের হাইল-হাওড়ের বাইক্কা বিলে ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে আসছে অতিথি পাখি। এদের কলতানে মুখর হয়ে উঠছে বাইক্কা বিল। নভেম্বরের শেষ থেকেই বাইক্কা বিলে অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে, যা আগামী ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। আগত পাখির মধ্যে রয়েছে রাজসরালি, পিন্টেল, পাতিসরালি, বালিহাঁস, ল্যাঞ্জাহাঁস, সাদাবক, দলপিপি, পানমুরগি, কাস্তেচড়া, বেগুনিকালেম, পানকৌড়ি, ঈগল প্রভৃতি।
দেশের সর্ববৃহৎ হাওর হাকালুকিতে আসা শুরু করেছে শীতের অতিথি পাখি। ৭টি অভয়াশ্রমসহ গোটা হাওরই যেন এসব অতিথি পাখির মুক্ত বিচরণভূমি। ক্রমে অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে উঠবে ছোট-বড় ২৩৫টি বিলের সমন্বয়ে গড়া হাওরাঞ্চল। দেশের যে কয়টি স্থানে অতিথি পাখির সমাগম ঘটে হাকালুকি হাওর তাদের মধ্যে অন্যতম। জানা যায় পাখি বিশেষজ্ঞরা গত ৫ বছর এই হাওরে পাখি জরিপ করে ঘোষণা দিয়েছেন সবচেয়ে বেশি অতিথি পাখি সমাগমের পাশাপাশি বেশি প্রজাতির এবং বিলুপ্ত প্রজাতির পাখির দেখা মেলে এখানে। সচরাচর যেসব পাখি হাকালুকি হাওরে দেখা যায় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল লেঞ্জা, কুন্তি হাঁস, জিরিয়া হাঁস, নীলশির, গ্যাডওয়াল, লালশির, পাতারি হাঁস, বামনীয়া, ভুটি হাঁস, কালো হাঁস, চখা-চখি, বালি হাঁস, বড় সরালী, ছোট সরালী, রাজ হাঁস, কানি বক, ধূসর বক, গো বক, সাদা বক, ছোট বক, মাঝলা বক, কালেম বা কায়েন, জল ময়ূর, ডুবুরি, খোপা ডুবুরি, ছোট পানকৌড়ি, বড় পানকৌড়ি, শামুক ভাঙ্গা বা শামুক খোলা, কালো কুট, কাদা খোঁচা বা চ্যাগা, জলের কাদাখোঁচা পাখি, ছোট জিরিয়া, বাটান, চা পাখি, সবুজ পা, লাল পা পিও, লাল লতিফা বা হটটিটি, গঙ্গা কবুতর, কাল মাখা গঙ্গা কবুতর প্রভৃতি প্রজাতি।
বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের আরেকটি, বাইক্কা বিলেও অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে। মৌলভীবাজার জেলার অন্যতম জলাভূমি শ্রীমঙ্গলের হাইল-হাওড়ের বাইক্কা বিলে ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে আসছে অতিথি পাখি। এদের কলতানে মুখর হয়ে উঠছে বাইক্কা বিল। নভেম্বরের শেষ থেকেই বাইক্কা বিলে অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে, যা আগামী ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। আগত পাখির মধ্যে রয়েছে রাজসরালি, পিন্টেল, পাতিসরালি, বালিহাঁস, ল্যাঞ্জাহাঁস, সাদাবক, দলপিপি, পানমুরগি, কাস্তেচড়া, বেগুনিকালেম, পানকৌড়ি, ঈগল প্রভৃতি।
No comments:
Post a Comment