Thursday, December 9, 2010

বড়লেখায় নিরাপদ আবাসের খোঁজে হাজার হাজার পাখির আবাস পরিবর্তন

বড়লেখায় নিরাপদ আবাসের খোঁজে হাজার হাজার পাখির আবাস পরিবর্তন

০০ আব্দুল খালিক, বিয়ানীবাজার সংবাদদাতা

পাখির কিচিরমিচির শব্দে ভোরের ঘুম ভেঙেছিল হাকালুকি হাওরপারের গ্রামবাসীর। কিন্তু নিরাপদ আবাসের খোঁজে বার বার স্থান পরিবর্তন করেছে অতিথি পাখিগুলো। তারপরও নিরাপদ নয় পানকৌড়ি, বক ও হাঁস জাতীয় শীতের অতিথি পাখি। নতুন আশ্রয় স্থলেও শিকারীদের উৎপাত মাত্রাধিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, গত ৩/৪ বছর থেকে হাকালুকি হাওরের বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার পাখি সুজানগর সালদিগা গ্রামের বরহুম মিয়ার বাড়িতে নীড় গড়ে তুলেছিল। আর পাখির অভয়াশ্রম রক্ষায় বরহুম মিয়াসহ স্থানীয় পাখিপ্রেমী যুবকরা বাড়িটি ঘিরে পাহারা চৌকি বসিয়েছিল। ভোরবেলা খাদ্যের সন্ধানে ছুটে যাওয়া ও সন্ধ্যায় নীড়ে ফেরার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্তের পাখিপ্রেমিকরা ভিড় জমাতেন বরহুম মিয়ার বাড়িতে। কিন্ত বরহুম মিয়ার বাড়িতে শিকারীদের তাড়ায় বেশিদিন পাখিগুলো থাকতে পারেনি। শিকারীদের উৎপাতে গত বছরের ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে পাখিগুলো আবাস পরিবর্তন করে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে রহিম বক্ত মুসার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। দুই একদিন থাকার পর বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে নতুন আবাস গড়ে উপজেলার দক্ষিণ ভাগ (দ:) ইউনিয়নের নিউ সমনবাগ চা বাগান সংলগ্ন মনিপুরি পাড়ায়।
সরেজমিনে দেখা যায় মনিপুরি পাড়ার বিভিন্ন গাছে বসার জন্য হাজার হাজার শীতের পাখির উড়োউড়ির মনোরম দৃশ্য। সূর্য ডোবার আধ ঘন্টা পূর্ব থেকে রাত যাপনের জন্য পাখিগুলো প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরবতর্ী হাকালুকি হাওরের বিভিন্ন বিল থেকে আসতে শুরু করে। মনিপুরি পাড়ার ১৫/১৬ পরিবারের লোকজনও পাখিগুলোকে আপন করে নিয়েছে। পাখিগুলোর আসা-যাওয়ার মনোরম দৃশ্য এবং কিচিরমিচির সুমিষ্টি ডাক প্রতিদিন ভোরবেলা ও সন্ধ্যায় প্রাণভরে উপভোগ করে গজভাগ মনিপুরি পাড়ার লোকজন।

ঐ গ্রামের পাখিপ্রেমী স্কুল শিক্ষক রাম চন্দ্র সিংহ ইত্তেফাককে বলেন, তাদের গ্রামের কুঞ্জেশ্বর সিংহ, বিরচান্দ সিংহ ও হরেন্দ্র সিংহের বাড়ির বাঁশঝাড় ও অন্যান্য গাছে হাজার হাজার পানকৌড়ি, বক ও হাঁস জাতীয় শীতের পাখি আশ্রয় নেয়া শুরু করে। পাখির সংখ্যা ২০/২৫ হাজারের কম হবে না। গ্রামবাসীও পাখিগুলোর দেখভাল করতে থাকে। রাতের বেলা মনিপুরি পাড়ার পাখিপ্রেমীরা পাহারার ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু কিছু শিকারীর উৎপাতে তারা শংকিত হয়ে পড়েছেন, পাখিগুলো নিরাপদে থাকতে পারবে কি-না। গ্রামবাসি পাখিগুলোর নিরাপত্তায় সরকারি হস্তক্ষেপ কামনা করছে। কুলাউড়া-জুড়ী-বড়লেখার সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) মোঃ আহাদুজ্জামান জানান, পাখি শিকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Source: Daily Ittefaq, 13th January-2010

No comments:

Post a Comment