Thursday, December 9, 2010

মিরপুরে অতিথি পাখির কাকলি

মিরপুরে অতিথি পাখির কাকলি মোস্তফা কাজলনানা বর্ণের অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে উঠেছে রাজধানীর মিরপুর সিরামিক কারখানা এলাকা। শত শত অতিথি পাখির আগমনে কারখানার চারপাশে বিরাজ করছে আনন্দঘন এক পরিবেশ। সেখানের সবুজ-শ্যামল নৈসর্গিক পরিবেশকে আরও মোহনীয় করে তুলেছে অতিথি পাখির আগমন। এমন কি সিরামিক এলাকায় যারা বসবাস করেন তাদের ভোর হয় অতিথি পাখির কিচিরমিচির শব্দে। আর সন্ধ্যা নামে সেই অতিথি পাখির কলরবে। এ চমৎকার দৃশ্য অবলোকন না করলে উপলব্ধি করা যায় না। পদ্ম শোভিত পুকুরগুলোতে নিরাপদ আশ্রয়ে এসব পাখি নির্ভাবনায় মেতে উঠছে জলকেলিতে। কেউ আবার ডুব-সাঁতারে ব্যস্ত। পুকুরের কোথাও তারা জুটিবদ্ধভাবে নিজেদের সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নিচ্ছে।
প্রতিবছর নভেম্বর মাসে হিমালয়ের উত্তরে শীত নামতে শুরু করলে প্রচণ্ড তুষারপাতে টিকতে না পেরে পাখিরা একটু উষ্ণতার খোঁজে পাড়ি জমায় নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে। মূলত ডিসেম্বরের শুরুতে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি আসতে থাকে।
এ সময় বিচিত্র বাংলার রূপসুষমা আরও বৈচিত্র্যময় হয়ে ওঠে। মার্চে গরম ফিরে এলে আবার পাখিরা ফিরে যায় সুদূর সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, নেপাল, চীন ও প্রতিবেশী দেশ ভারতের দুর্গম অঞ্চলে স্থায়ী নিবাসে। এই সবুজাভাব এলাকার পুকুর পাড়ে দাঁড়ালেই চোখে পড়ে অনেক সরালি ঝাঁক বেঁেধ সাঁই সাঁই করে আসছে। আবার ঝপাৎ করে বসে যাচ্ছে পুকুরের স্বচ্ছ পানিতে। কেউ বা সাঁতার কাটছে আপন মনে। অদূরে আছে ডাহুক। খুঁটে খুঁঁটে যেন খাচ্ছে। দৃষ্টি চলে যায় দুগ্ধধবল বক পাখির দিকে। আপন মনে লাফিয়ে লাফিয়ে হাঁটছে। সবচেয়ে বেশি মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি হয় ভোরে। এ সময় পাখিরা ঝাঁক বেঁধে বসে থাকে পুকুরের চারপাশে। পাখিপ্রেমিকরা আকর্ষণীয় এ দৃশ্য দেখার জন্য এখানে আসেন।
গতকাল সরেজমিন সেখানে দেখা গেছে এসব দৃশ্য। মিরপুর সিরামিক কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, এবার অতিথি পাখি একটু কম এসেছে। এখানে নিজেদের নিরাপদ মনে করে না বলেই সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। তাছাড়া এক শ্রেণীর অসাধু পাখি শিকারি লোকচক্ষুর অন্তরালে অবাধে পাখি নিধন চালায়। বাংলাদেশ বার্ডস ক্লাবের সহসভাপতি কাজী আবদুল হাকিম বলেন, অতিথি পাখির জন্য নিরাপদ আবাসস্থল গড়ে তুলতে না পারলে এক সময় তারা এখানে আসা বন্ধ করে দিতে পারে। এসব এলাকাকে অভয়ারণ্য ঘোষণা করা উচিত। প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা কর্মকর্তা জহিরউদ্দিন জানান, এখানে নিরাপত্তা জোরদার করা হলে পাখির জীবন বিপন্ন হতো না, নির্ভয়ে ঘুরে বেড়াতে পারত। এসব বিবেচনা মাথায় রেখে ১ জানুয়ারি থেকে পাখি উৎসব পালন করবে বাংলাদেশ বার্ডস ক্লাব। সিরামিক কারখানা এলাকায় দেখা গেছে, সরালি, পচার্ড, ফ্লাইফেচার, গার্গেনী, ছোট জিরিয়া, মুরগ্যাধি, কোম্বডাক ও পাতাড়ি হাঁস, জলকুক্কুট ও খয়রা নামের শীতের পাখি।
Source: Daily Bangladesh Pratidin

No comments:

Post a Comment